কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:৪৬ পিএম
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:৫৯ পিএম
কক্সবাজারের রামু উপজেলায় পাহাড়ে রীতিমতো রাস্তা বানিয়ে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে ১০-১২ জন লোক। বন বিভাগ দুটি গাড়ি জব্দ করলেও এখনও কাউকে ধরতে পারেনি। রবিবার দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ির বনতলা স্টেশন থেকে লম্বাঘোনা এলাকায় উত্তর-পশ্চিমে বিস্তৃত এই পাহাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, মাটি কেটে তৈরি করা হয়েছে অনুমানিক চার কিলোমিটার রাস্তা। তার পাশে পাহাড়ে আগুনের চিহ্ন। বন পুড়িয়ে দেওয়ায় মারা পড়েছে অনেক বুনো প্রাণী। আর কেটে নেওয়া হয়েছে কয়েক হাজার ছোট-বড় গাছ। রাস্তায় ডাম্প ট্রাক চলাচলের চিহ্ন দেখা গেলেও ঘটনাস্থলে ট্রাক বা মানুষজনের দেখা মিলেনি।
লম্বাঘোনা ও বনতলা স্টেশনের লোকজন জানান, যে রাস্তাটি করা হয়েছে তা ব্যবহার করে গত এক সপ্তাহ ধরে ডাম্প ট্রাকে করে কেটে নেওয়া গাছ পাচার চলছে। ১০-১২ জন লোকের নেতৃত্বে এসব গাছ কাটা ও রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। তারা কারা তার পরিচয় বলতে পারেননি স্থানীয় লোকজন। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আবুল কালাম, রফিকুল আনোয়ারসহ কয়েকজন জানিয়েছেন, পাহাড়ে বন বিভাগের পক্ষ থেকে বাগান করা হবে এমন দাবি করে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিচয়ে এসব গাছ কাটা হয়েছে।
বে বন বিভাগের পক্ষ থেকে গাছ বিক্রি করা হয়নি বলে জানিয়েছেন চেইন্দা বন বিটের কর্মকর্তা ফছিউল আলম শুভ। তিনি বলছেন, ‘কয়লা সংগ্রহের জন্য কেউ বনে আগুন লাগিয়ে থাকতে পারে। কারা জড়িত তা শনাক্ত করা যাচ্ছে না।’ পানেরছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা রতন লালও গাছ চুরির বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি। তবে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের কর্মকর্তা মো. সরওয়ার আলম বলছেন, 'খবর পাওয়ার সাথে সাথে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে। এছাড়া রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে গাছ পাচারকারীদের দুটি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।’ এই সূত্র ধরে গাছচোর শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।
কক্সবাজারের পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ এ বিষয়ে বনবিভাগকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এলাকাটা মূলত হাতিসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। সম্প্রতি সেখানে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নির্বিচারে গাছ কাটা, পাচার ও আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন জানিয়ে বলেন, আগুন দেয়ার কারণে বন উজাড়ের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস হয়েছে। এটি পুনরুদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।