বরগুনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ মে ২০২৩ ১৯:৫২ পিএম
আপডেট : ১২ মে ২০২৩ ২০:৫৬ পিএম
বরগুনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২২টি পোল্ডারের ২৪টি স্থানে আড়াই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। প্রবা ফটো
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি এখন উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এদিকে বরগুনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২২টি পোল্ডারের ২৪টি স্থানে আড়াই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। মোখা আঘাত হানলে জলোচ্ছ্বাসের প্রভাবে এই বাঁধ বিলীন হয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করবে। ফলে এসব এলাকার ৪০ গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার বাসিন্দা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, জেলায় ১৯৬০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ২২টি পোল্ডারের ২৪টি স্থানে ২ কিলোমিটার ৫৭০ মিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যার মধ্যে বরগুনা সদরে ১০টি স্থানে ১ হাজার ২৫ মিটার, পাথরঘাটায় ৪টি স্থানে ৫৮৫ মিটার, বামনায় ৪টি স্থানে ৩৪০ মিটার, তালতলীতে ২টি স্থানে ৩১০ মিটার, বেতাগীতে ২টি স্থানে ১৯০ মিটার এবং আমতলীর ২টি স্থানে ১২০ মিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।
বরগুনা সদরের পালের বালিয়াতলী এলাকার আবু হানিফ বলেন, ‘আমরা অনেক ঝুঁকিতে আছি। আগে বেড়িবাঁধ অনেক দূরে থাকলেও তা ভাঙতে ভাঙতে এখন বাড়ির পাশে চলে এসেছে। এই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ আতঙ্কে আছি।’
তালতলীর জলভাঙ্গা এলাকার আহসান হাবিব বলেন, ‘আমাদের এলাকাটি ভাঙনকবলিত হওয়ায় প্রতিবছর এখানে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। ঘূর্ণিঝড় সিডরে এই অঞ্চলের অন্তত ৫০ জন মারা গেছে। এখন যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে, এর প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে দুর্বল এই বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করবে। এতে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে অন্তত ১০ হাজার মানুষ।’
এ বিষয় বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, ‘বরগুনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৪টি জায়গায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের সংস্কারকাজ শুরু করেছি। আমাদের বিপুল পরিমাণে জিও ব্যাগ প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া ছয় উপজেলায় আমাদের ছয়টি টিম গঠন করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় তারা সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে।’
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ’ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মিটিং করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নগদ অর্থ, টিন, চাল, শুকনা খাবারসহ বরগুনায় ৩টি মুজিব কেল্লা, ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে অর্ধশতাধিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।’