শরীয়তপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ২২:০৭ পিএম
বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণে হেলিকপ্টারে বউ আনেন প্রবাসী সুজন নকিব। প্রবা ফটো
শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলায় বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করেছেন সুজন নকিব নামে এক মালয়েশিয়া প্রবাসী।
শুক্রবার (৩ মার্চ ) দুপুরে হেলিকপ্টারে চড়ে তিনি কনের বাড়িতে যান। সঙ্গে নেন বাবাকেও। তবে এক হাজার বরযাত্রী যান গাড়িতে। আগামীকাল শনিবার (৪ মার্চ) বরের বাড়িতে বৌভাত অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে রয়েছে ৫ হাজার মানুষের আয়োজন।
সুজন নকিব শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের পুনাইখারতান্দির গ্রামের আবুল কাশেম নকিবের ছোট ছেলে। তার আরও চার ভাই তিন বোন রয়েছে। সুজন নকিব সেঝ সন্তান হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা তাকে খুব আদর করত। বিভিন্ন সময় তার বাবা মা হেলিকাপ্টারে বিয়ের খবর শুনত। সুজন নকিব যখন ছোট ছিল তখনই বাবা-মা বড় হলে তাকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। বাবা-মায়ের সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই হেলিকপ্টারে চড়ে বাবাকে নিয়ে যান একই ইউনিয়নের কাজিকান্দি গ্রামে। কনে ওই গ্রামের আব্দুল হক সাহেবের মেয়ে মালিহা আক্তার মিতু।
দুপুরে বর সুজন নকিব যখন হেলিকপ্টারে চড়েন তখন আশপাশের এলাকার মানুষ ভিড় করে। বিয়ের পর বিকালে বউ নিয়ে ফেরেন সুজন নকিব। হেলিকপ্টারটি দুপুর ৩টায় সুজন নকিবের বাড়ির সামনের পরিত্যক্ত কৃষি জমিতে নামলে পাশের রাস্তাসহ চারপাশে হাজারো জনতা ভিড় জমায়। এছাড়া আশপাশের রাস্তা থেকে বাড়ির ছাদ থেকে নারী-পুরুষরা হেলিকপ্টারটি দেখতে থাকে। বিকাল ৩টায় সুজন নকিব ও মালিহা আক্তার মিতু দম্পতি হেলিকপ্টার থেকে নেমে এলে লোকজন তাদের ঘিরে ধরে। এ সময় মোবাইল হাতে অনেকে হেলিকপ্টার ও বর-কনের ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
বিয়ে দেখতে আসা পুনাইখারকান্দি ও কাজিকান্দি গ্রামের একজন বলেন, আগে কখনো বাস্তবে এতো সামনে থেকে হেলিকপ্টার দেখিনি। তাই দেখতে এসেছি। তাছাড়া হেলিকপ্টারের পাখা যখন ঘোরে তখন চারপাশে এতো বাতাস বয়ে যায় তা আজ না দেখলে বিশ্বাস হতো না।
বর সুজন বলেন, আমার আর আমার বাবা মায়ের স্বপ্ন ছিল হেলিকাপ্টারে করে বিয়ে করব। আমি বাবা মায়ের ছোট সন্তান। বাবা-মা আমাকে অনেক আদর করে। তারা চাইতো আমি হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করি। বাবা-মায়ের ইচ্ছায় আমি হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করেছি।
সুজনের স্ত্রী মালিহা আক্তার মিতু বলেন, কখনো কল্পনা করেনি হেলিকাপ্টারে চড়ে শ্বশুর বাড়ি যাব। আজ আমি অনেক খুশি।
বরের ভাই ইউপি সদস্য সুমন নকিব জানান, বাবা মায়ের দীর্ঘদিনের ইচ্ছে ছিল হেলিকাপ্টারে করে সুজনের বিয়ে করাবে। অবশেষে বাবা-মায়ের ইচ্ছে পূরণ হল।
বিয়েতে অংশ নিতে মালয়েশিয়া থেকে আসেন সুজনের কোম্পানির মালিক এ্যায় ইউ ইয়ং ও তার স্ত্রী ক্রিস। বিয়েতে এসে তাদের বাংলাদেশের সংস্কৃতি ভালো লেগেছে বলে জানান।
সুজনের বাবা আবুল কাশেম নকিব ও মা আকলিমা বেগম জানান, তাদের দীর্ঘ দিনের ইচ্ছা ছিল ছেলেকে হেলিকাপ্টারে বিয়ে করাবে। সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে।
রাজনগর ইউনিয়ন পরিশোধের চেয়ারম্যান আবু আলেম মাদবর বলেন, সুজন নকিব খুব ভালো ছেলে। তাকে ছোটবেলা থেকেই আমি চিনি এবং জানি। সে প্রায় ১০ বছর ধরে মালয়েশিয়া প্রবাসী। ছুটিতে এবার দেশে এসে বিয়ে করলেন। বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতেই হেলিকপ্টারে চড়ে বউ নিয়ে এসেছে। আমি চেয়ারম্যান হিসেবে বিয়েতে আসতে পেরে খুবই খুশি।