হিলি (দিনাজপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:১৫ পিএম
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:২৮ পিএম
কোনো এক রেললাইনে তোলা ছবিতে ওয়াজেদ ইসলাম ওয়াদুদ।
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় ট্রেনে কাটা পড়া এক স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার হিলি সাতকুড়ি রেল ক্রসিং এলাকা থেকে কিশোর ওয়াজেদ ইসলাম ওয়াদুদের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ওয়াদুদের পরিবারের অভিযোগ, প্রতিবেশী এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকায় মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা ডেকে নিয়ে তাকে (ওয়াদুদ) মারধর করে। এতে লোকলজ্জায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে ঘটনার পরদিন ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। এ ঘটনায় মামলা করবে বলে জানিয়েছে পরিবারটি। তবে অভিযুক্ত পরিবারের ভাষ্য, ওয়াদুদকে মারধর নয়, দু-তিনটি চড় মারা হয়েছে।
মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছায়েম মিয়া জানিয়েছেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মৃত ওয়াজেদ ইসলাম ওয়াদুদ হাকিমপুর উপজেলার ১ নম্বর খট্টামাধবপুর ইউনিয়নের রায়ভাগ গ্রামের রশিদুল ইসলামের ছেলে। ওয়াদুদ গোহারা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনটি হিলি সাতকুড়ি রেল ক্রসিং পার হবার পরে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ওয়াদুদ।
তার পরিবারের দাবি, প্রতিবেশী এক স্কুলছাত্রীর সঙ্গে ওয়াদুদের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। সেটিকে কেন্দ্র করে বুধবার সন্ধ্যার দিকে মেয়েটির পরিবারের লোকজন ওয়াদুদকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। এরপর আবার মামলার হুমকিও দেন তারা। এসব ঘটনার পর থেকে লোকলজ্জায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে।
ওয়াদুদের বাবা রশিদুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এর আগেও আমার ছেলেকে তারা নির্যাতন করেছে। কিন্তু আমরা তা জানতাম না। গতকাল সন্ধ্যায় তারা আমার ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে। এদের নির্যাতনের কারণেই আমার ছেলে প্রাণ দিয়েছে। আমি ওই পরিবারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এদিকে ঘটনার পর অভিযুক্তের বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘরে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। মোবাইলে ওই কিশোরীর বাবা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিরক্ত করার জন্য ওয়াদুদকে আমার ছেলে দু-তিনটি চড়-থাপ্পড় মেরেছে। এর বেশি কিছু না।’
এ ঘটনায় মামলা করবেন জানিয়ে স্কুলছাত্রের বড় ভাই ইয়াকুব আলী বলেন, ‘আমার ভাই তাদের মেয়ের সঙ্গে প্রেম করেছে নাকি বিরক্ত করেছে, তা তারা আমাদেরকে না বলে নিজেরাই আমার ভাইকে নির্যাতন করেছে। তাদের নির্যাতনের শোকে আমার ভাই আত্মহত্যা করেছে। আমরা ওই মেয়ের পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করব।’
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছায়েম মিয়া বলেন, ‘জিআরপি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।।’