সিলেট অফিস
প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ২১:১৯ পিএম
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ২১:৪৭ পিএম
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। প্রবা ফটো
আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি এই সিটির বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। নির্বাচনে লড়বেন কি লড়বেন না, তা জানাতে জনসভা করবেন তিনি। আগামী ১৯ বা ২০ মে নগরীর ঐতিহ্যবাহী রেজিস্ট্রারি মাঠে এই জনসভা হবে।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট নগরীর বর্ধিত অংশ কুচাইয়ের পশ্চিমভাগ জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় শেষে আরিফুল হক এসব কথা জানান।
বিএনপি নেতা ও সিলেট সিটির মেয়র আরিফুল বলেন, ‘আমার দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। আমার সিদ্ধান্ত আগামী ১৯ বা ২০ তারিখ জনসভা করে জানাব। এখন সচেতন ভোটার, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ মুরব্বিদের মতামত নিচ্ছি। সবার সঙ্গে আলোচনা করছি। নির্বাচনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ শেষে সিদ্ধান্ত জানাব।’
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২১ জুন সিলেট করপোরেশনের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে (ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন)। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৩ মে। বাছাই হবে ২৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১ জুন।
শুক্রবারের ঘোষণা অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের মাত্র কয়েক দিন আগে নির্বাচনে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত জানানোর আভাস দিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। যদিও ৩ এপ্রিল তফসিল ঘোষণার আগের দিন হঠাৎ যুক্তরাজ্যে যান তিনি। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন আরিফুল। দেশে ফিরে নির্বাচনে লড়াইয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়েও জানানোর কথা ছিল তার। তবে ১৬ এপ্রিল দেশে ফিরে ‘সময়মতো’ সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেন তিনি। পরে নানা আলোচনার মধ্যে ঈদুল ফিতরের পর দুই-তিন দিনের মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে জানানো হবে বলে আভাস দেন আরিফুল। তা ছাড়া নগরীর বর্ধিত অংশে তার কৌশলী প্রচার দেখা গেছে। আরিফুলের এমন রহস্যবৃত্ত আচরণে নগরবাসীর মুখে এখন নানা প্রশ্ন। ব্যক্তি সিদ্ধান্তে কি ফের মেয়র হওয়ার বাসনা পূরণ করতে চান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির এই সদস্য?
সব শঙ্কা ও সম্ভাবনা মাথায় রেখেই আরিফুল হক চৌধুরীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদও আরিফুলের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
সর্বশেষ দুটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী প্রয়াত বদর উদ্দিন কামরানকে পরাজিত করেছিলেন আরিফুল। এবার তার হ্যাট্রিক মিশনের আগে সদর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন সিলেট সিটি করপোরেশনের অধীনে এসেছে। এতে ২৭টি ওয়ার্ড থেকে নগরীর পরিধি ৪২টি ওয়ার্ডে উন্নীত হয়েছে।
শুক্রবার নগরীর বর্ধিত অংশে ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কুচাইয়ের পশ্চিমভাগ জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন সিলেট সিটির মেয়র আরিফুল। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘বর্ধিত এলাকাগুলোর জন্য কাজ করার খুব একটা সময় বা সুযোগ পাইনি। তবে সীমিত সময়ের মধ্যে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি। সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।’
একই সঙ্গে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে আরিফুল বলেন, ‘এখনোই দেখছি মেশিন অদলবদল করা হচ্ছে। বেছে বেছে (প্রশাসনের) লোক আনা হচ্ছে। ইভিএম পদ্ধতিতে আমরা কেউ অভ্যস্ত নই। আমাদের মা-বোনেরাও ইভিএমে ভোট দিতে জানেন না। তাদের (নির্বাচন কমিশনের) সদিচ্ছা থাকলে ৬ মাস আগে ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে ট্রেনিং (ইভিএম ভোটের) দিতে পারত। ইভিএমে এ’তে টিপ দিলে বি’তে চলে যায়। সিলেটের মাটি ওলি-আল্লাহর মাটি। নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা ফয়সালা দেবেন বলে আমার বিশ্বাস।’