বান্দরবান প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:১৩ পিএম
আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ২০:০৮ পিএম
মারমা জনগোষ্ঠীর ভূমি দখল চেষ্টার অভিযোগে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। প্রবা ফটো
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে
বোর্ডিং স্কুলের নামে ভূমি দখল চেষ্টার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। রবিবার
(৯ এপ্রিল) সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ চত্বরে সামনে ‘ভুক্তভোগী জনসাধারণ’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের প্রায় ৮০০ এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে সুইথোয়াই
চিং মারমা বলেন, ‘এলাকাবাসীর বন্দোবস্তকৃত ১৫০ একর জমি কক্সবাজারের
বেসরকারি ‘হোটেল সী-গালের’ নামে বেদখল করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। সেই জায়গায় ৩৫০ মারমা পরিবার
বসবাস করছে। সেখানে হোটেল কর্তৃপক্ষ স্কুল বোর্ডিং স্থাপন করলে বসবাসকারীরা উচ্ছেদ
হয়ে যাবে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এই নির্মাণ প্রক্রিয়া বন্ধ করা না হলে আরও বৃহত্তর
কর্মসূচি দেওয়া হবে।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে
চাক সম্প্রদায়ের নেতা মংচিং চাক বলেন, ‘এর আগেও নাইক্ষ্যংছড়িতে বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের
নামে ভূমি বেদখল করা হয়েছে। এর ফলে ২০০৬ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে আটটি চাক সম্প্রদায়ের
পাড়া ও আটটি মারমা সম্প্রদায়ের পাড়া উচ্ছেদ হয়েছে। পরিবারগুলো এখনো বিভিন্ন জায়গায়
উদ্বাস্তু হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।’
তিনি বলেন, ‘গত ২ এপ্রিল নাইক্ষ্যংছড়ি ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো. অহিদ উল্লাহ
স্বাক্ষরিত নোটিশের মাধ্যমে জানতে পারি যে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ৩৫০ মারমা পরিবারের ভোগদখলীয় ও বন্দোবস্তকৃত জমি বেদখলের পাঁয়তারা
চলছে। এই অবৈধ বেদখল কোনোমতেই মেনে নেওয়া হবে না।’
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা বলেন, ‘এলাকার আদিবাসী লোকজনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে বাইরের কাউকে ভূমি বন্দোবস্ত
দেওয়া হবে না।’
নাইক্ষ্যংছড়িতে দায়িত্ব
নিয়ে আসার পর বাইরের কাউকে ভূমি বন্দোবস্ত দেননি বলেও জানান তিনি। তবে স্থানীয় লোকজনকেও
ভূমি বেদখলের বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন মংচাচিং চাক, মংবাচিং তঞ্চঙ্গ্যা, শিক্ষক মংচিং নাই মারমাসহ অনেকে। ঘণ্টাব্যাপী মানবন্ধন শেষে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা নাইক্ষ্যংছড়ি ইউএনওয়ের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান দেন। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, হোটেল সীগালকে স্কুল নির্মাণের নামে জায়গা দেওয়া হলে ৩৫০টি মারমা পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ভূমি থেকে উচ্ছেদ হবে। এ ছাড়া পরিবেশ ও জীববৈচিত্রও ধ্বংস হবে।
তবে অভিযোগের বিষয়ে সিগ্যাল হোটেলের চট্টগ্রাম অফিসের ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) মিজানুল কবির প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘সিগ্যাল হোটেল কর্তৃপক্ষ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় কোনো প্রকল্প গ্রহণ করেছে বলে আমার জানা নেই। তাই এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’