× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পরিবেশের বারোটা বাজাচ্ছে শ্রীপুরের ডার্ড কম্পোজিট

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২৩ ১২:১১ পিএম

কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার তরল বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। প্রবা ফটো

কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার তরল বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। প্রবা ফটো

গাজীপুরের শ্রীপুরের রাজাবাড়ী ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর (সাটিয়াবাড়ী) গ্রামের ডার্ড কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার তরল বর্জ্য গিয়ে মিশছে কৃষিজমিতে। এতে ফসল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি খাল ও বিলের পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, মরে যাচ্ছে মাছ।

কারখানার বয়লারের বিষাক্ত কোলো ধোঁয়ায় এলাকাবাসী শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর প্রতিকার চেয়ে ধলাদিয়া এলাকার কৃষক মফিজ উদ্দিন স্থানীয় ২০ জন বাসিন্দা এবং কৃষকের স্বাক্ষর সংবলিত একটি লিখিত অভিযোগ গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরে পাঠিয়েছেন। ওই অভিযোগের অনুলিপি স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর দেওয়া হয়। 

স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও দোকানিরা জানান, ডার্ড কম্পোজিট কারখানার বর্জ্যে বিলের পানি পচে গেছে। পানির গন্ধে বাজারে ও দোকানে টেকা যায় না। মসজিদে নামাজ পড়তেও সমস্যা হয়।

ধলাদিয়া (দক্ষিণপাড়া) এলাকার কৃষক আব্দুল মতিন ও হেলাল উদ্দিন জানান, যখন ধানে ফুল আসে তখন ধানগাছের গোড়া পচে মরে যায়। দেশীয় টেংরা, পুঁটি, কই, দরকিনা ও শিং মাছ এখন বিলে নেই বললেই চলে।

ধলাদিয়া (পশ্চিমপাড়া) এলাকার কৃষক কামাল হোসেন বলেন, আগে বিঘা প্রতি ৩০-৩৫ মণ ধান পাওয়া যেত। ক্ষেতের পানি পচে যাওয়ায় এখন ১৫ মণের বেশি ধান ওঠানো সম্ভব হয় না। 

কৃষক মফিজ উদ্দিন জানান, ডার্ড কম্পোজিট কারখানা স্থাপনের পর থেকেই কোনো ইটিপি (তরল বর্জ্য শোধন প্রক্রিয়া) ব্যবহার করছে না। পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে বয়লারের বিষাক্ত কোলো ধোঁয়া বাইরে ছাড়া হচ্ছে। দূষিত তরল বর্জ্য গিয়ে পড়ছে কৃষকের জমিতে। আশপাশের খাল-বিলের পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই বিষাক্ত বর্জ্যের কারণে এখানকার এক হাজার একর জমিতে ফসল ফলানো যাচ্ছে না। 

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আগে বিলে শিশুসহ স্থানীয়রা পারুলি নদীতে (ধলাদিয়া দক্ষিণ পাড়া) গোসল করত। মানুষজন বিভিন্ন কাজে পানি ব্যবহার করত। গরু-বাছুর গোসল করাত। কিন্তু ডার্ড কম্পোজিট কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যের কারণে পানি পচে যাওয়ায় নদীতে কেউ নামছে না। এ নিয়ে এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে আছে। তারা পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

রাজাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাসিনা মমতাজ বলেন, আমি ৫ মাস আগে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব নিয়েছি। আমি নিজেও সিএনজি দিয়ে আস-যাওয়ার সময় পচা পানির দুর্গন্ধ নাকে রুমাল দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। ডার্ড কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার বর্জ্যে ও দূষিত পানি আশপাশের কৃষিজমিতে ফেলায় জমি নষ্ট হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। আপনারা (সাংবাদিকেরা) বলেছেন, আমি খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।

বিষাক্ত বর্জ্যের ব্যাপারে কথা হয় ডার্ড কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আকাশের সঙ্গে। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার (হেড অফিসের) অনুমতি ছাড়া কোনো বক্তব্য দিতে পারব না। তিনি সাংবাদিকেদর হেড অফিসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

স্থানীয়দের লিখিত আভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নয়ন মিয়া বলেন, ধলাদিয়া এলাকার কৃষক মফিজ উদ্দিন সাটিয়াবাড়ী এলাকার ডার্ড কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার বর্জ্যে ও দূষিত পানির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা