× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বাঁকখালী দখলমুক্ত করতে চোর-পুলিশ খেলা

নুপা আলম, কক্সবাজার

প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ১০:৫৪ এএম

আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ১১:১৩ এএম

বাঁকখালী নদীর তীরে এক মাসের মধ্যে নতুন করে প্রকাশ্যে স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়েছে। প্রবা ফটো

বাঁকখালী নদীর তীরে এক মাসের মধ্যে নতুন করে প্রকাশ্যে স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়েছে। প্রবা ফটো

বাঁকখালী নদীর তীর দখল ও উচ্ছেদ নিয়ে চলছে চোর-পুলিশ খেলা। ‘ঢাকঢোল পিটিয়ে’ কিছু অংশ উচ্ছেদ হওয়ার এক মাসের মধ্যে সেখানে নতুন করে প্রকাশ্যে স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে উচ্ছেদ না হওয়ায় অবৈধ দখল করা জমিতে পুরোদমে চলছে নির্মাণকাজ।

যদিও প্রশাসন বলছে, উচ্ছেদ করা জমি দখল করলে আবারও উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। আর নদীর সীমানা নির্ধারণ হওয়ার পর অন্যান্য অবৈধ স্থাপনাও দখলমুক্ত করা হবে।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ দুই দিন কক্সবাজার শহরের প্রাণকেন্দ্রে বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী কস্তুরাঘাট এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালায় প্রশাসন। যেখানে ৩শ একর জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয় প্রশাসন। সে সময় প্রশাসন জানিয়েছিল এক যুগ আগে সরকার ঘোষিত নদীবন্দর বাস্তবায়নের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশে এই উচ্ছেদ অভিযান সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত রাখা হবে। কিন্তু কার্যত এক মাসে আর কোনো উচ্ছেদ অভিযান হয়নি।

গতকাল রবিবার কস্তুরাঘাট এলাকায় দেখা গেছে, উচ্ছেদ করার পর ইতোমধ্যে গোটা দশেক ঘর তৈরি হয়েছে। প্রকাশ্যে চলছে এই দখল প্রক্রিয়া। বেশিরভাগ শ্রমিক কার পক্ষে এসব ঘর তৈরি করছেন তা বলতে রাজি হননি।

আমান উল্লাহ নামে এক শ্রমিক জানান, তাদের সরদার জানেন কার ঘর তৈরি করতে তাকে নিয়োগ করেছেন। কিন্তু তিনি তার সরদারের নাম বলেননি। সরদারকে তখন ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। তবে হোসেন আহমদ নামে এক যুবক দাবি করেন, তিনি শুনেছেন যে মামলার কারণে উচ্ছেদ অভিযান হয়েছিল তা খারিজ হয়ে গেছে। তাই তিনি নিজের জমিতে নিজেই ঘর করছেন। জমির সব কাগজ তার হাতে রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) তথ্য অনুযায়ী, বাঁকখালী নদী দখলদার হিসেবে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী, ১৩১টি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ যে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় সেখানে তালিকাভুক্ত মাত্র দুজনের জমি ছিল।

বিআইডব্লিউটিএ চট্টগ্রামের আঞ্চলিক উপপরিচালক নয়ন শীল জানিয়েছেন, ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার বিআইডব্লিউটিএকে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক নিযুক্ত করে। প্রজ্ঞাপনে নদীতীরের ৭২১ একর জমি বিআইডব্লিউটিএকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা ছিল। জমি বুঝিয়ে দিতে বারবার জেলা প্রশাসনকে জানানো হলেও তারা তা দেয়নি বলে জানান বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) নয়ন শীল। তিনি বলেন, ‘নদীবন্দর প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় এত দখল হয়েছে।’

উচ্ছেদের এক মাসের মধ্যে আবার দখল শুরু হওয়াকে প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন কক্সবাজারের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচএম নজরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, কিছু অংশ উচ্ছেদ করার পর ব্যাপক অংশ উচ্ছেদে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করায় আবারও দখল করা হচ্ছে। উচ্চ আদালতের রায়ে ১৮ কিলোমিটার নদীর তীর থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে বলা হয়েছে। প্রশাসনকে দ্রুত রায় কার্যকর করার অনুরোধ জানান তিনি।

এ বিষয়ে দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, উচ্ছেদ হওয়া জমিতে আবারও দখলের খবর নানাভাবে শোনা যাচ্ছে। এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া হবে না। আবার উচ্ছেদ অভিযান চলবে।

আদালতের রায় অনুযায়ী ‘নদী জীবন্ত সত্তা’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নদীর সীমানা নির্ধারণে প্রশাসন কাজ করছে। এটা হয়ে গেলে পুরো নদীর তীর দখলমুক্ত করা হবে।’

বাঁকখালীতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর ঝিলংজার পূর্ব মোক্তারকুলের দরগাহ এলাকায় শ্যালো মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। একই সঙ্গে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত শ্যালো মেশিন ও পাইপ ধ্বংস করা হয়েছে।

রবিবার দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলার ইউএনও মোহাম্মদ জাকারিয়ার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের পাশাপাশি মেশিন ও পাইপ ধ্বংস করা হয়। এ সময় সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জিল্লুর রহমানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ইউএনও বলেন, অভিযানের সময় ঘটনাস্থলে জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাই মেশিন ও পাইপ ধ্বংস করার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা