রংপুর অফিস
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:২৪ পিএম
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
রবিবার (২৯ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৩টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি দুই ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
ইলিয়াস আহমেদের প্রথম জানাজা রংপুর কোর্ট চত্ত্বরে বেলা সাড়ে ১১টায়, দ্বিতীয় জানাজা রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দুপুর ১২টায় ও সবশেষ জানাজা বাদ যোহর কৈলাশ রঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রীয় মর্যাদা শেষে শালবন মিস্ত্রিপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হবে তাকে।
১৯৬৭ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭০ সালে রংপুর সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি এবং রংপুর মহকুমা ছাত্রলীগের নেতা থাকা অবস্থায় ২ মার্চ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলণ করেন তিনি। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
স্বাধীনতার পরে শেষ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে যুবলীগ গঠন হলে তিনি রংপুর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের পর বিভিন্ন মামলা আসামি করা হয় তাকে। একই বছর যুবলীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুব সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। এরপর ১৯৮৪ সালের পর তিনি দীর্ঘ ২০ বছর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও পরবর্তীতে সিনিয়র সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
ইলিয়াস আহমেদের মৃত্যুতে রংপুরের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংষ্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মহানগর জাসদের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘রংপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বর্ষীয়ান নেতার অবদান অনস্বীকার্য। তার শুন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী আন্দোলনে তিনি আমাদের সঙ্গে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন।’
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন মন্ডল মওলা বলেন, ‘রংপুরের রাজনীতির আকাশে আরও একটি নক্ষত্র হারালাম। অ্যাড. ইলিয়াস আহমেদের সময় অনেক নেতা দলবদল করে অনেক সুযোগ সুবিধা নিয়ে অনেক পদ গ্রহণ করলেও তিনি আমৃত্যু একজন মুজিব সৈনিক হিসাবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রেজাউল করিম রাজু বলেন, ‘অ্যাড. ইলিয়াস আহমেদ আমাদের অভিভাবক ছিলেন। তিনি রাজনীতির ক্রান্তিকালে সবসময় পাশে থেকেছেন। তাকে হারিয়ে আমরা বাকরুদ্ধ।’
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মাজেদ আলী বাবুল বলেন, ‘আমরা রাজনীতিতে একজন অভিভাবক হারালাম। তিনি এ প্রজন্মের রাজনীতি চর্চাকারীদের কাছে অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন।’