মুন্সীগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ২১:১৭ পিএম
আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ২১:৪৪ পিএম
সংগৃহীত ছবি
স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া হত্যার ঘটনায় আরও তিন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সোমবার (৩ এপ্রিল) বিকালে মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রহিমা আক্তারের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় ফয়সাল আহমেদ রাহাত ওরফে আরাফাত। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এর আগে গত শনিবার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে গ্রেপ্তার অপর দুই আসামি আনোয়ার ও মুন্না। তারও আগে জবানবন্দি দেয় তৃতীয় লিঙ্গের এহসান ওরফে মেঘ। কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক জামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২৯ মার্চ বরিশাল সদরের কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে আরাফাতকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান মুন্সীগঞ্জ ডিবির ওসি আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, ’আরাফাতকে ৩০ মার্চ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে সোমবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ আদালতে নিলে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।’
আবুল কালাম আজাদ জানান, স্থপতি ইমতিয়াজ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি আলিফকে এখনও ধরা যায়নি। তাকে গ্রেপ্তার করতে পারলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসবে।
২৬ মার্চ ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশ সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ থেকে স্থপতি ইমতিয়াজ হত্যার ঘটনায় তিন আসামি মিল্লাত হোসেন মুন্না, মো. আনোয়ার হোসেন ও এহসান ওরফে মেঘকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন ২৭ মার্চ মুন্সীগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে তৃতীয় লিঙ্গের মেঘ।
ইমতিয়াজ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির নকশার কাজ করতেন। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ৭ মার্চ বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি নিখোঁজ হন। এ নিয়ে ৮ মার্চ তার স্ত্রী ফাহামিদা আক্তার কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন ৯ মার্চ মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের মরিচা সেতু এলাকায় একটি ঝোঁপের ভেতর থেকে ইমতিয়াজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই বেওয়ারিশ হিসেবে লাশটি দাফন শেষে থানায় হত্যা মামলা করে পুলিশ। মরদেহ দাফনের ১০ দিন পর পরিবার জানতে পারে সিরাজদিখানে যে ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, তা ইমতিয়াজের। পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে মুন্সীগঞ্জের কাটাখালী জেলা আইনজীবী সমিতির কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলন করে শনাক্ত করেন ইমতিয়াজের স্বজনরা।
ডিবি জানায়, একটি অ্যাপের মাধ্যমে চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলে বাসায় ডেকে নিতেন। পরে আপত্তিকর অবস্থার ভিডিও, ছবি রেকর্ড করে ওই ব্যক্তির কাছে টাকা আদায়ের চেষ্টা করতেন। ভুক্তভোগীরা সামাজিক অবস্থানের কারণে কখনোই এ বিষয়ে মুখ খুলতেন না। চাঁদাবাজি ও মুক্তিপণের টাকা জমা হতো চক্রের সদস্য আরাফাতের মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আরও জানান, ওই অ্যাপের মাধ্যমে স্থপতি ইমতিয়াজের সঙ্গে চক্রের সদস্য আসিফের পরিচয় হয়। ৭ মার্চ ইমতিয়াজকে মোবাইল ফোনে কলাবাগানের একটি বাসায় ডেকে নেন আসিফ। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন আরাফাত, মুন্না ও মেঘ। তারা সবাই মিলে তাকে ফাঁদে ফেলে টাকার জন্য মারধর করেন। একপর্যায়ে ইমতিয়াজ মারা যান।