× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নিভৃত পল্লীর অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম

সাইফুল হক মোল্লা দুলু, মধ্যাঞ্চল

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩ ১২:৫৪ পিএম

সখিনা বেগম।

সখিনা বেগম।

একাত্তরের নারী মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম সখিনা বেগম। রামদা দিয়ে কুপিয়ে পাঁচ রাজাকারকে হত্যা করেছিলেন তিনি। বর্তমানে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার গুরুই গ্রামের একটি ছাপড়াঘরে বসবাস তার। 

প্রকৃত নাম সখিনা বেগম হলেও এলাকায় তিনি খটকি নামে অধিক পরিচিত। তার ভাগ্নে মতিউর রহমান সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। ভাগ্নের অকালমৃত্যু তাকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তোলে। 

যুদ্ধের সময় তিনি স্থানীয় আবদুল মোতালিব ভর্সার নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে রাঁধুনির কাজ করতেন। গোপনে হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের গতিবিধির খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জানাতেন। নিকলী মুক্ত হওয়ার পর রামদা দিয়ে পাঁচ কুখ্যাত রাজাকারকে হত্যা করেন। ওই রামদা বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। 

বর্তমানে বয়সের ভারে ন্যুব্জ প্রায় ৮০ বছরের নিঃসন্তান এই নারী। তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা পেলেও সেটি তার জন্য পর্যাপ্ত নয়। অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারছেন না। কেউ কাছে গেলে ঝাপসা দৃষ্টিতে শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। ঠিকমতো কথাও বলতে পারেন না। তবে মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলতেই তার চোখমুখে তুমুল আক্রোশের ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। 

১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেন এলাকার তেজস্বী ব্যক্তি আবদুল মোতালিব বসু। তিনি সখিনার বোনের ছেলে মতিউর রহমানকে যুদ্ধে যেতে উদ্বুদ্ধ করেন। একপর্যায়ে সখিনাও তাদের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে চান। 

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে দুর্ধর্ষ বসু বাহিনী গড়ে তোলেন আবদুল মোতালিব বসু। এই বাহিনীর ক্যাম্পেই রাঁধুনির কাজ করতেন সখিনা বেগম। তবে মুক্তিবাহিনীর গোপন তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবে একসময় হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন তিনি। নিয়ে যাওয়া হয় সরারচরের সেনা ক্যাম্পে। একদিন কৌশলে সেখান থেকে একটি রামদা নিয়ে পালিয়ে আসেন তিনি। সেই রামদা দিয়েই পরে পাঁচ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করেন অকুতোভয় এই নারী। 

১৯৭১ সালের ১৯ অক্টোবর নিকলী উপজেলা থেকে বিতাড়িত হয় হানাদার বাহিনী। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পত্রিকায় প্রতিবেদন দেখে সখিনা বেগমকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেন। 

জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. আবদুল মান্নান বলেন, দুর্ধর্ষ ও সাহসী নারী মুক্তিযোদ্ধাদের একজন সখিনা বেগম। 

ছড়াকার ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক জাহাঙ্গীর আলম জাহান বলেন, ‘সখিনা বেগমের মুক্তিযুদ্ধকালীন সাহসিকতার বিষয়টি ১৯৯৬ সালে জেলা প্রশাসনের স্বাধীনতা ও বিজয় স্মরণিকায় আমরাই প্রথম তুলে ধরি। এর সুবাদে জাতীয় পত্রিকায় তাকে নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়। বিষয়টি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এলে সখিনা বেগম নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পান।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা