× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সুদমুক্ত ঋণে দাদন থেকে মুক্তি চান জেলেরা

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩ ১১:৫৮ এএম

আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৩ ১২:৫০ পিএম

সাগরে কাঙ্ক্ষিত মাছ না মেলায় ঘাটে বেশিরভাগ সময় কাটাতে হয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের জেলেদের। প্রবা ফটো

সাগরে কাঙ্ক্ষিত মাছ না মেলায় ঘাটে বেশিরভাগ সময় কাটাতে হয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের জেলেদের। প্রবা ফটো

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ১০ গ্রামের কয়েক হাজার জেলে পরিবারের জীবনযাত্রার মানে আজও কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং নানা সংকটে জর্জরিত। সাগর ও নদীর ওপর নির্ভর করে তাদের ছুটে চলা। প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে কর্ম করে খেতে হয় তাদের। এটাই তাদের জীবন-সংগ্রাম। 

কিছুদিন ধরে সাগরে তুলনামূলক কম মাছ পাচ্ছেন জেলেরা। কিন্তু দাদন ব্যবসায়ীদের সুদ ঠিকই পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে তারা বর্তমানে বেশ সংকটে পড়েছেন। অবশ্য বছরের বেশিরভাগ সময়ই কাটে আর্থিক অনটনের মধ্যে। এ থেকে তারা বেরই হতে পারেন না। বছরের পর বছর দেনাগ্রস্ত হচ্ছেন সাগরে মাছ ধরা জেলেরা। তারা জিম্মি হয়ে পড়েছেন দাদনের জালে। বিকল্প কর্মসংস্থান চেয়েও পান না অসহায় জেলেপল্লীর মানুষ।

সরেজমিন জানা যায়, মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা, চিংড়াখালীর পূর্ব চণ্ডীপুর পশুরিপাড়া, পুঁটিখালীর সোনাখালী, বহরবুনিয়া, বারইখালীর কাস্মির, খাউলিয়ার কুমারখালী, বলইবুনিয়ার শ্রেণিখালীসহ অন্তত ১০ গ্রামের নদীর তীরবর্তী নিবন্ধনের আওতায় আসা জেলে রয়েছেন প্রায় ১০ হাজার। বাপ-দাদার পেশাকে ধরে রেখে নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করে চলে তাদের সংসার। পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনোমতো দুমুঠো খেয়ে-পরে বেঁচে আছেন এসব জেলে। সব পেশার মানুষের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হলেও আজও পরিবর্তন হয়নি তাদের জীবনযাত্রার মান। লেখাপড়া করিয়ে ছেলে-মেয়েদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারেননি তারা। স্বাধীনতার আগে থেকেই এসব গ্রামের মানুষের বসবাস নদীর তীরবর্তী এলাকায়। ’৮০-এর দশক থেকে পানগুছি নদীর অব্যাহত ভাঙনে প্রতি বছর নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে তাদের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। ভাঙনে যেমন নিঃস্ব হচ্ছেন, অন্যদিকে নদীতে মাছ কম পাওয়ায় আয়ের উৎস্য দিন দিন কমছে। 

গাবতলা গ্রামের জেলে বেল্লাল ফরাজী, সেলিম তালুকদার, গফফার তালুকদার, শহিদুল শেখ, জাফর তালুকদার, ইউনিয়ন মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন তালুকদারসহ একাধিক জেলে জানান, তাদের জেলেপাড়ায় ৩০টি ছোট-বড় মাছ ধরার ট্রলারের মধ্যে ১৭টিতে জেলে শ্রমিকরা বছরের চার মাস সাগরের পশ্চিম সুন্দরবনের কচিখালী, কটকা, শ্যালা নদী ও নারিকেলবাড়িয়ায় মাছ ধরেন। মৌসুমের শুরুতেই দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে হয়। পরে মাছ আড়তদারদের কাছে বিক্রি করতে হয়। মহাজনদের কাছ থেকে নেওয়া অগ্রিম টাকার বিপরীতে বড় অঙ্কের লভ্যাংশ দিতে হয়। পরবর্তী সময়ে সামান্যতম আয় থেকে সারা বছর সংসার চালাতে হিমশিম খান জেলেরা।

স্থানীয় কয়েকজন জেলে বলেন, এভাবে আর চলা যাচ্ছে না। প্রতিবছর একই সংকটে পড়তে হয়। তাই এমন একটি বিকল্প ব্যবস্থা খোঁজা দরকার, যাতে সুদের জাল থেকে তারা বের হতে পারেন।

তারা বলেন, সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ দিলে তারা বাড়িতে হাঁস-মুরগি পালন, পুকুরে মাছ চাষ ও আধুনিক প্রযুক্তিতে সবজি উৎপাদন করতে পারতেন। এভাবে তারা সংসার সচল রাখতে পারতেন। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনাটাও চালিয়ে নিতে পারতেন। তা ছাড়া সংকটকালে সরকারি খাদ্য সহায়তা বাড়ানোও দরকার। 

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, এ উপজেলায় নিবন্ধন হওয়া জেলে রয়েছেন ৯ হাজার ৫৬০ জন। এর মধ্যে সরকারি খাদ্য সহায়তার আওতায় জাটকা আহরণ থেকে বিরত থাকা ৩ হাজার ৩৩০টি জেলে পরিবার চাল পাচ্ছে। মৎস্য অধিদপ্তর থেকে এরই মধ্যে এসব জেলের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলায় ২০টি গরু বিতরণ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা