মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৩ ১৩:০৯ পিএম
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের জিউধরায় লবণাক্ততায় পুড়ে যাওয়া বোরো ক্ষেত। প্রবা ফটো
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় জিউধরা ইউনিয়নে লবণাক্ততায় প্রায় ১০০ বিঘা জমির বোরো ধান পুড়ে গেছে। ফলে শত শত কৃষক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন।
লাভবান হওয়া তো দূরের কথা খরচ উঠে আসবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। পটাশ ও জিপসাম সার ব্যবহার করলে কিছুটা ফসল রক্ষা হতে পারে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নে ৮৮০ হেক্টর জমিতে এবার বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে সোমাদ্দারখালী, ডেউয়াতলা, আড়ংঘাটা, সোনাতলা, একরামখালী, বরইতলা, বটতলা, ভাইজোড়া, ডুমুরিয়া ও কালাচান্দের ধাইড় এলাকায় প্রায় ১০০ বিঘা জমির ধান পুড়ে গেছে।
বীজ রোপণের দুই মাসের মধ্যে বোরো ধানের ৫০ ভাগ কাইচথোড় অবস্থায় রয়েছে। কুশি অবস্থায় রয়েছে প্রায় ১০ ভাগ এবং ফুল অবস্থায় রয়েছে ৩০ ভাগ। এই মুহূর্তে অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে মাঠের পর মাঠ ফসল পুড়ে গেছে। ফলে ১০ গ্রামের প্রায় তিন হাজার কৃষক লোকসানের অপেক্ষায় দিন গুনছেন।
বিভিন্ন এনজিও, মহাজন ও সুদ কারবারি থেকে ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করেছেন তারা। প্রতিবিঘা জমিতে বীজ, সার, শ্রমিকের মজুরি বাবদ ২০-২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই টাকা কীভাবে শোধ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। এর বাইরে বছরের খোরাকি তো রয়েছেই।
উপজেলার সোমাদ্দারখালী গ্রামের কৃষক কামরুল হাওলাদার জানান, তারা প্রতিটি কৃষক পরিবার ২ থেকে ৭ বিঘা জমি নগদ টাকায় রেখে উচ্চফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের বোরো ধান আবাদ করেছেন। গত বছর বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছিল ৪৫ মণ। লাভবান হওয়ার আশায় এ বছর অনেকেই বোরো আবাদ করেছেন। এবার অতিরিক্ত লবণে ফসল পুড়ে যাওয়ায় খরচও উঠেবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে।
একই কথা জানালেন রুস্তম মুন্সী, আনোয়ার মাঝি, আলমগীর মাঝি, হায়দার মাঝিসহ কয়েকজন কৃষক। অনেকটা ক্ষোভ জানিয়ে তারা বলেন, কৃষি অফিসের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কোনো খোঁজখবর নিচ্ছেন না। কোনো পরামর্শও দিচ্ছেন না। আমরা এখন অনেকটা দিশেহারা হয়ে আছি।
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী বলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলায় এ বছর ৯ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে জিউধরায় ৮৮০ হেক্টর জমি লবণ পানি দিয়ে সেচ দেওয়ার কারণে অধিকাংশ পুড়ে গেছে। বিষয়টি শুনে তাৎক্ষণিক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়া ফসল রক্ষা করা যাবে না। তবে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে প্রতি বিঘায় ৮ কেজি পটাশ ও ৫ কেজি জিপসাম সার প্রয়োগে কিছুটা ফল পাওয়া যেতে পারে। কিছু ফসল রক্ষা হতে পারে।