মৌলভীবাজার সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৩ ১০:১২ এএম
আপডেট : ১০ মে ২০২৩ ১৬:৫৪ পিএম
ফুল গাছের পরিচর্যা করছেন সোনিয়া মান্নান জেনি। প্রবা ফটো
স্বাধীনচেতা সোনিয়া মান্নান জেনির ছোটবেলা থেকেই বাগান করার শখ। গাছপালার প্রতি তার প্রগাঢ় ভালোবাসা। বিশেষ করে নানা জাতের অর্কিড তার বেশি পছন্দের।
গত কয়েকবছরে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তিনি সংগ্রহ করেছেন ২০ জাতের অর্কিড গাছ। সেই সঙ্গে করেছেন ছাদ বাগান। বছরের সব সময়ই কোনো না কোনো সময় অর্কিড গাছগুলোতে নানা রঙের ফুল ফোটে। যখন অর্কিড গাছগুলো ফুলে পরিপূর্ণ হয় তখন সোনিয়ার মন আনন্দে ভরে যায়।
সোনিয়ার জন্ম মৌলভীবাজারে হলেও তার পৈতৃক বাড়ি সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে। বাবা তিমোথি মান্নানের চাকরি সূত্রে তারা সপরিবারে মৌলভীবাজারে আসেন। সম্প্রতি ছাদ বাগান নিয়ে সোনিয়ার সঙ্গে কথা হয়।
তিনি জানান, ছোটবেলায় শুধু ফক্সটেল আর পেন্সিল অর্কিড দেখেছি। পরবর্তীতে অর্কিড নিয়ে পড়াশোনা করি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গ্রন্থ সংগ্রহ করে জানতে পারি বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৩০ হাজার প্রজাতির অর্কিড আছে।
থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া অর্কিড চাষে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছে। তখন বাংলাদেশে অল্প কিছু অর্কিড পাওয়া যেত। ঢাকা থেকে ডেনড্রোবিয়াম জাতের ১-২টা করে গাছ সংগ্রহ করি। তবে অভিজ্ঞতা না থাকায় কিছুদিন পরেই গাছগুলো মরে যেতো।
ফিলিপাইনে গিয়ে কিছু অর্কিড ফার্ম দেখি যারা গাছের কাণ্ড কেটে তার মধ্যে অর্কিড করেছে। দেশে ফিরে ঢাকা বৃক্ষমেলায় যাই। সেখানে অর্কিডগুলো কেন বাঁচে না তা জানতে চাইলে বাগানিরা আমাকে ড্যান্সিং লেডি আর ডেন প্যারিশি জাতের অর্কিড নিতে উৎসাহিত করে।
বাসার বারান্দায় ঝুলিয়ে দিয়ে সকাল-বিকাল পানি স্প্রে করি। অনেক প্রতিক্ষার পর যেদিন প্রথম ফুল ফুটল আমি আনন্দে লাফালাফি শুরু করি। পরিবার থেকে দেওয়া আমার খরচের টাকা জমিয়ে একটা একটা করে অর্কিড গাছ কিনতাম। কিন্তু তখনও রিপটিং কীভাবে করে জানতাম না। কয়েকবছর পর গাছগুলো মরে যেত। এখন অর্কিড সম্পর্কে পুরো ধারণা লাভ করেছি।
সোনিয়া আরও জানান, বর্তমানে তার ছাদ বাগানে ওনিসিডিয়াম, ড্যান্সিং লেডি, সোনিয়া, ডেনড্রোবিয়াম, এগ্রিগেটাম, সানস্পট, টলুমনিয়া, সিম্বিডিয়ামসহ ২০ জাতের অর্কিড আছে।
সোনিয়ার ছাদ বাগানে অর্কিড ছাড়াও আম, ড্রাগন, মিসরীয় লাল ডুমুর, পেয়ারা, আমড়া, পেঁপে, লেবু, কমলা, মাল্টা জাতের ফল গাছ, গোলাপ, কামিনি, জবাসহ কিছু দেশি-বিদেশি ফুল গাছ, তুলসী, ঘৃতকুমারী, পুদিনাসহ কিছু ঔষধি গাছ এবং বেগুন, মরিচ, করলা, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়াসহ মৌসুমি সবজি গাছ রয়েছে।
এ ছাড়া আরও কিছু প্রজাতির অর্কিড গাছ সংগ্রহ করে মৌলভীবাজারে বাণিজ্যিকভাবে অর্কিডের বিপ্লব ঘটাতে চান উদ্যমী এই নারী।