× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা মিরাজ হত্যা

‘আসামিদের ফাঁসি হলে আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে’

লক্ষ্মীপুর

প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৩ ১৩:০৯ পিএম

আপডেট : ১৯ মে ২০২৩ ১৫:৩৬ পিএম

নিহত মিরাজুল ইসলাম মিরাজ।

নিহত মিরাজুল ইসলাম মিরাজ।

লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলোচিত মিরাজুল ইসলাম মিরাজ হত্যা মামলার রায় আগামী সোমবার (২২ মে) ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে। প্রায় সাড়ে ৯ বছর পর তদন্ত, সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায়। এদিকে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে মিরাজের পরিবার। তার বাবা আবুল কালাম বলেন, ‘আসামিদের ফাঁসি হলে আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে।’

ছাত্রলীগ নেতা মিরাজকে ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর রায়পুরের কেরোয়ায় কুপিয়ে ও পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পরদিন তার বাবা আবুল কালাম রায়পুর থানায় মামলা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সোমবার (২২ মে) চাঞ্চল্যকর মিরাজ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে।’

রায় ঘোষণা নিয়ে আশায় বুক বেঁধে আছে মিরাজের পরিবার। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

জানা যায়, মামলাটির একাধিকবার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। সবশেষ ২০১৬ সালের ৫ মে তদন্তকারী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন আদালতে ১২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিদের সঙ্গে মিরাজের ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মিরাজের কাছে তাদের (আসামিদের) ব্যবসার তিন লাখ টাকা ছিল। ওই টাকা বণ্টন নিয়ে তার সঙ্গে মনোমালিন্য হয়। এর জেরে হত্যার ঘটনার ২-৩ দিন আগে আসামিরা মিরাজের বাবা আবুল কালামের মাছের দোকানে গিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা মিরাজের খোঁজ করে হুমকি দেয়। তখন আসামিরা কালামকে স্থানীয় একটি খাবার হোটেলে ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। এর তিন দিনের মাথায় ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর আসামি জহিরের বাড়িতে মিরাজকে ডেকে নিয়ে ব্যবসায়িক কথাবার্তা বলে। পরে কৌশলে মাসুদ ও সোহেলকে দিয়ে তাকে মোটরসাইকেলে করে ভূঁইয়ারহাটের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মিরাজের অবস্থান নিশ্চিতের জন্য মাসুদ ও সোহেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অন্য আসামিরা।

ভূঁইয়ারহাট থেকে ফেরার পথে বিকালে কেরোয়া ইউনিয়নের ভাঁটের মসজিদের অদূরে নির্জন এলাকায় এলে আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে মিরাজকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেন। ঘটনাস্থলে প্রচুর রক্তক্ষরণে মিরাজ মারা যান। তার মাথা, কপাল, বুক ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপানোর চিহ্ন ছিল। মিরাজের সঙ্গে থাকা মাসুদ ও সোহেলকেও আঘাত করা হয়। পরে ডাক্তারি প্রতিবেদনে বলা হয়, মাসুদ ও সোহলের আঘাত সামান্য ছিল।

আরও বলা হয়, আসামিদের মধ্যে মুসলিম, তানজিল হায়দার রিয়াজ, জাহাঙ্গীর ও নুরে হেলাল মামুন শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। এ ছাড়া মামলায় রিয়াজ, মোস্তফা কামাল, হারুন প্রকাশ ডাল হারুন, জহির সর্দার, রফিক উল্যাহ সোহাগ, রাকিব হোসেন প্রকাশ ইয়াবা রাজু, মাসুদ ও সোহেল বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়েছেন। পরে তারা জামিনে মুক্ত হন।

এর মধ্যে তানজিল হায়দার রিয়াজ, রাকিব হোসেন রাজু ও জহির সর্দার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বলে দাবি করছে মিরাজের পরিবারের।

মিরাজের বাবা মৎস্য ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, ‘আসামি রাজু, রিয়াজ ও জহির সর্দার পরিকল্পিতভাবে অন্যদেরকে নিয়ে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমাকে তারা আদালতে যেতে নিষেধ করছে। ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে হুমকি দিয়েছে। এতে আমি ও আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আমি আসামিদের ফাঁসি দাবি করছি। আসামিদের ফাঁসি হলে মিরাজের আত্মা শান্তি পাবে।’

মিরাজের ভাই রিয়াজ হোসেন বলেন, ‘আমার ভাইকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার মৃত্যুর পর পুরো পরিবার তছনছ হয়ে গেছে। আসামিরা ডিবির ওসি পরিচয় দিয়ে আমার বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। সেই কল রেকর্ডিংও আছে।’

হত্যাকাণ্ডের পরদিন জামায়াত নেতা হাফেজ ইউছুফ ও শিবির নেতা পরানসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। পরে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের অব্যাহতি দেওয়ার জন্য বাদী ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। এ সময় তিনি একটি সম্পূরক এজাহার দেন। এতে রায়পুরের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী রাজু, হারুনসহ ১০ আসামির নাম উল্লেখ করেন। এজাহারে ঘটনার সময় মিরাজের সঙ্গে থাকা মাসুদ, সোহেলকেও আসামি করা হয়।

এদিকে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে-- আশা প্রকাশ করে বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, ‘আমরা আদালতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি সাক্ষীদের মাধ্যমে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। রাষ্ট্রপক্ষ ও আমি সুস্পষ্টভাবে আদালতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্পষ্ট করেছি। আশা করি, আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। বর্তমানে কোনো আসামিই কারাগারে নেই। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন আসামি শুরু থেকেই পলাতক রয়েছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা