বরগুনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:৪৮ পিএম
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:৪৮ পিএম
ফাইল ফটো
দুস্থ নারীদের জন্য সরকারি বরাদ্দ করা চালে ভাগ বসানোর অভিযোগ উঠেছে সচ্ছল পরিবারের এক নারীর বিরুদ্ধে। বরগুনার তালতলীর বড়বগী ইউনিয়নে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর পরিচালিত দুস্থ মহিলা উন্নয়ন (ভিজিডি) কর্মসূচির চাল বরাদ্দের নামের তালিকায় এমন অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের ছোট ভাইজোড়া গ্রামের বাসিন্দা খাদিজা বেগম।
তিনি অভিযোগ করে জানান, তার তিনটি সন্তান রয়েছে। আয় রোজগারের কোনো মাধ্যম নেই। কিন্তু তার নামে ভিজিডিও নেই। অথচ সচ্ছল পরিবারের নারীরা চাল তুলে নিচ্ছেন।
এই অভিযোগের পর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বড়বগীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও স্থানীয় মেনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহ নেওয়াজ সেলিমের স্ত্রী সালমা বেগম ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভিজিডি কার্ড পেয়েছেন। এমনকি চালও তুলেছেন তিনি।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ভিজিডির কার্ডধারী চূড়ান্ত তালিকায় বড়বগী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদারপাড়া গ্রামে ৪২ নম্বর তালিকায় সালমা বেগমের নামে একটি ভিজিডি কার্ড রয়েছে। তার নামে ২০২৩-২৪ সালের মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ইস্যুকৃত কার্ডের ভিজিডি চালও পাচ্ছেন তিনি। অথচ তার পরিবার বেশ সচ্ছল, স্বামী সরকারি শিক্ষক।
সালমা বেগমের স্বামী শাহ নেওয়াজ সেলিম বলেন, আমি সরকারি চাকরি করি এটা সঠিক। আর আমার স্ত্রীর নামের ভিজিডি কার্ড আছে এটাও সঠিক। কিন্তু আমাদের এতে দোষ নেই। ভিজিডির ওই তালিকায় আমাদের নাম দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান।
বড়বগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলম মুন্সী বলেন, আমি এ বিষয়ে বলতে পারব না। এই ভিজিডি নামের তালিকা দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, ভিজিডি কার্ডের নামের তালিকা দেওয়ার সময় ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী সুপারিশ করা হয়েছে। ভোটার আইডিতে স্বামীর নাম না থাকায় এ ভুলগুলো হয়। তবে পরিচয় গোপন করে এমনটা হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বড়বগী ইউনিয়ন সচিব এমরান হোসাইন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে তার ভিজিডি কার্ড নম্বর ১৩৫। অভিযোগ পেয়ে কার্ডটি বাতিলের জন্য রেজুলেশন করে মহিলাবিষয়াক অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
তালতলীর মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রূপ কুমার পাল বলেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চূড়ন্ত তালিকা করা হয়েছে। এখন অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রীর কার্ডটি বাতিল করে নতুন কারও নামে কার্ড তৈরি করা হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো স্বজনপ্রীতি হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মূলত অসচ্ছল, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত, উপার্জন অক্ষম, নিয়মিত আয় নেই, ভূমিহীন নারীদের মধ্যে ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সিদের জন্য এই সহায়তা কর্মসূচি চালু করেছে সরকার।