× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হুমকির মুখে সেন্টমার্টিন

নুপা আলম, কক্সবাজার

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:১৩ পিএম

আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:১৮ পিএম

সেন্টমার্টিনে এভাবেই গড়ে তোলা হচ্ছে একের পর এক কংক্রিটের স্থাপনা। প্রবা ফটো

সেন্টমার্টিনে এভাবেই গড়ে তোলা হচ্ছে একের পর এক কংক্রিটের স্থাপনা। প্রবা ফটো

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ২০২০ সালে জরিপ চালিয়েছিল এনভায়রনমেন্ট পিপল। কক্সবাজারের পরিবেশবিষয়ক এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সে সময় বলেছিল, দ্বীপটিতে ছোট-বড় ১২৩টি আবাসিক হোটেল ও কটেজ ছিল। এর মধ্যে আড়াই ডজনের বেশি ছিল দুই ও তিনতলা পাকা ভবন।

জরিপের তিন বছরের মধ্যে সেই সংখ্যা দেড় গুণের বেশি বেড়েছে। তা ছাড়া নতুন আরও ১৮টি স্থাপনার কাজ চলছে। এ জন্য প্রশাসনের অবহেলাকেই দায়ী করছেন পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনকারীরা।

সরেজমিনে গত ২৯ জানুয়ারি দেখা গেছে, যত্রতত্র গড়ে উঠছে ইট ও কংক্রিটের স্থাপনা। আর সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের সিন্ডিকেট এসব স্থাপনার নির্মাণসামগ্রী আনছে বলে অভিযোগ রয়েছে। চেয়ারম্যানের ভাগনে হেলাল মিয়াও একটি স্থাপনা নির্মাণ করছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ‘অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে প্রশাসন আন্তরিক না। প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যেই টেকনাফ থেকে নির্মাণসামগ্রী এনে এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছে। মাঝেমধ্যে প্রশাসনের লোকজন এসব স্থাপনা বন্ধে মৌখিক নির্দেশ দিয়ে আসেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। প্রশাসন আজ পর্যন্ত একটি স্থাপনার কাজও বন্ধ রাখতে পারেনি। প্রশাসন ফেরার পরই পুরোদমে চলে নিমার্ণকাজ।’

সেন্টমার্টিনকে গত বছর মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া ঘোষণা করে সরকার। ঘোষণা অনুযায়ী এখানে ইট-সিমেন্ট আনাই নিষিদ্ধ। শুধু বাঁশ-কাঠ দিয়ে ইকো-ফ্রেন্ডলি রিসোর্ট-রেস্তোরাঁ বানানো যাবে। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ড্রিমার্স প্যারাডাইস বিচ রিসোর্ট, আটলান্টিক রিসোর্টসহ সাইনবোর্ডবিহীন ১৮টির বেশি স্থাপনা নিমার্ণের কাজ চলতে দেখা গেছে। নিমার্ণশ্রমিকরা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। এমনকি মালিকের নাম বলতেও রাজি হননি কোনো শ্রমিক।

২৯ জানুয়ারি দুপুরে সেন্টমার্টিনের পরিবেশ অধিদপ্তরে দেখা হয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আজহারুল ইসলামের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘দ্বীপে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে আমার করার কিছুই নেই। স্যাররা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা) এলে অভিযান হয়। কার্যালয়ে আমি একা থাকি। প্রশাসনিক শক্তিও নেই যে কাজ বন্ধ করে দেব। ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ ছাড়া আর কিছু আমার পক্ষে সম্ভব হয় না।’

তিনি বলেন, ‘কংক্রিট স্থাপনা বাঁশ ও পাতা দিয়ে ঢেকে এখানে নাম দেওয়া হয় ইকো রিসোর্ট। এ তথ্যও সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হয়েছে।’

চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নির্মাণসামগ্রী সরবরাহে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও তিনি তা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনোভাবেই আমি এর সঙ্গে জড়িত না।’ তবে বলেছেন, ‘সেন্টমার্টিনে পোস্ট অফিস, কোস্টগার্ড কার্যালয় ও লাইট হাউস নির্মাণ করা হচ্ছে। বাকি সব ইকো সিস্টেমে করা হচ্ছে।’

ভাগনে হেলালের তিনতলা রিসোর্ট নির্মাণ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমার আত্মীয়স্বজন কেউ ভবন বানালে সেটি তার ব্যাপার। এর দায় আমার না।’

টেকনাফের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফানুল হক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো দায় নেননি। তিনি বরং কৌশলী বক্তব্য দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করছি আমরা। স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান চলছে। সরকারের নির্দেশনা মানতে যা করণীয়, সবই করা হবে।’

বস্তুত প্রশাসনের অবহেলাতে এখানে এসব কংক্রিট স্থাপনা গড়ে উঠছে বলে মনে করেন এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ।

তার ভাষায়, ‘প্রশাসনের অবহেলা ও সমন্বয়হীনতা রয়েছে। দ্বীপ রক্ষায় অবশ্যই দেশের প্রচলিত আইন ও বিধি মানতে হবে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা