সাতক্ষীরা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ১১:১৩ এএম
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ১২:৪১ পিএম
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কাটাখালি ও ঘুষুড়ি বেড়িবাঁধ সংস্কারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের কাছ থেকে মাটি কাটছে ঠিকাদার। প্রবা ফটো
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কাটাখালি ও ঘুষুড়ি এলাকায় বেড়িবাঁধ সংস্কারের নামে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সুবিধাজনক জায়গা থেকে মাটি কাটার কথা বলে এলাকাবাসীর টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। টাকা না দিতে চাইলে ফসলি জমি, বসতবাড়ি, এমনকি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের কাছ থেকে মাটি কাটছে। তা ছাড়া নির্বিচারে কাটছে বেড়িবাঁধের পাশে লাগানো গাছও।
জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলার ১, ২, ৬ ও ৮ পোল্ডারের ৬-৮ (এক্সটেনশন)-এর নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার কাটাখালি থেকে ঘুষুড়ি পর্যন্ত ১নং পোল্ডারের অধীনে ৩ দশমিক ৭০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারের কার্যাদেশ পায় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসবি-ইউবি (জিডি)। তবে কাজের শুরু থেকে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও আর্থিক বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
কাটাখালি গ্রামের মঙ্গল বিশ্বাস, বিশ্বজিৎসহ একাধিক বাসিন্দা জানান, ঠিকাদার কামাল হোসেন তার ম্যানেজার বিল্লালের সহযোগী আসাদুল ও মফিজুলকে দিয়ে বেড়িবাঁধ সংস্কারের নামে সুবিধামতো স্থান থেকে মাটি কাটার নামে এলাকার নিরীহ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। টাকা দিতে না পারলে ইচ্ছামতো মাটি কেটে স্থানীয়দের ক্ষতি করছেন। যারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন তাদের নানান হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।
একই গ্রামের স্বপ্না বিশ্বাসের অভিযোগ, টাকা দিতে না পারায় মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দুই শতক জমি ও ঘরসহ আমাদের উচ্ছেদ করার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের পাশ থেকেই মাটি কাটা হচ্ছে। এ ছাড়াও আমাদের লাগানো বেড়িবাঁধের পাশে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় অর্ধশত গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
সরেজমিন বাঁধের পাশেই গভীরভাবে খনন করে মাটি উত্তোলনের চিত্র দেখা গেছে। অথচ নিয়মানুযায়ী বাঁধের ৩০ ফুটের মধ্যে কোনো খননকাজ করার কথা নয়।
গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা আসাদুল ও মফিজুল জানান, কাজের সুবিধার্থে তারা গাছগুলো কেটেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কামাল হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে মোবাইল ফোনে জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। তা ছাড়া কাজের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা ঈদের ছুটিতে আছে। কাজ শুরু হলে সরেজমিন দেখে বলা যাবে। তবে গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন, ‘নিরীহ মানুষের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার কোনো খবর নেই বা কেউ অভিযোগ করেননি। তবে খোঁজখবর নিয়ে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’