× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সুন্দরবনে মধু আহরণে নামতে প্রস্তুত মৌয়ালরা

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৩ ১৪:২৬ পিএম

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩ ১৬:১০ পিএম

সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ করছে মৌয়ালরা। প্রবা ফটো

সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ করছে মৌয়ালরা। প্রবা ফটো

সুন্দরবনের খাঁটি মধুর ঘ্রাণ ও স্বাদ অতুলনীয়। মধুপ্রেমীদের কাছে সুন্দরবনের খাঁটি মধুর কদর অন্যরকম। ১ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের মৌসুম। তবে বৃষ্টির সঙ্গে সুন্দরবনের মধুর সম্পর্ক রয়েছে। যত বেশি বৃষ্টি হয় মৌচাকে তত বেশি মধু পাওয়া যায়। সুন্দরবনের মধু সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে শরণখোলার প্রায় পাঁচ হাজার মৌয়াল। মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বনে যাওয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সুন্দরবন যাওয়ার জন্য নৌকা তৈরিসহ অন্য প্রস্তুতি চলছে অনেকের। এরপর শুধু বন দপ্তরের অনুমোদনের অপেক্ষা। বন বিভাগ শরণখোলা রেঞ্জে প্রতিবছর ১ এপ্রিল মধু সংগ্রহের জন্য অনুমোদন দিয়ে থাকে। 

শুক্রবার (২৪মার্চ) সুন্দরবনের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মৌয়ালদের মধ্যে মধু সংগ্রহের প্রস্তুতির এমন চিত্র।

শরণখোলা স্টেশন অফিসের ঘাটে কথা হয় নৌকার মালিক মৌয়াল মো. নুরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, তার নৌকাটি প্রস্তুত করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে। কাজ প্রায় শেষের পথে। ১ এপ্রিল তারা অনুমোদন নিয়ে বনে যাবেন। তার নৌকায় ৮ জন সহযোগী রয়েছে। মৌসুমের তিন মাস, মধু আহরণ করতে গিয়ে একেকজন মৌয়ালের খরচ হয় ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। শুরুতে মধু একটু কম হয়। এবারে কেমন হবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। গত বছর একেকজন সহযোগী এক থেকে দেড় মন করে মধু পেয়েছেন ভাগে। ৩২ হাজার টাকা মন দরে তা বিক্রি করেছেন। 

মৌয়ালদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মৌসুমের শুরুতে খলিশা ফুলের মধু আসে। এরপর আসে গারণ ফুলের। শেষ আসে কেওড়া ও ছইলা ফুলের মধু। এই তিন প্রজাতির মধুর মধ্যে সবচেয়ে ভালো ও দামী হচ্ছে খলিশার মধু। তবে বৃষ্টি না হলে ফুল শুকিয়ে ঝরে যায় বলে মধু জমে না। এ বছর কিছু বৃষ্টি হওয়ায় মধু পাওয়ার আশা করছেন মৌয়ালরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ দপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর মৌসুমের তিন মাসে ৫০ হাজার কেজি মধু ও ১৫ হাজার কেজি মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করেছে বনবিভাগ। সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১ এপ্রিল স্টেশন দপ্তরগুলো থেকে পাস-পারমিট দেওয়া শুরু হবে। 

গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে শরণখোলা রেঞ্জের বন থেকে ৪৬ হাজার ৩৫০ কেজি মধু এবং ১৩ হাজার ৯০৫ কেজি মোম আহরণ করা হয়। এতে সরকার রাজস্ব পায় ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৪৮৬ টাকা।

মৌয়াল সোবহান হাওলাদার বলেন, ‘তার নৌকায় ১০ জন মৌয়াল রয়েছেন। মৌসুমের প্রথম দিনেই তারা পাস নিয়ে বনে যাবেন। তারা গহীন সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ করবেন।’ 

রাজস্ব বৃদ্ধি নিয়ে মৌয়াল আবদুল মান্নান হাওরাদার বলেন, ‘গত বছর থেকে বন বিভাগ মধুর রাজস্ব বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু মধু অগের মতো পাওয়া যায় না। তাই এ বছর অনেকেই মুধু সংগ্রহ করতে যাবেন না সুন্দরবনে।’

মো. রাসেল আহমেদ নামের আরেকজন বলেন, ‘এ বছর মধুর জন্য কোনো বিনিয়োগ করব না। কারণ মধুর রাজস্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় মৌয়ালদের খরচ বেড়ে গেছে। এছাড়া অগের মতো তেমন মধুও পাওয়া যাচ্ছে না । তাই চাহিদা মতো মধু দিতে না পারায় দাদনের টাকা উঠে আসে না।’ 

বন বিভাগের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বন বিভাগ এ বছর ১৫ মার্চ মধু সংগ্রহের অনুমতি দিলেও মৌয়ালরা কেউ অনুমোদন নেয়নি। কারণ এ অঞ্চলের বনে সাধারণত বৈশাখ থেকে মধু পওয়া যায়। তাই মৌয়ালরা সবাই এক হয়ে ১ এপ্রিল অনুমোদন করে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মো. সামসুল আরেফিন বলেন, ‘সুন্দরবনে মধু কম-বেশি হওয়া অনেকটা বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে। এবারে বন দপ্তর থেকে ১৪ দিনের অনুমোদন নিয়ে নিয়ে বনে প্রবেশ করবে মৌয়ালরা। এর মধ্যে অনূর্ধ্ব ২০০ মণ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বৈধ বি এল সি ধারী নৌকার মালিক হতে হবে। 

তিনি বলেন, ‘অনুমতি পাওয়া মৌয়ালরা মধু আহরণের জন্য মৌমাছি তাড়াতে অগ্নিকুণ্ড, মশাল বা অনুরূপ কোনো দাহ্য পদার্থ এবং রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার করতে পারবে না। মৌয়ালদের ৯টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে বন আইনে শাস্তির বিধানও রয়েছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা