চুয়াডাঙ্গা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১২:৫০ পিএম
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৪০ পিএম
বর হুসাইন। ছবি সংগৃহীত
কনের বাড়িতে বিয়ের ধুমধাম আয়োজন। সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন। বধূ সেজে বিয়ের আসরে দিনভর অপেক্ষা কনের। কিন্তু হদিস নেই বরের। অপেক্ষা গড়াল দুই দিনে। যার জন্য এই অপেক্ষা, সেই বর শেষ পর্যন্ত আসেননি। পরে কনেপক্ষের লোকজন জানতে পারেন গ্রামের এক মেয়েকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন বর।
রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায়। এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন কনে ও পরিবারের সদস্যরা।
বরের নাম হুসাইন। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামের মালয়েশিয়াপ্রবাসী ওমর ফারুকের ছেলে তিনি। চাকরি করেন একটি সরকারি বাহিনীতে। এ ঘটনায় প্রতারণার অভিযোগ এনে বর হুসাইনের বিরুদ্ধে সব প্রমাণাদিসহ তার কর্মস্থলে যাবেন বলে জানিয়েছেন কনের মামা সাজ্জাত হোসেন।
তিনি জানান, দুই পরিবারের দেখাশোনার পর বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। বর্তমানে বর হুসাইনের কর্মস্থল পটুয়াখলীর লেবুখালী। হুসাইন ও তার পরিবারের সিদ্ধান্তেই গত রবিবার বিয়ের দিন নির্ধারিত ছিল। দেনমোহর ধার্য হয় ৭৫ হাজার টাকা। এর দুই দিন আগে ছেলে ও তার পরিবারের সদস্যরা মেয়ের নাকের নথ পরিয়ে দিয়ে আসেন। রবিবার ছেলের বাড়ি থেকে ২০-২৫ জন আসার কথা কনের বাড়িতে। সমস্ত আয়োজন শেষ। বিয়ের সাজে অপেক্ষায় কনে, পরিবার ও আত্মীয়স্বজন। বেলা গড়ায় কিন্তু দেখা নেই বরের। শেষমেশ আসেননি। দিনভরের অপেক্ষা গড়াল দুই দিনে। পরে কনেপক্ষের লোকজন জানতে পারেন গ্রামের এক মেয়েকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন হুসাইন।
ক্ষোভ জানিয়ে সাজ্জাত হোসেন বলেন, ‘বিয়েতে যদি মত না-ই থেকে, তাহলে ছেলে নিজ থেকেই আমার ভাগনিকে দুবার কেন দেখতে এলো? এ ছাড়া শুনেছি ছেলে তার নিজ কর্মস্থলে উল্টো মেয়ের পরিবার ও নিজের বাবার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছে। এরপর আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি সম্প্রতি ছেলের বাবা বিদেশ থেকে বাড়িতে আসেন। বাবাকে সঙ্গে নিয়ে হুসাইন বিভিন্ন গ্রামে মেয়ে দেখতে শুরু করেন। এক মাসে তারা ১৫ থেকে ১৮ স্থানে মেয়ে দেখেন।’
বরের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘সে (হুসাইন) আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমার ভাগনির জীবন নিয়ে খেলা করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরাও লড়ব। যাবতীয় প্রমাণাদিসহ তার কর্মস্থলে যাব। মেয়ের বাবা একজন অসহায় শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিনি তার শেষ সম্বল দুটি গাভি বিক্রি করে মেয়ের সুখের জন্য ছেলের দাবি করা মেয়ের সোনার গহনা ও হবু জামাইয়ের জন্য একটি পালসার মোটরসাইকেল দিতে রাজি হন। এ অবস্থায় কনে ও কনের বাবা খুবই ভেঙে পড়েছেন। তারা প্রতারকের বিচার দাবি করেছেন।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফুলবাড়ী গ্রামের ইউপি সদস্য তোফায়েল আহমেদ লিটন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। এটা মোটেও ঠিক হয়নি। জেনেছি কর্মস্থল থেকে ছেলের বিয়ের অনুমতি ছিল না। তার পরও পরিবারের সঙ্গে নিজেই দেখাশোনা করে বিয়ের দিন ঠিক করে এখন উধাও হওয়া মোটেও ঠিক হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে একটা মেয়ে ও তার পরিবারের কী পরিমাণ কষ্ট হয়, তা আমরা বুঝি। কেন এমন হলো বিস্তারিত জানতে ছেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলব।’