× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘পৃথক রাজ্যের’ মোহে পাহাড় অশান্ত করছে কেএনএফ

এস এম রানা, বান্দরবান থেকে ফিরে

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩ ১১:৪৫ এএম

আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৩ ১৩:৪৪ পিএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

পাবর্ত্য জেলা রাঙামাটি ও বান্দরবানের ১১টি সীমান্ত উপজেলা নিয়ে ‘পৃথক রাজ্য’ গড়ার নামে বিধ্বংসী তৎপরতা চালাচ্ছে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামের এই গোষ্ঠীটি দেশের উন্নয়ন প্রকল্প ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন ইতোমধ্যে সংগঠনটিকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

এই সশস্ত্র সংগঠনটির প্রধান নাথান লনচেও (৫০)। যিনি নাথান বম নামেই সমধিক পরিচিত। সংগঠনটির পক্ষ থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে, তাদের এই ‘স্বপ্নের রাজ্যে’ সড়ক প্রকল্প নির্মাণ করা যাবে না; ওই এলাকায় যারা যাচ্ছেন বা যাবেন তাদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হবে। অভিযোগ রয়েছে, সুযোগ-সুবিধামতো উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের অপহরণের পর মুক্তিপণও আদায় করছে সংগঠনটি। গোলাগুলি করছে নিরাপত্তা টহলে নিয়োজিত সেনা সদস্যদের সঙ্গে। এতে প্রাণহানিসহ জানমালেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। 

গত ডিসেম্বর মাসের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব অপতৎপরতা বন্ধে ধারাবাহিক অভিযান চালায়। এরপর কেএনএফ কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ভারতের সর্বদক্ষিণের রাজ্য মিজোরাম থেকে কেএনএফ অনুসারী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আরেকটি দল বান্দরবান সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। তবে কোন ধরনের ও কী পরিমাণ অস্ত্র নিয়ে এ দলটি অনুপ্রবেশ করেছে, সে বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। এসব জানতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই অঞ্চলে গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়িয়েছে। 

এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মূল সংগঠনটিও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ইস্যু ও প্রশ্নে কেএনএফের সঙ্গে এ সংগঠনটির দ্বন্দ্ব-বিরোধ রয়েছে। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে এ দুটি সংগঠনই সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। কাছাকাছি সময়ে দুটি সংগঠনেরই এভাবে হামলায় জড়িয়ে পড়ার ঘটনাকে বিশেষ ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত ২ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. হাবিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়। এ মামলার আসামিরা জেএসএস (মূল) সংগঠনের অনুসারী বলে জানা গেছে। 

কে এই নাথান বম

পৃথক রাজ্য প্রতিষ্ঠার ডাক দিয়ে আলোচনার পাদপ্রদীপে উঠে আসা কেএনএফ প্রধান বান্দরবানের রুমা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইডেনপাড়া গ্রামের নাথান লনচেও ওরফে নাথান বম (৫০)। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ভাস্কর্যে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন লন্ডন থেকে। ছাত্রাবস্থায় তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সন্তু গ্রুপের পাহাড়ি ছাত্র পরিষদে সম্পৃক্ত হন। লেখক হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার। ছয় ভাই-বোনের সংসারে তিনি সবার ছোট। বিয়ে করেছেন লাল সম কিম বমকে। তিনি রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স। এই দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। 

গত সোমবার প্রতিদিনের বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় লাল সম কিম বমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘২০২২ সালের মার্চ মাসে সর্বশেষ যোগাযোগ হয়েছিল নাথান বমের সঙ্গে। গত এক বছর তার সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ নেই। পরিবার ও সন্তানদের খোঁজও নিচ্ছেন না তিনি। কোনোভাবেই, কোনো মাধ্যমেই এখন তার কোনো খবর পাচ্ছি না।’ নাথান বমের কেএনএফ গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক কথা শুনি। আপনারা সাংবাদিকরাও জিজ্ঞেস করেন। সরকারের গোয়েন্দারাও জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু আমি তো তার অবস্থানই জানি না। জানলে বলব।’ 

কেএনডি থেকে কেএনএফ

বম জাতিসহ সংখ্যালঘু জাতিসত্তা পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, ম্রো ও খুমি জাতির উন্নয়নকল্পে রুমা উপজেলা সদরে নাথান বম কুকি-চিন ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (কেডিএন) নামক একটি সংগঠন গড়ে তোলেন নাথান বম। তিনি এ সংগঠনের সভাপতি। ২০১৫ সালে রুমা সমাজসেবা অধিদপ্তরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে এটি নিবন্ধিত হয়। এই সংগঠনই পরে কেএনএফ নামে আত্মপ্রকাশ করে। নিজেদের লক্ষ্য হিসেবে পার্বত্য এলাকার ১১টি উপজেলা নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠনের কথা প্রচার করতে থাকে। ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাথান বম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন। তবে ত্রুটিপূর্ণ তথ্যের কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।

কেএনএফের জঙ্গি কানেকশন

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য মতে, নিজেদের স্বার্থেই নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়া ও কেএনএফ ঘনিষ্ঠ নৈকট্যে জড়িয়ে পড়েছে। জঙ্গি সংগঠনটির প্রয়োজন প্রশিক্ষণ ঘাঁটি ও প্রশিক্ষণ। অন্যদিকে কেএনএফের দরকার অর্থ ও অস্ত্র। এ কারণে নিজেদের ডেরা জঙ্গিদের কাছে ভাড়া দিয়ে এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে অর্থ নিচ্ছে কেএনএফ। সেই অর্থে সংগ্রহ করা হচ্ছে অস্ত্রশস্ত্র। এসব কারণে এ গোষ্ঠীটি ভারতের মিজোরাম ও মিয়ানমারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে, কেএনএফ মিজোরাম থেকে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করছে। বাংলাদেশ থেকেও কিছু পরিবার গিয়ে অবস্থান নিয়েছে মিজোরামে। 

ভিন্ন ধারার দুটি সংগঠনের যোগসূত্র তৈরির তথ্যানুসন্ধানে নেমে জানা গেছে, নাথান বম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সময় জঙ্গি নেতা শামীন মাহফুজের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। শামীন মাহফুজ এক সময় জঙ্গি সংগঠন হুজিবির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি এখন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

গত বছরের শেষ প্রান্তিকের পর কেএনএফ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ইতোমধ্যে একাধিকবার সংঘাতে জড়িয়েছে। জঙ্গি প্রশিক্ষণ ঘাঁটি ও আশপাশের এলাকা থেকে ইতোমধ্যে ৬৪ জঙ্গি এবং ১৭ কেএনএফ সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে।

সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কেএনএফের নামে একটি ফেসবুক পেজ রয়েছে। ওই পেজের মাধ্যমেই আলাদা রাজ্যের দাবি উত্থাপন করে কেএনএফ। এই আলাদা রাজ্যের মানচিত্রে রয়েছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি এবং বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদমসহ আশপাশের ১১টি উপজেলা। এই পেজে দাবি করা হয়, কেএনএফ সংগঠনটি বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং ও খুমিসহ ছয় জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে। সেখানে জানানো হয়, ‘কেএনএফের সামরিক শাখার শতাধিক সদস্য প্রায় তিন বছর আগে গেরিলা প্রশিক্ষণের জন্য মিয়ানমারের কাচিন প্রদেশে যান। প্রশিক্ষণ শেষে ২০২১ সালে একটি দল ফিরেও এসেছে।’ কেএনএফ তাদের সদস্যদের নিয়ে ‘আর্মি’র আদলে সংগঠন গড়ে তুলেছে এবং নানা পদ-পদবি নিজেদের নামের আগে-পরে যুক্ত করা হচ্ছে। এই পেজ থেকে সংগঠনটি নিয়মিত বিবৃতি, ভিডিও এবং স্থিরচিত্র প্রকাশ করছে।

কেএনএফের ফেসবুক পেজে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নিয়মিত হুমকি-বিবৃতি, স্থিরচিত্র এবং ভিডিওচিত্র পোস্ট করা হচ্ছে। তবে এই পেজ কোথা থেকে পরিচালনা করা হচ্ছে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। দুর্গম পাহাড়ে কেএনএফ অবস্থান করছে। সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই বললেই চলে। তবে পাহাড়ের কয়েকটি স্থানে মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। ওই দুর্গম পাহাড়ে বসে কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তড়িৎ আপডেট দিচ্ছে নাকি তাদের পক্ষে বান্দরবান সদর বা অন্য কোথায় বসে এমন প্রচার চালানো হচ্ছে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। 

দুই সংগঠনের বিরুদ্ধে মামলা

জঙ্গি প্রশিক্ষণের বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর থেকে নাথান বমসহ কেএনএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে রুমা থানায় চারটি মামলা হয়েছে। চার মামলার বিষয়টি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেন রুমা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘নাথান বমসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত চলছে। দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে।’ 

চার মামলার মধ্যে একটি করেছেন কুমিল্লা সদর থানার বড় আলমপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলাম। মামলার এজাহার অনুযায়ী, বাদীর ছেলে ২৩ বছর বয়স্ক আমিনুল ইসলাম ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিল। পরে তিনি জানতে পারেন, জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়া তার ছেলেকে ফুঁসলিয়ে বান্দরবানের গহিন পাহাড়ে নিয়ে যায়। পাহাড়ে কেএনএফের শীর্ষ নেতা নাথান লনচেও ওরফে নাথান বম (৫০), লাল মোহন বিয়াল ওরফে কর্নেল সলোমান (৫০), ভাংচুর লিয়ান (৪৩) ও লালদন সাং বম ওরফে পাদন (২৭) প্রমুখ এই জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিতেন। আমিনুল জঙ্গি প্রশিক্ষণের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ছেড়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করতে পারেন, এমন আশঙ্কায় ২০২২ সালের ২৪-২৬ নভেম্বরের কোনো এক সময় আমিনুলকে হত্যা করে মরদেহ গুম করা হয়। মামলাটি রুমা থানা পুলিশ তদন্ত করছে।

কেএনএফ সভাপতি নাথান বমসহ ৭০ জনের বিরুদ্ধে গত ৩ ফেব্রুয়ারি আরেকটি মামলা করেন সেনাবাহিনীর করপোরাল মো. আসাদুল্লাহ। মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৭ জানুয়ারি মুন্নায়ম পাড়া আর্মি ক্যাম্পে দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা জুমার নামাজ পড়ছিলেন। এ সময় নাথান বম এবং ভাং চুং লিয়ন বমের নির্দেশে এজাহারভুক্ত ৭০ আসামিসহ ২০০-৩০০ অজ্ঞাতনামা সদস্য মুন্নায়ম পাড়া আর্মি ক্যাম্পে চায়নিজ রাইফেল, একে-৪৭ ও দোনলা বন্দুক দিয়ে অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে সেনাসদস্যরা গুলিবিদ্ধ হন। 

এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, কেএনএফের আর্মি নামের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এখন সামরিক আদলে পোশাক পরিধান ও নাম-পদবি ব্যবহার করছে। ওই হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা একটি দেশীয় বন্দুকের গায়ে ‘মেইড ইন ইন্ডিয়া’ লেখা ছিল। এ ছাড়া সেখান থেকে উদ্ধার হয় তাজা গুলি। 

এরপর ১২ মার্চ রুমা উপজেলা রৌনিনপাড়া কাটা পাহাড় এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর গুলি বর্ষণে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন। আহত হন আরও দুই সেনাসদস্য। এই ঘটনায়ও নাথান বমসহ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে রুমা থানায় মামলা হয়।

উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা

সরকার দেশে সীমান্ত সড়ক নির্মাণে মনোযোগী হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। অভিযোগ, সেই সড়ক নির্মাণের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে বাধা দিচ্ছে কেএনএফ। এই গোষ্ঠীর দাবি, ‘রাস্তা নির্মাণে বাধা দেওয়ার পরও তা অমান্যকারী লোকদের জরিমানা করা হবে।’ এই গোষ্ঠীর দাবি, ‘কুকি-চিন রেস্ট্রিকটেড এরিয়ার মধ্যে পাহাড় কেটে কোনো উন্নয়ন কাজ করা যাবে না। রাস্তায় স্পিড ব্রেক দেওয়ার পরও সেটাকে ভেঙে বা অগ্রাহ্য করে যাওয়ার চেষ্টা চালালে অবশ্যই গুলি চালানো হবে।’ 

নাথান বম এখন কোথায়

নাথান বম বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছেন, এমন তথ্য বান্দরবান জেলা পুলিশের কাছে নেই। কারও মতে, তিনি নিজেদের গোপন আস্তানায়, কারও মতে তিনি মিজোরামে গোপনে অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নাথান বমের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা হয়েছে। এতে নাথান বমকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। 

নাথান বমের অবস্থান জানতে চাইলে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সদর দপ্তরের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার জানা মতে নাথান বম দেশে নেই। সম্ভবত বিদেশে অবস্থান করছেন।’

কেএনএফের দাবি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা একাধিক বিবৃতিতে এই সংগঠন দাবি করেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে এক সময় কুকি চিন রাজ্য ছিল। চাকমারা রাজ্য দখল করে তাদের উচ্ছেদ করেছে। সে রাজ্য পুনরুদ্ধার এবং স্বাধীন কুকি চিন রাজ্যের জন্যই তারা সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেছেন। কেএনএফ যেসব জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে বলে প্রচার করছে, সেগুলোর অধিবাসী ১২ হাজারের মতো। এর মধ্যে তরুণদের সদস্য হিসেবে বাছাই করছে কেএনএফ। 

রুমা এলাকায় কেএনএফের শক্ত অবস্থান। ওই থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কেএনএফের সদস্য ও অস্ত্র সম্পর্কে বিশদ তথ্য নেই। তবে তাদের কাছ থেকে বন্দুক উদ্ধার হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংগঠনটি ভারী অস্ত্র প্রদর্শন করছে।’ 

এদিকে বান্দরবানের একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকের মতে, ‘কেএনএফ দুর্বল হয়ে পড়েছে। আর কিছু দিনের মধ্যেই খাদ্যাভাবে পড়তে পারে কেএনএফ।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা