× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

১টায় ছুটির ঘণ্টা, স্কুলের বাজছে ১২টা

হবিগঞ্জ প্রতিবদেক

প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৩ ১৫:৪৩ পিএম

হবিগঞ্জের লাখাই কামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন থেকে মুছে গেছে স্কুলের নামটিও। সম্প্রতি তোলা-প্রবা ফটো

হবিগঞ্জের লাখাই কামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন থেকে মুছে গেছে স্কুলের নামটিও। সম্প্রতি তোলা-প্রবা ফটো

সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ক্লাস চলার কথা থাকলেও এ নিয়ম মানা হচ্ছে না হবিগঞ্জের লাখাই কামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় দিনই স্কুলের শিক্ষকরা আসেন সাড়ে ১১টায়। দেড় ঘণ্টা পর বেলা ১টায়ই বাজে ছুটির ঘণ্টা। শিক্ষকরাও আসেন শিডিউল করে। এতে মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু কামালপুর স্কুলেরই নয়, একই চিত্র হবিগঞ্জের হাওর এলাকার অধিকাংশ বিদ্যালয়ের।

হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-এ তিন জেলার মোহনায় ধলেশ্বরী নদীর তীরে হাওর এলাকায় ১৯২৪ সালে স্থাপিত হয় কামালপুর বিদ্যালয়টি। সড়কপথে স্কুলটিতে যাওয়ার সুযোগ নেই। লাখাই গ্রামের নৌকাঘাট থেকে নৌকাযোগে যেতে হয়। এতে সময় লাগে প্রায় ২৫ মিনিট। ২০১২ সালে স্কুলে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে নেই প্রধান শিক্ষক।

স্কুলের শিক্ষক সুনিতা রানী দাসের বাড়ি বিদ্যালয়ের পাশেই। মুর্শিদা বেগম, উম্মে হুমায়রা টুনি ও পাপড়ী রানী দাসের বাড়ি লাখাই গ্রামে। স্কুল থেকে তাদের বাড়ির দূরত্ব প্রায় 

৪ কিলোমিটার। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বাড়ি ৮ কিলোমিটার দূরের গোয়ালনগর।

স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯৪। শিক্ষক আছেন পাঁচজন। প্রতিদিন সবাই আসেন না। শিডিউল করে কোনো দিন তিনজন, কোনো দিন দুজন আসেন। তা-ও বেলা সাড়ে ১১টায়। ১টা বাজলেই শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লা আল মামুন।

সরেজমিন গিয়ে বিদ্যালয় ভবনে স্কুলের নামটি পাওয়া যায়নি। অনেক দিন আগে তা মুছে গেছে। বেলা ১টায় বন্ধ পাওয়া যায় স্কুলের সব দরজা-জানালা। শুধু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কক্ষটি খোলা। তার কাছে স্কুল ছুটির কারণ জানতে চাইলে বলেন, ‘তথ্য জরিপ পূরণ ও খেলাধুলায় স্কুল পর্যায়ে প্রথম হতে প্র্যাকটিস করার জন্য ছুটি দিয়েছি।’ উপস্থিত অন্য দুই শিক্ষিকা মুর্শিদা বেগম ও পাপড়ী রানী দাসের বক্তব্য একই।

বিদ্যালয়ের পাশে খেলা করছিল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রাহুল মিয়া, সাইফুল ইসলাম তৃষাণ। তারা বলে, ‘শিক্ষকরা সকাল সাড়ে ১১টায় বিদ্যালয়ে আসেন।’ 

পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত, প্রিয়াঙ্কা বলে ‘বিদ্যালয় ছুটি। পাশেই বাড়ি, বই রেখে এসেছি।’ চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর কাছে জাতির পিতার নাম জানতে চাইলে সে বলে জানে না। আরেকজনের কাছে রাষ্ট্রপতি ও পাশের নদীর নাম জানতে চাইলেও উত্তর দিতে পারেনি।

অভিভাবক কামালপুর গ্রামের সুধাংশু দাস, আলমগীর, আব্দুর রউফ, ফরিদ ও বিকাশ দাস বলেন, ‘বিদ্যালয়ে ভালো পড়াশোনা হয় না। শিক্ষকরা প্রতিদিন অনেক দেরি করে আসেন।’

স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সুসেন চন্দ্র বলেন, ‘অন্য সদস্যরা বিষয়টি আমাকে জানাননি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী কর্মকর্তারা প্রতি মাসে এক দিন বিদ্যালয় পরিদর্শন করলে এ সমস্যা থাকে না।’ 

তিনি বলেন, ‘শুধু মাসিক সভায় আমি যোগদান করি।’

লাখাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের বিদ্যালয়ে নিয়মিত ও সঠিক সময়ে আসতে হবে। সঠিক সময়ে বিদ্যালয় ছুটি দিতে হবে। কেউ অনিয়ম করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, লাখাইয়ে ৭২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৪টিতে প্রধান শিক্ষক নেই।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা