শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৩ ১৫:২৬ পিএম
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৩ ১৭:১৮ পিএম
ইজিবাইক হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন এক পা হারানো আব্দুর রশিদ। প্রবা ফটো
শৈশবে নৌকায় নানাবাড়িতে যাওয়ার সময় বাঁ পায়ে ইঞ্জিন লেগে গুরুতর আহত হন আব্দুর রশিদ। পরে তার সে পা কেটে ফেলতে হয়। সেই থেকেই তিনি পঙ্গু জীবনযাপন করে আসছেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের হাল ধরার জন্য চা বিক্রি শুরু করেন। বাড়ির পাশের পাথরভাঙা কারখানা শ্রমিকরা তার দোকানের ক্রেতা ছিলেন। কারখানাটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে নিরুপায় হয়ে পড়েন। কী করবেন উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না রশিদ।
পরে তিনি প্রতিবেশীদের পরামর্শে ৯০ হাজার টাকা দিয়ে একটি ইজিবাইক কেনেন। আড়াই মাসের মধ্যেই ইজিবাইকের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায়। নগদ অর্থ না থাকায় স্থানীয়দের পরামর্শে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ইজিবাইকের উপার্জন দিয়ে প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার ৫০০ টাকার কিস্তি এবং পরিবারের ভরণপোষণ করে আসছিলেন তিনি। পরিবার নিয়ে ভালোই দিন যাচ্ছিল রশিদের।
জীবিকা নির্বাহের সেই একমাত্র অবলম্বন ইজিবাইকটি বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকালে চুরি হয়ে যায় রশিদের। এখন তিনি চোখে অন্ধকার দেখছেন। কী করে পরিবারের হাল ধরবেন, আর কেমন করে কিস্তির টাকা পরিশোধ করবেন ভেবে তিনি দিশাহারা।
আব্দুর রশিদ বলেন, ‘শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা পুকুরপাড় জামে মসজিদের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার বিকালে ইজিবাইকটি চুরি হয়ে যায়। আসর নামাজ পড়ার পর বাইরে এসে ইজিবাইকটি খুঁজে পাইনি, চুরি হয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও ইজিবাইকটি খুঁজে পাইনি। ইজিবাইকটি আমার জীবিকা নির্বাহের একমাত্র সম্বল ছিল। সেটা চালিয়ে কিস্তির টাকা এবং পরিবারের ভরণপোষণ করতাম। এখন কী করব ভেবে পাচ্ছি না।'
স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আফসোস পা হারানো লোকটা তার জীবিকার সম্বল হারিয়েছে। আমাদের সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাব। সে যেন পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে তাকে সে ব্যবস্থা করে দেয়।’
আব্দুর রশিদ গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার তাজুর বাড়িতে সপরিবারে ভাড়া থাকতেন। তিনি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়াকোট গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে।