নরসিংদী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ০১:১৮ এএম
আপডেট : ২৬ মে ২০২৩ ১২:৪৯ পিএম
নরসিংদীতে জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেকুর রহমানকে গুলি করে হত্যার পর বিএনপির জেলা কমিটির সদস্য ও হাজীপুর ইউনিয়নের আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলামের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাত পৌনে ১১টার দিকে সদরের হাজীপুরে এ ঘটনা ঘটে।
জাহিদুল ইসলামের দাবি, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন দমন করার জন্য খায়রুল কবীর খোকনের হাত দুর্বল করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলতাফ মেম্বারের নেতৃত্বে শতাধিক লোক তার বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ ভাঙচুর করেছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাসেম ভুইয়াকে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিকাল ৪টার দিকে শহরতলির চিনিশপুরে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
জেলা ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন সাদেক ও আশরাফুল নামে দুই নেতা। আহত হন আরও চারজন। গুলিবিদ্ধ সাদেক ও আশরাফুলকে ঢাকা নেওয়ার পথে সাদেকের মৃত্যূ হয়। আশরাফুল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসা মো. আকাশ জানান, নরসিংদীর জেলখানা মোড় থেকে বিএনপির কার্যালয়সংলগ্ন তিতাস রোড এলাকায় ৪০-৫০ জনের একটি দল মোটরসাইকেলের শোডাউন নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দিয়ে আসার সময় গুলি চালায়। এতে দুজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে সাদেককে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আশরাফুল ভর্তি রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, সাদেক নরসিংদী সদর উপজেলার হাজীপুর গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে। তার মাথায় গুলি লেগেছিল। আহত আশরাফুল নরসিংদী সদর উপজেলার সিটির পাড়া গ্রামের নাজমুলের ছেলে। তার পেটে গুলি লেগেছে।
পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতারা জানান, ২৬ জানুয়ারি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে সভাপতি, মাইনুদ্দিন ভূঁইয়াকে সিনিয়র সহসভাপতি ও মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট (আংশিক) কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
এর পর থেকেই ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। এর জেরে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবীর খোকনের চিনিশপুরের বাসভবন তথা জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটে।
ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার চিনিশপুরে জেলা বিএনপি কার্যালয়সংলগ্ন স্থানে মোটরসাইকেল শোডাউন করে বিক্ষোভ করছিলেন পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। এ সময় ছাত্রদলের অন্য গ্রুপের নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে তাদের ওপর হামলা চালান। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় মাথায় ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হন সাদেক ও আশরাফুল।
পরে আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে সাদেক মারা যান।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজল ই খোদা বলেন, ’খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জেলা হাসপাতালে গিয়ে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে, অন্য একজনকে এর আগেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’