প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:৪২ পিএম
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৩০ পিএম
ফাইল ফটো
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় দুই কোটি ডলার সমমূল্যের (২১২ কোটি টাকা) রপ্তানি পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ‘বিএম ডিপোতে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের ফলে রপ্তানি পণ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ বিষয়ক প্রতিবেদন’ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ও অক্ষত- এই তিন ভাগে রপ্তানি পণ্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হয়েছে। এ তদন্ত প্রতিবেদনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানিকারকরা ইনস্যুরেন্সসহ বিভিন্ন খাতে আর্থিক সহায়তা পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তদন্ত প্রতিবেদন তৈরিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুশফিকুর রহমানকে আহ্বায়ক ও উপকমিশনার মো. শরফুদ্দিন মিঞাকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। বাকি পাঁচ সদস্য হলেন বিজিএমইএর সহসভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, বিএম কন্টেইনার ডিপোর উপব্যবস্থাপক মো. নুরুল আক্তার, বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব মো. রুহুল আমিন শিকদার, ঢাকা কাস্টম বন্ড কমিশনারেটের উপকমিশনার কাজী রায়হানুজ্জামান ও চট্টগ্রাম কাস্টম বন্ড কমিশনারেটের উপকমিশনার মো. কাউছার আলম পাটোয়ারী।
মোট রপ্তানির জন্য প্রস্তুত পণ্যের তথ্যে পাঁচ কোটি সাত লাখ ১৪ হাজার ৩৪ ডলার উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে সিএফএস-১ শেডে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের ইনভয়েস মূল্য এক কোটি সাত লাখ ৭৮ হাজার ১০৩ ডলার। স্টাফড কন্টেইনারে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের ইনভয়েস মূল্য ৭৮ লাখ ১৫ হাজার ৫১৭ ডলার। স্টাফড কন্টেইনারে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের ইনভয়েস মূল্য সাত লাখ ৭০ হাজার ৮৪৮ ডলার। সিএফএস-২ শেডে মজুদকৃত ৬২ লাখ ৩২ হাজার ১৭১ ডলারের পণ্য সম্পূর্ণ অক্ষত। স্টাফড কন্টেইনারে দুই কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪২ ডলারের পণ্য সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ২৬ লাখ ২০ হাজার ৬৫০ ডলারের পণ্য অক্ষত দেখানো হয়েছে।
তদন্তে এক কোটি ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার ৬২১ ডলারের পণ্য সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত দেখানো হয়েছে। এতে এক হাজার ২৩২টি শিপিং বিলের বিপরীতে দুই লাখ ৩২ হাজার ৩৯২ কার্টন পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর মধ্যে ডিপোর সিএফএস-১ শেডে এক কোটি সাত লাখ ৭৮ হাজার ১০৩ ডলার মূল্যের পণ্য নিরূপণ করা হয়েছে। এতে ৮১৯টি শিপিং বিলের বিপরীতে এক লাখ ২৬ হাজার ৬২৫ কার্টন পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ ছাড়া স্টাফড কন্টেইনারে ৭৮ লাখ ১৫ হাজার ৫১৭ ডলার মূল্যের পণ্য নিরূপণ করা হয়েছে। এতে ৪১৩টি শিপিং বিলের বিপরীতে এক লাখ পাঁচ হাজার ৭৬৮ কার্টন পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এ ছাড়া তদন্তে সাত লাখ ৭০ হাজার ৮৪৮ ডলার সমমূল্যের পণ্য আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে পণ্য অক্ষত কিন্তু ধোঁয়ার গন্ধ বিদ্যমান এমন পণ্যের মূল্য ছয় লাখ ৭৩ হাজার ৩৮৫ ডলার এবং পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত দেখানো হয়েছে ৯৭ হাজার ৪৬৩ ডলার মানের পণ্য।
তবে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের পাশাপাশি অক্ষত পণ্যের তথ্যও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। সম্পূর্ণ শাট আউট দেখানো হয়েছে ৬৪ লাখ সাত হাজার ৪৬১ ডলারের পণ্য। আংশিক শাট আউট দেখানো হয়েছে ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৪১৪ ডলারের পণ্য। এ ছাড়া বিএম ডিপোর মাধ্যমে রপ্তানিকৃত পণ্য দেখানো হয়েছে এক কোটি ১৪ লাখ ৯৪ হাজার ৩৩৭ ডলারের। রপ্তানির অপেক্ষায় বিএম ডিপোতে মজুদকৃত পণ্য দেখানো হয়েছে ৯২ লাখ ৭৩ হাজার ৭০০ ডলারের পণ্য।
কমিটি সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের ফলে ডিপোতে রক্ষিত কন্টেইনারজাত পণ্যের কিছু সম্পূর্ণ এবং কিছু আংশিক পুড়ে গেছে। অন্যদিকে ডিপোর সিএফএস-১ শেডে রক্ষিত সব পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সিএফএস-২ শেডে রক্ষিত পণ্য অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।
গত বছরের ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।