রাজশাহী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৩ ২৩:১৭ পিএম
আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৩ ২৩:১৭ পিএম
রাজশাহীতে জঙ্গি মামলার আসামিদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে কাজ করছে পুলিশ। প্রবা ফটো
জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি)। এরই ধারাবাহিকতায় জামিনে মুক্ত আসামিদের প্রতি সপ্তাহে থানায় হাজিরা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের গতিবিধির বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করছে পুলিশ।
জেএমবির শীর্ষ জঙ্গি
নেতা বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে এক সময় শুরু হয় ত্রাসের রাজত্ব।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ এ অঞ্চল থেকে জঙ্গি দমন কার্যক্রম শুরু করে।
আরএমপির দেওয়া তথ্য
অনুযায়ী, রাজশাহী মহানগরের ১২টি থানার মধ্যে ৬টি থানায় (মতিহার, বোয়ালিয়া, রাজপাড়া,
চন্দ্রিমা, বেলপুকুর ও পবা) মোট ১১১ জন তালিকাভুক্ত জঙ্গি রয়েছেন। এরমধ্যে জেএমবির
৮৬ জন, হিযবুত তাহরীরের ১৫ জন, শাহাদৎ আল হিকমার এক জন, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের এক
জন এবং আনসার আল ইসলামের আটজন জঙ্গি রয়েছেন।
আরএমপির এই ছয়টি থানায়
জঙ্গি সংক্রান্ত মোট ২৬টি মামলা হয়। এর মধ্যে নয়টির বিচার সম্পন্ন হয়েছে। ১৪টি বিচারাধীন
ও তিনটি তদন্তাধীন। এদিকে আরএমপির ছয়টি থানা এলাকায় ১১১ জন জঙ্গির মধ্যে শুধুমাত্র
বেলপুকুর থানা এলাকাতেই মোট ৩৮ জন তালিকাভুক্ত জঙ্গি রয়েছে।
এর মধ্যে ৩৩ জন নিয়মিত
থানায় হাজিরা দিচ্ছেন ও একজন জেল হাজতে রয়েছেন। থানায় হাজিরা দেওয়া ৩৩ জনের মধ্যে তিনজন
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাইকোর্টের আদেশে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। বাকি ৩০ জনের মধ্যে
২৯ জন বিচারাধীন আদালত থেকে জামিনে মুক্ত আছেন। একজনকে মামলার তদন্ত চলার সময় অব্যাহতি
দেওয়া হয়েছে। তবে চারজন জঙ্গির তথ্য সংগ্রহ সংক্রান্ত গৃহীত কার্যক্রম চলছে।
জঙ্গি মামলার আসামি
পুঠিয়া উপজেলার ভারুয়া পাড়ার ষাটোর্ধ্ব আফরোজা ও তার ছেলে সাদ্দাম। আফরোজা জানান,
জানুয়ারি মাস থেকে প্রত্যেক শুক্রবার বেলপুকুর থানায় বিকেল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে গিয়ে
হাজিরা দিতে হয়।
জঙ্গি মামলার আসামি
বেলপুকুর থানার মাহিন্দ্রা এলাকার মিজান বলেন, ‘২০১৮
সালে জুট মিলের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলায় আমাকে
জঙ্গি সাজিয়ে জেলে দেওয়া হয়। সেই মামলা এখন পর্যন্ত চলছে। আমি জামিনে আছি। জানুয়ারি
মাস থেকে শুক্রবার করে বেলপুকুর থানা এসে হাজিরা দিতে হচ্ছে।’
বেলপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, তার থানায় ৩৮ জন জঙ্গি মামলার আসামির মধ্যে
৩৪ জন তালিকাভুক্ত। এদের মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন। বাকি ৩৩ জন জামিনে রয়েছেন।
তারা প্রত্যেকেই শুক্রবার করে এসে থানায় হাজিরা দিয়ে যান।
ওসি বলেন, ‘জঙ্গি মামলার আসামিদের সকলেই দিনমজুর। তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে কাজ করা হচ্ছে।’
রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, ‘থানায় হাজিরা এটা আমাদের প্রতিরোধমূলক কর্মসূচির অংশ। বেলপুকুর থানায় মডেল হিসেবে ৩৩ জন জঙ্গি মামলার আসামি প্রতি সপ্তাহে হাজিরা দিচ্ছেন। জামিনে মুক্ত জঙ্গি মামলার আসামিরা আমাদের জানিয়েছেন, তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য অঙ্গীকার করেছেন। আমরাও চাই তারা জঙ্গিবাদ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক।’