× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘লড়াই’য়ে দখলমুক্ত হচ্ছে বাঁকখালী

কক্সবাজার প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৩ ০৯:২১ এএম

আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৩ ০৯:২২ এএম

বাঁকখালী নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রবা ফটো

বাঁকখালী নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রবা ফটো

২০১৬ সালে উচ্চ আদালত কক্সবাজার শহরের প্রাণকেন্দ্রের বাঁকখালী নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। এত দিন নানা জটিলতা ও প্রভাবশালী দখলদারদের চাপে তা দলখমুক্ত করা সম্ভব হয়নি।

গত মঙ্গলবার উচ্ছেদ অভিযান শুরুর পর দখলদাররা তা ঠেকাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালান। হামলা চালান সাংবাদিকদের ওপর। তবে প্রশাসন ছিল কঠোর অবস্থানে। অভিযানের দ্বিতীয় দিন গতকাল উচ্ছেদ করা স্থান ফের দখলে নিতে যান দখলদারদের অন্যতম মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল খালেক। জানা গেছে, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

গতকাল বুধবার অভিযানের দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত ৪ শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সব স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।

জানা গেছে, শহরের কস্তুরাঘাটে বাঁকখালী নদীর তীরের ৬০০ একরের বেশি স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করেন। পরে তারা সেখানে গড়ে তোলেন ৬ শতাধিক স্থাপনা।

উচ্ছেদের নেতৃত্ব দেওয়া জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান জানান, গতকাল পর্যন্ত নদীর তীরের ৩০০ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। উচ্ছেদ করা হয়েছে ৪ শতাধিক স্থাপনা। আদালতের নির্দেশ মতে উচ্ছেদ অভিযান চলছে। নদীর সব দখল উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলমান থাকবে।

তিনি আরও জানান, অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তর, বন বিভাগ, বিআইডব্লিউটিএসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উদ্ধারকৃত জমি বিআইডব্লিউটিএর কাছে হস্তান্তর করা হবে।

গতকাল বেলা ১টার দিকে উচ্ছেদ করা স্থান ফের দখলে নিতে যান ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল খালেক। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ২০-২৫ জন যুবক। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবদুল খালেক জানান, তিনি কোনোভাবেই নদীর দখলদার নন। ওখানে তিনটি দলিল মতে ১২৭ শতক জমির বৈধ মালিক তিনি। এ জমি নিয়ে উচ্চ আদালতের মামলায় তার পক্ষে রায়ও রয়েছে। ১৯৯১ সাল থেকে এই জমি তিনি বসতঘর-ভাড়া বাসা তৈরি করে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযানে তার কোনো কাগজপত্র প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা দেখেননি। দেখার চেষ্টা করলে তাকে উল্টো তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সবকিছু উচ্ছেদ করে দিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তিনি মামলা করবেন।

তিনি আরও জানান, উচ্ছেদে বাধা দেননি। এমনকি চেষ্টাও করেননি। কাগজ দেখানোর চেষ্টা করেছেন। আর সাংবাদিকদের সঙ্গে তার কোনো প্রকার বিরোধ নেই, ছিল না। এটা ভুল বোঝাবুঝি।

বিআইডব্লিউটিএ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক নয়ন শীল জানান, ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার বিআইডব্লিউটিএকে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক নিযুক্ত করে। প্রজ্ঞাপনে নদীর তীরের ৭২১ একর জমি বিআইডব্লিউটিএকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা ছিল। পরে ওই সময়ের জেলা প্রশাসনের আপত্তির কারণে ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর ভূমি পুনঃযৌথ জরিপ করা হয়।

জরিপে নির্ধারিত জমি হাইকোর্ট এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে রায় ঘোষণার ৬০ দিনের মধ্যে নদী তীরের ভূমি বিআইডব্লিউটিএকে বুঝিয়ে দিতে নির্দেশনা দেন। নানা কারণে তা বিলম্ব হলেও ইতোমধ্যে বিআইডব্লিউটিএর পক্ষে পিলার লাগিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন উচ্ছেদ শুরু হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কার্যক্রম চালাচ্ছে প্রশাসন।

সাংবাদিকের ওপর হামলা

মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে উচ্ছেদের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালান আবদুল খালেক। এতে কয়েকজন সাংবাদিক আহতও হয়েছেন। সাংবাদিকরা জানান, হঠাৎ হাতে লাঠি নিয়ে খালেকসহ কয়েকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে কয়েকজন আহত হন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান জানান, সরকারি কাজে বাধা ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করা হবে।

যা বলছেন পরিবেশবাদীরা 

পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, দেরিতে হলেও বাঁকখালী নদী দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করায় প্রশাসন সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে অভিযানে পুরো জায়গা উদ্ধার করে নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় দখলদারচক্র সুযোগ নেবে এবং অভিযান নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি করবে। 

জানা গেছে, পরিবেশ অধিদপ্তর, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ও বিআইডব্লিউটিএর পৃথক প্রতিবেদনে বাঁকখালী নদী দখলের সঙ্গে জড়িত ১৩১ জনকে চিহ্নিত করা হয়। তাদের মধ্যে ২৩ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর মামলাও করেছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা