জয়পুরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:৩৬ পিএম
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:০০ পিএম
প্রতীকী ছবি
প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ বই চলে আসে। বই উৎসব হয় নতুন বছরের ১ জানুয়ারি। বই উৎসবের ৪০ দিন পেরিয়ে গেলেও জয়পুরহাটে নতুন শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চাহিদার প্রায় ৫৩ শতাংশ বই পায়নি। এ কারণে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছে দুয়েকটি বই ছাড়াই। ফলে তাদের লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি মিলে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬০২টি। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী আছে ৭৯ হাজার ৬০ জন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ৩১ হাজার ৭৮৭ জন শিক্ষার্থী শতভাগ বই পেয়েছে। তা ছাড়া প্রাক-প্রাথমিকের ২৯ হাজার ১৪৮টি বইও শতভাগ এসেছে। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বইয়ের চাহিদা ছিল ৩ লাখ ৮ হাজার ৫৬৮টি। বই এসেছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯০৭টি। অর্থাৎ ৪৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। বাকি ১ লাখ ৬২ হাজার ৬৬১টি বই অর্থাৎ ৫৩ শতাংশ বই এখনও পৌঁছায়নি জেলা শিক্ষা অফিসে। এ কারণে এসব শ্রেণিতে আংশিক বই পেয়েছে ৪৭ হাজার ২৭৩ জন শিক্ষার্থী। তারা বাংলা, গণিত, বিজ্ঞান, ইসলাম ধর্ম ও হিন্দু ধর্ম বিষয়ের বই পায়নি। বইগুলো ছাপিয়েছে গ্লোবাল প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন্স লিমিটেড।
জয়পুরহাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাইস পারভীন জানান, তার ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। সে ইংরেজি আর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে দুটি নতুন বই পেয়েছে। বাকিগুলো পায়নি। জানুয়ারি মাসের মধ্যে সব বই পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসের কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও বই আসেনি। সঠিক সময়ের মধ্যে বইগুলো না পাওয়া গেলে সন্তানরা পিছিয়ে পড়বে বলেও জানান তিনি।
কালাই উপজেলার বেজখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর বলেন, ‘প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বইয়ের সমস্যা নেই। তারা নতুন বই পেয়েছে। কিন্তু তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা একটি করে, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন বই দুটি করে পেয়েছে। তবে পুরোনো বই দিয়ে সমন্বয় করে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছেলেমেয়েদের এমনভাবে বই দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভালো হয়নি। পুরোনো বই নিয়ে অনেকটা মন খারাপ হয় তাদের। নতুন বই পেলে তারা খুশি হয় এবং পড়াশোনায় মনোযোগীও হয়।’
জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ’প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বরাদ্দের সব বই এসেছে। কিন্তু তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির সব বই এখনও আসেনি। জানুয়ারির মধ্যে সব বই পাওয়ার কথা ছিল। আগামী সপ্তাহে সব বই পাওয়া যাবে।’ তবে নতুন বই না পাওয়া পর্যন্ত পুরোনো বই সংগ্রহ করে শিক্ষকদের পাঠদান এগিয়ে নিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।