রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কাগজের মণ্ড ও কাগজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী পেপার মিলস (কেপিএম) লিমিটেড আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। শুক্রবার (১০ মার্চ) বিকালে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় মিলটি পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘কর্ণফুলী কাগজ কলের সুযোগ-সুবিধা আছে। কিন্তু যন্ত্রপাতি অনেক পুরোনো হয়ে গেছে, অনেকগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। দেশে বর্তমানে কাগজের চাহিদা যাতে কর্ণফুলী কাগজকল মেটাতে পারে, সেজন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিদেশ থেকে যাতে কাগজ আনতে না হয়, সেজন্য কোয়ালিটি বাড়াতে হবে। যে সুযোগ-সুবিধা আছে, আমরা বাজারদরে কাগজের বাজারজাত করতে পারব। এজন্য মিলে নতুনত্ব আনা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিলে যে বিশাল প্রজেক্ট চালু ছিল, ভবিষ্যতে যেগুলো প্রয়োজন সেগুলা চালু করা হবে। এখন কাঁচামালের অভাব, এটা বিশ্বজুড়েই। আমাদের এখন যে ক্যাপাসিটি আছে, অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য যথেষ্ট। তবুও কিছুটা আধুনিকায়ন করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সামনে কাজগুলো করাবো। একটু সময় লাগবে। কেপিএম আবার ঘুরে দাঁড়াবে।’
তিনি বলেন, ’‘৫৩ সালের বিল্ডিংয়ে কাজ হবে না। অনেকগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলোর যৌবন শেষ হয়ে গেছে, ভেঙে ফেলতে হবে। জায়গা আছে কাজে লাগিয়ে নতুন করে প্রজেক্ট নেওয়া হবে। মিলটি চলবে, কারণ দেশের জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’
এর আগে শিল্পমন্ত্রী কেপিএম লিমিটেডের গেস্ট হাউসে মিলের বিভাগীয় কর্মকর্তা ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা, কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একে এম আনিসুজ্জামান, রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, জেলা পরিষদ সদস্য অংসুই ছাইন চৌধুরী, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমন দে, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন, চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন মিলন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
১৯৫৩ সালে দেশের প্রথম কাগজ কারখানা কর্ণফুলী পেপার মিলস ৩০ হাজার টন কাগজ উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল। প্রতিষ্ঠার পর প্রতিষ্ঠানটির মানসম্পন্ন কাগজের কদর ছিল দেশজুড়ে। প্রকাশনাসহ নানা কাজে ব্যবহার হতো সেই কাগজ। প্রতিষ্ঠার পরে মিলটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হলেও গত দুই দশক ধরে ধাপে ধাপে কমেছে উৎপাদন, কমেছে আয়। ঋণে-লোকসানে জর্জরিত হয়ে ‘মুমূর্ষু’ অবস্থা পার করছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) অধীনে কেপিএম পরিচালিত হয়ে থাকে। ১ লাখ ২৭ হাজার একর জায়গা নিয়ে দেশের বৃহত্তম এ কাগজকল অবস্থিত।