রাজু আহেমদ, রাজশাহী
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:০০ পিএম
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:০০ পিএম
ফাইল ফটো
বাংলাদেশ রেলওয়েতে যাত্রী পরিবহনে সমস্যা দ্বিমুখী। রেলের গতির পাশাপশি যাত্রী ধারণক্ষমতা বাড়ানো গেলে যাত্রীদের দুর্ভোগ যেমন কমত, রেলের আয়ও বৃদ্ধি পেত- এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, তবে এর জন্য প্রয়োজন গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্টেশনে ডাবললাইন চালু এবং ট্রেনগুলোতে কোচের সংখ্যা বাড়ানো। রেলের ইঞ্জিনগুলোর যা সক্ষমতা, তাতে প্রতিটি ট্রেনে আরও অন্তত ১৮টি কোচ বা বগি সংযোগ করা সম্ভব বলেও মত দেন রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের দেওয়া তথ্যমতে, রাজশাহীতে যাত্রী চাহিদার বিপরীতে মাত্র ২৫ শতাংশ আসন সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে। রাজশাহীর সঙ্গে ঢাকাসহ খুলনা, চিলাহাটি, টুঙ্গিপাড়া, ভাঙ্গা রুটে প্রতিদিন ১২ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এই ট্রেনগুলোতে গড়ে মোট যাত্রী পরিবহন হয় ২৩ হাজার ৩১০ জন। প্রতিটি ট্রেনে ৪ থেকে ৫টি করে কোচের সংকট রয়েছে। ট্রেনগুলোতে অন্তত ৩টি কোচ সংযুক্ত করা গেলে যাত্রী বৃদ্ধি পাবে আরও ৭ হাজার ৫৬০ জন।
রাজশাহী স্টেশনের ম্যানেজার আব্দুল করিম বলেন, রাজশাহী-ঢাকা রুটে ৪ জোড়া ট্রেন প্রতিদিন চলাচল করে। ৩টি ট্রেনের কোচ দিয়ে এই ৪টি ট্রেন চালানো হচ্ছে। যেকোনো কারণে একটি ট্রেন দেরি হয়ে গেলে শিডিউল বিপর্যয় ঘটে।
রাজশাহী স্টেশনে যে পরিমাণ টিকিটের চাহিদা রয়েছে, সেই তুলনায় ট্রেনের আসন সীমিত। ইঞ্জিনের সক্ষমতা অনুসারে প্রতিটি ট্রেনে সর্বোচ্চ ১৮টি কোচ পরিবহন সম্ভব। তবে সে অনুপাতে কোচ দেওয়া যাচ্ছে না। প্রতিটি ট্রেনে কোচ সংযোজন বৃদ্ধি করা গেলে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। যেমন ঢাকাগামী ট্রেনগুলোতে আরও ৪টি করে কোচ সংযোজন করা গেলে প্রতিটি ট্রেনে ১ হাজার ৬৮০টি আসন বৃদ্ধি পেত।
তিনি আরও বলেন, ঢাকাসহ খুলনা, চিলাহাটি, টুঙ্গিপাড়া, ভাঙ্গা রুটে গাড়ি চলে ১২ জোড়া। এই ট্রেনগুলোর প্রতিটিতে যদি ৩টি করে বগি সংযোজন করা যায়, তবে অতিরিক্ত সাড়ে ৭ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে। প্রতিটি কোচের যাত্রী ধারণক্ষমতা ১০৫ জন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, যাত্রী পরিবহন করে প্রতি মাসে পশ্চিমাঞ্চল রেলের মাসিক আয় ৩৬ থেকে ৩৭ কোটি টাকা। ট্রেনগুলোতে কোচের সংখ্যা বৃদ্ধি করা গেলে আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি যাত্রীদের সেবার মানও বাড়ত। যেসব যাত্রীকে আমরা স্ট্যান্ডিং টিকিট দিই তাদেরকে সিট দিতে পারতাম।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের জিএম অসীম কুমার তালুকদার কোচের সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, ঢাকা-রাজশাহী রুটে ৪টি ট্রেন চলে। ইঞ্জিন ও পাওয়ার কার বাদে প্রতিটি ট্রেনে ১১টি কোচ আছে। আরও অন্তত ৪টি কোচ লাগানো যাবে। তবে এই মুহূর্তে এতগুলো কোচ লাগানোর সক্ষমতা আমাদের নেই। ১০০টি নতুন কোচ কেনা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৫টি দেশে পৌঁছেছে। বাকি ৬৫টি আসার পথে। এ ছাড়া একটি বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তারা আমাদের ৫০টি বাতিল কোচ সংস্কার করে দেবে। এসব কোচ ট্রেনগুলোতে সংযুক্ত করা হলে আরও বেশি যাত্রী টানতে পারব।
জিএম আরও বলেন, আমিতো সংকটেই আছি। ৪টি টিকিটের বিপরীতে আমরা যাত্রীদের গড়ে একটি টিকিট দিতে সক্ষম। ট্রেনে রাজশাহী থেকে ঢাকার ভাড়া এসিতে ৬৫৬ টাকা। যেখানে নন-এসি বাসের ভাড়াই ৭১৫ টাকা।