ছেলেদের নিয়ে প্রধান শিক্ষককে পেটালেন সহকারী শিক্ষক

সিরাজগঞ্জের জন্তিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীনের বিদায় অনুষ্ঠানের মানপত্র আনতে দেরি হওয়ায় ক্ষুদ্ধ ওই শিক্ষক ও তার দুই ছেলে মিলে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাককে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে তাড়াশ উপজেলার ওই বিদ্যালয় চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

এ তথ্য নিশ্চিত করে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক। 

আহত আব্দুল রাজ্জাক জানান, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীনের অবসরে বিদায় অনুষ্ঠানের জন্য তিনি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। কিন্তু ওই শিক্ষককে দেওয়ার জন্য মানপত্রটি প্রস্তুত না থাকায় তিনি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেনকে নিয়ে উপজেলা সদরে যান। পরে সেখান থেকে মানপত্রটি সংগ্রহ করে দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ে পৌঁছান।

তিনি বলেন, ‘এ সময় ওই শিক্ষক মানপত্র আনতে কেন দেরি হলো, এ কথা বলেই আমাকে গালাগাল দিয়ে মারপিট শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি সেখানে থাকা তার দুই ছেলে গোলাম মোস্তফা, মনিরুজ্জামান ও তার এক ভাতিজাকে আমাকে পেটানোর নির্দেশ দেন। আর নির্দেশ পেয়েই তারা লোহার রড, লাঠি নিয়ে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং বেধড়ক পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে আমি রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি।’ 

তিনি আরও জানান, পরে উপস্থিত লোকজন সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীন ও তার স্বজনদের কাছ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তাড়াশ ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিরাজগঞ্জর শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

অভিযুক্তরা তাকে নানা হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন আহত ওই শিক্ষক। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেন জানান, চোখের সামনে যা ঘটেছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা একজন শিক্ষককে প্রকাশ্যে পেটানোর সঙ্গে জড়িত ওই সহকারী শিক্ষক ও তার ছেলেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

প্রধান শিক্ষককে পেটানোর বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মুসাব্বির হোসেন বলেন, ’আহত শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক আমার অফিসে এসেছিলেন। তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তাড়াশ থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ’আহত শিক্ষক থানায় এসেছিলেন। উনাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আহত শিক্ষক অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’