× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের উদ্যোক্তা

বাগেরহাট প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:৩৮ পিএম

বাগেরহাটে গ্রাহকদের প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছেন ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংক। প্রবা ফটো

বাগেরহাটে গ্রাহকদের প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছেন ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংক। প্রবা ফটো

বাগেরহাটে গ্রাহকদের প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছেন ইসলামী ব্যাংকের স্থানীয় একটি এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের উদ্যোক্তা হাদিউজ্জামান হাদী। তার এজেন্ট ব্যাংকটি ছিল সদর উপজেলার যাত্রাপুর বাজার এলাকায়। রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) টাকা নিয়ে হাদিউজ্জামান হাদীর লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে গ্রাহকরা। এজেন্ট ব্যাংকটির সামনে এসে কান্নায় ভেঙে পড়ে অনেকে। 

এজেন্ট ব্যাংকিং ইনচার্জ ও অন্যান্য কর্মচারীদের কাছে নিজেদের জমা রাখা টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানান গ্রাহকরা। কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতারক উদ্যোক্তার নামে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। 

কয়েকজন গ্রাহক বলেছেন, ইসলামী ব্যাংকের সুনাম থাকায় তারা এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটে টাকা ফিক্স ডিপোজিট করেছিলেন। জমা রশিদও দেওয়া হয়েছিল তাদের। কিন্তু হাদিউজ্জামান হাদি এই টাকা মূল শাখায় জমা না দিয়ে আত্মসাত করেছেন। 

আসমা নামের একজন নারী গ্রাহক বলেন, সাড়ে চার লাখ টাকা রেখেছিলাম ব্যাংকে। এই টাকার লাভে সংসাসের অনেক খরচ চলত। কিন্তু ব্যাংকে এসে জানলাম আমার হিসাবে কোনো টাকা জমা নেই। আমাদের কোন আয় নেই। স্বামী পঙ্গু। হাটতে পারেন না। এখন আমাদের কিভাবে চলবে? 

নাজমা বেগম নামের একজন নারী উদ্যোক্তা বলেন, ‘চাচা, ফুপু ও আমার মিলে ২৩ লাখ টাকা আছে এই ব্যাংকে। হিসাবে দেখছি কোন টাকা নেই। এত টাকা হারিয়ে পরিবারের সবাই খুবই চিন্তিত। জানি না কী হবে।’ 

এজেন্ট ব্যাংকিং শাখাটির ইনচার্জ মো. আব্দুল হালিম বলেন, ‘এই শাখা পাঁচ বছর ধরে চলছে। তানিশা এন্টারপ্রাইজের মালিক হাদিউজ্জামান হাদি এই আউটলেট নেন। আমাদের দুই হাজার ৬০০-এর মতো গ্রাহক রয়েছে। তাদের ডিপোজিটের পরিমাণ ছয় কোটির ওপরে। এসব গ্রাহকের জমা দেওয়া টাকা আমরা নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকে জমা দিয়েছি। কিন্তু কিছু সংখ্যক গ্রাহকের টাকা হাদিউজ্জামান হাদী নিজে নিয়ে অন্য খাতে ব্যয় করেছেন। এই টাকার বিপরীতে তিনি নিজে এবং আমাদের দিয়ে গ্রাহকদের ব্যাংকের স্লিপ দিয়েছেন।’ 

তিনি বলেন, ‘হাদিউজ্জামান প্রায় দুই মাস ধরে ব্যাংকে আসেন না। লোকজন টাকা নিতে আসলে অন্য গ্রাহকদের টাকা দিয়ে সমন্বয় করতে বলেন। আমরা সেভাবেই করেছি। সর্বশেষ কয়েকদিন আগে অনেক চেষ্টা করে তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব জমি বিক্রি করে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করে দেবেন। কিছু গ্রাহক আছেন যারা অতিরিক্ত লাভের আশায় ব্যাংকে টাকা না রেখে তার সঙ্গে চুক্তি করে টাকা রেখেছেন। লাভও নিয়েছেন। এসব গ্রাহকের বিষয়ে আমরা ঠিকঠাক জানি না। এখন তিনি লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার খবর শুনে তারা এসেছেন।’ 

এদিকে হাদিউজ্জামান হাদি এবং তার পরিবারের লোকজন কয়েকদিন ধরে এলাকাছাড়া। তার মোবাইলও বন্ধ পাওয়া গেছে। 

ইসলামী ব্যাংকের বাগেরহাট শাখার ব্যবস্থাপক অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ তরিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা বাগেরহাট মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। 

তিনি বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এখানে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন করতে হয়। বিষয়টি ব্যাংক উদ্বোধনের সময় আমরা বলেছি। এছাড়া বিভিন্ন সময় পরিদর্শনে গিয়ে ব্যাংক অফিসাররা গ্রাহকদের জানিয়েছেন। তারপরও উদ্যোক্তা প্রতারণার মাধ্যমে জমা স্লিপ দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। এজেন্ট ব্যাংকিং উদ্যোক্তাদের ব্যাংকের স্লিপ ব্যবহারের কোনো নিয়ম নেই। গ্রাহকদের মধ্যেও কেউ কেউ অতিরিক্ত লাভের জন্য তাকে টাকা দিয়েছেন। ভবিষ্যতে এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহকদের এই ধরণের লেনদেন থেকে বিরত থাকতে হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা