× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আরাভের স্ত্রী সেই কেয়াও ফেরারি, আছেন মালয়েশিয়ায়

মেহেরপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩ ২০:০৬ পিএম

আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৩ ১৪:২৩ পিএম

হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ওরফে আপনের সাবেক স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়াও ফেরারি। প্রবা ফটো

হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ওরফে আপনের সাবেক স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়াও ফেরারি। প্রবা ফটো

পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ওরফে আপনের সাবেক স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়াও ফেরারি। তিনি বর্তমানে কোথায় আছেন, তা কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন না। তবে সূত্রে জানা গেছে, তিনি শাহীন নামে এক যুবককে বিয়ে করে এখন মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।

২০১৮ সালের ৭ জুলাই বনানীতে রবিউল ওরফে আরাভের ভাড়া ফ্ল্যাটে গিয়ে খুন হন পুলিশ পরিদর্শক মামুন। ঘটনার তিন দিন পরে তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে সোহাগ ওরফে হৃদয় ওরফে হৃদি ও তার স্ত্রী কেয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আদালত বিচার শুরুর আদেশ দেন।

হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরাভ খানের সঙ্গে গ্রেপ্তার হন কেয়া। ১৮ মাস জেল খাটার পর জামিনে মুক্ত হন তিনি। জেল থেকে বের হওয়ার পর তার সঙ্গে পরিচয় হয় মেহেরপুর সদরের আমঝুপি গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে শাহীনের সঙ্গে।

সুরাইয়ার বাবা মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাঁড়াডোব গ্রামের আবুল কালাম বলেন, ‘শুনেছি জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আপনকে ছেড়ে শাহীনকে বিয়ে করেন কেয়া। এরপর তার সঙ্গে আমাদের আর কোনো যোগাযোগ নেই। লোকমুখে শুনতে পাই তিনি নাকি শাহীনের সঙ্গে মালয়েশিয়াতে রয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহীনের বাবা আব্দুল করিম জানান, ছয় বছর ধরে তার ছেলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। তিনি শুনেছেন কেয়া নামের একটি মেয়েকে বিয়ে করে শাহীন এখন মালয়েশিয়ায় থাকেন।

সূত্র জানায়, কেয়া যখন ছোট ছিল তখন তার বাবা আবুল কালাম জমিসংক্রান্ত মামলায় ২০০১ সালের ২৩ এপ্রিল থেকে ২০১১ সালের ২৫ জুলাই পর্যন্ত ১০ বছর মেহেরপুর কারাগারে বন্দি ছিলেন। এ সময় কেয়া তার মা মনোয়ারা খাতুন ও খালা মাজেদা খাতুন লাভলির তত্ত্বাবধানে পালিত হয়।

কেয়ার বাবা আবুল কালাম বলেন, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আমি জানতে পারি আমার স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন আমাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্য একজনকে বিয়ে করেছেন। এরপর তার সঙ্গে আমার আর কোনো যোগাযোগ ছিল না। আমার মেয়ে কেয়ার সঙ্গেও আমাকে যোগাযোগ রাখতে দিত না। কেয়া তার মা ও খালার তত্ত্বাবধানেই বড় হতে থাকে।

তিনি আরও জানান, কেয়া ২০১৩ সালের মাধ্যমিক পাসের পর মেহেরপুর থেকে ঢাকায় চলে যান। ঢাকায় একটি কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। এ সময় তার সঙ্গে পরিচয় হয় রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ওরফে আপনের সঙ্গে। পরে তাদের মধ্যে সম্পর্ক হয়। তারা ২০১৪ সালের দিকে বিয়ে করেন।

তিনি জানান, বিয়ের পর সুরাইয়া আক্তার কেয়ার সঙ্গে বেশ কয়েকবার মেহেরপুর এসেছিলেন আরাভ খান। তখন তাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আপন নামেই চিনত। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কেয়া ও আপন দম্পতি ঢাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। যেদিন পুলিশ পরিদর্শক মামুন খুন হন, সেদিন আরাভের সঙ্গে কেয়াও সেখানে ছিলেন।

এই হত্যা মামলায় আরাভ খান ও কেয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার ঢাকা প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সাল আতিক বিন কাদেরের আদালতে মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম খানের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। এদিন কারাগারে থাকা ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের উপস্থিতিতে মামলার বাদীকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। জেরা শেষে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৪ জুন দিন ধার্য করেন আদালত।

এ নিয়ে মামলাটিতে ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো। আরাভ খান ও সুরাইয়া কেয়া ছাড়াও এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন, রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, মিজান শেখ, আতিক হাসান, সারোয়ার হাসান ও দিদার পাঠান। এদের মধ্যে আরাভ ওরফে রবিউল ও কেয়া পলাতক রয়েছেন। অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় অপর দুই আসামি মেহেরুন্নেছা ও মীমের বিচার হচ্ছে শিশু আদালতে।

তবে পলাতক সুরাইয়া আক্তার কেয়ার মা মনোয়ারা খাতুন ও খালা মাজেদা খাতুন লাভলির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

১৫ মার্চ প্রতিদিনের বাংলাদেশ আরাভ খানকে নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে পুলিশ হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আপন কীভাবে আরাভ খান হলেন, কীভাবে ভারতের নাগরিকত্ব নিয়ে বিয়ে এবং দুবাইয়ে বিশাল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, তা সবিস্তারে প্রকাশ করা হয়েছে।
আরাভ খানের দুবাইয়ে জুয়েলারি শপ উদ্বোধন করতে যান ক্রিকেট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, চিত্রনায়িকা দিঘী, কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমসহ বাংলাদেশের আরও কিছু তারকা। এরপর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরাভ খান আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়।

ওই সাড়া জাগানো প্রতিবেদনের পর দেশবিদেশে তাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। প্রতিদিনই তার অন্ধকার জীবনের চমকপ্রদ তথ্য বেরিয়ে আসছে। একপর্যায়ে পুলিশও আরাভ খানকে দেশে ফেরাতে নড়েচড়ে বসে। এরই ধারাবাহিকতায় ভারত, বাংলাদেশ ও দুবাই পুলিশ তার বিরুদ্ধে তৎপর হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা