কুমিল্লা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৫৩ পিএম
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:০২ পিএম
বসন্ত বরণ ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য ব্যতিক্রমী আয়োজন। প্রবা ফটো
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইন ডে। যে দিবস মানে প্রিয় মানুষের প্রতি একে অপরের আবেগ ভাগ করে নেওয়ার দিন। বাংলা বর্ষপঞ্জি পরিবর্তনের পর বর্তমানে একই দিন ইংরেজি বর্ষপঞ্জির ১৪ ফেব্রুয়ারি উদযাপন হয় পয়লা ফাল্গুন বা ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ। কুমিল্লার একদল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য যা ছিল ‘এক দিনের বিলাসিতা’। তাদের এই বিলাসিতার জোগান দিয়েছে একদল তরুণ-তরুণীর হাতে গড়ে ওঠা সামাজিক সংগঠন ‘অন্বেষণ’।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা নগরীর একটি পার্টি সেন্টারে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে দুটি দিবস উদযাপন করে সংগঠনটি। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় ‘সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের এক দিনের বিলাসিতা’।
একঝাঁক তরুণ-তরুণীর হাতে গড়ে ওঠা ‘অন্বেষণ’ গত এক দশক ধরে এভাবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে বসন্ত বরণ ও ভালোবাসা দিবস পালন করছে। মঙ্গলবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেখা যায়, একদল শিশু সেজেছে নানা রঙের পোশাকে। একে অপরের কাছে করছে গোলাপ বিনিময়। সবার চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস। দুপুরে তাদের জন্য ছিল বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা। দিনভর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিকালে র্যাফেল ড্রয়ের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
সংগঠনের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, ‘২০১৩ সালে কুমিল্লায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ শুরু করি। শুরুর দিকে নগরীর টাউন হল প্রাঙ্গণে শিশুদের ক্লাস করাতাম। এরপর স্থায়ীভাবে নগরীর দৌলতপুর বস্তি এলাকায় একটি কক্ষ ভাড়া করে পাঠদান শুরু করি। এ পর্যন্ত শতাধিক পথশিশু এই স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেছে। অনেকে হাইস্কুলে পড়ছে। ওদের পড়াশোনা করানোর পাশাপাশি সাধ্যানুযায়ী পোশাক ও চিকিৎসা খরচ বহন করছি।’
বর্তমান সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ মিজান বলেন, ‘শুরুর দিকে শিক্ষার্থী পেতে বেগ পেতে হয়েছে। বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের পড়াশোনা না করিয়ে কাজে দেওয়ার চেষ্টা করতেন। সে জায়গায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। আমাদের কাছে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে বাচ্চারা স্কুলে ভর্তি হতো। তাদের নিয়মিত নার্সিং করতাম। তারা একসময় ভালো ফলাফল করা শুরু করে। তখন অভিভাবকরা আমাদের প্রতি আন্তরিক হয়ে ওঠেন।’
তিনি বলেন, ‘যখন সংগঠন শুরু করি, তখন সবাই ছাত্র। নিজেরা চাঁদা দিয়ে সংগঠন চালাতাম। সংগঠনের শুরুর দিকে যুক্ত থাকা অনেকেই এখন চাকরিজীবী। তাদের অর্থায়ন ও চাঁদায় সংগঠনটি চলছে।’
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ব্যবস্থাপক বদরুল হুদা জেনু বলেন, ’এই একটা দিন অন্বেষণের জন্য রেখে দিই। এত সুন্দর আয়োজনে না এসে পারি না।’
কুমিল্লার সাবেক সিভিল সার্জন মুজিবুর রহমান বলেন, ‘অন্বেষণের প্রতি অন্যরকম ভালোবাসা কাজ করে। প্রতিবছর পথশিশুদের নিয়ে তারা ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উদযাপন করে। এটা অন্যরকম বসন্ত।’