× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

১৯ পণ্যের অনুমতিতে আসে মাত্র ১টি

নাঈম ইসলাম, শেরপুর

প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:২৭ পিএম

নাকুগাঁও স্থলবন্দরে পাথরর ভাঙার কাজ করছেন এক শ্রমিক। প্রবা ফটো

নাকুগাঁও স্থলবন্দরে পাথরর ভাঙার কাজ করছেন এক শ্রমিক। প্রবা ফটো

শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্তবর্তী নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটান থেকে ১৯টি পণ্যের অনুমতি থাকলেও আসে মাত্র ১টি, তা-ও পাথর। মাঝেমধ্যে ভুটান থেকে কয়লা এলেও তা এখন একেবারে বন্ধ। এতে স্থবির হয়ে আছে পূর্ণাঙ্গ জেলার একমাত্র স্থলবন্দরটি।

ব্যবসায়ীরা পণ্য না আনতে পারায় একদিকে যেমন লোকসান হচ্ছে, অন্যদিকে কাজ না থাকায় বসে বসে অলস সময় পার করেন শ্রমিকরা। ফলে রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার।

জানা গেছে, সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর চেষ্টায় ১৯৯৭ সালে জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা নাকুগাঁও শুল্ক বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু ২০০২ সালে এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এ বন্দর দিয়ে কয়লা ও পাথর ছাড়া সব পণ্য আমদানি বন্ধ করা হয়। এরপর ২০০৯ সালে ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান স্থলবন্দরটির পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তিনি পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে চালুর ঘোষণা দেন। 

পরে ২০১১ সালে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও নৌপরিবহনমন্ত্রী বন্দরটি পূর্ণাঙ্গ বন্দরের অবকাঠামোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রায় সাড়ে ১৩ একর জমির ওপর ১৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় অবকাঠামো। এ ছাড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে ২৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নাকুগাঁও থেকে নকলা উপজেলা পর্যন্ত সাড়ে ২৯ কিলোমিটারের সড়কের কাজও করা হয়। দীর্ঘদিন কাজ শেষে ২০১৫ সালের ১৮ জুন নাকুগাঁও স্থলবন্দরে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব পরিচালনায় কার্যক্রম শুরু হয়। তবে শুরুর দিকে কয়লা আমদানি করা হলেও বর্তমানে শুধুই পাথর আমদানি করা হচ্ছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, এই বন্দর দিয়ে আমদানিযোগ্য পণ্যগুলো হলো গবাদিপশু, মাছের পোনা, তাজা ফলমূল, গাছগাছড়া, বীজ, গম, পাথর, কয়লা, রাসায়নিক সার, চায়না ক্লে, কাঠ, টিম্বার, চুনাপাথর, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, আদা, বলক্লে, ও কোয়ার্টজ। এত কিছু পণ্যের আমদানির কথা থাকলেও ভারত ও ভুটান থেকে শুধু পাথরেই সীমাবন্ধ আছে সীমান্তের এই স্থলবন্দর। মাঝেমধ্যে কয়লা আমদানি হলেও এখন তা একেবারে বন্ধ রয়েছে।

এই বন্দরে ‘শ্রমিক ইউনিয়ন শাখার’ অন্তর্ভুক্ত শ্রমিক রয়েছেন প্রায় ৮০০ জন। এ ছাড়া দিন হিসেবে কাজ করেন আরও প্রায় ১ হাজার শ্রমিক। তারা প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে মজুরি পান। এখানে লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়ন, আমদানি রপ্তানিকারক সমিতি ছাড়াও শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন এবং সমিতি রয়েছে। বর্তমানে পাথর ছাড়া অন্য কোনো পণ্য না থাকায় অলস সময় পার করছেন শ্রমিকরা। তারা জানান, কয়লাসহ অন্যান্য সব পণ্য এলে একদিকে যেমন শ্রমিকরা লাভবান হবেন, অন্যদিকে রাজস্ব পাবে সরকার।

বন্দরে কর্মরত শ্রমিক হাসমত আলী বলেন, ‘বাপু আমরা তো এখন বসেই থাকি, কামকাজ কম, পাথর এলে কাজ করি না এলে বসেই থাকি। আগে তা-ও মাঝেমধ্যেই কয়লা আইতো, এখন একেবারেই আসে না। খুব কষ্টের মধ্যেই আছি আমরা।’

নাকুগাঁও স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অরুণ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘কাগজপত্র অনুযায়ী তো ১৯টি পণ্য আসার কথা। কিন্তু একটি পণ্য আসে, তা-ও সেটি কয়লা; আগে ভারত ও ভুটান থেকে নিয়মিত পাথর ও কয়লা আসত, এখন আসে না। আমরা বারবার তাগিদ দিয়েছি অন্যান্য পণ্য আনার জন্য, কিন্তু এখন পর্যন্তও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কেউ।’

স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল বলেন, ‘নাকুগাঁও বন্দর দিয়ে বর্তমানে ভারত থেকে পাথর আমদানি করা হচ্ছে। মাঝেমধ্যে অল্প পরিমাণে কয়লা আসে, যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। যেসব পণ্য আমদানি করা সহজ হবে, সেসব পণ্য আমদানি করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এ বন্দরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থাকায় সেখান থেকে শুঁটকি মাছ, খৈল, সুপারি ও পশুখাদ্য আমদানি করা সহজ এবং লাভজনক হবে। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে বারবার আবেদন করেও কোনো ফল হচ্ছে না। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি এসব আনার সুযোগ হতো তাহলে খুব ভালো হতো।’

এ ব্যাপারে নাকুগাঁও বন্দরের সহকারী পরিচালক পার্থ ঘোষ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘১৯টি পণ্য আমদানির অনুমতি রয়েছে, তবে নিয়মিত পাথর ও মাঝেমধ্যে কয়লা আমদানি করা হচ্ছে। তবে আমরা আশাবাদী, দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই বন্দর দিয়ে শুঁটকি মাছ, সুপারি ও ফ্লাই আঁশ আমদানি করা হবে। এ ছাড়া আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে সার্বিক বিষয়ে নির্দেশনা অনুযায়ী বন্দরের সকল কার্যক্রম করা হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা