× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বুড়ো ও সঙ্গীহীন প্রাণী দিয়ে চলছে রংপুর চিড়িয়াখানা

রংপুর অফিস

প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:০০ এএম

আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:০০ এএম

রংপুর চিড়িয়াখানায় গত বছর একমাত্র বাঘটি বার্ধক্যে মারা যাওয়ায় শূন্য পড়ে আছে খাঁচাটি। প্রবা ফটে

রংপুর চিড়িয়াখানায় গত বছর একমাত্র বাঘটি বার্ধক্যে মারা যাওয়ায় শূন্য পড়ে আছে খাঁচাটি। প্রবা ফটে

রংপুর চিড়িয়াখানা। নগরের সবচেয়ে পুরোনো বিনোদন উদ্যান। একসময় পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দঘনমুহূর্ত কাটানোর স্থান ছিল এটি। পাঠ্যপুস্তকে পড়া বন্যপ্রাণীর সঙ্গে পরিচিত হতো শিশু-কিশোররা। দিন অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বার্ধক্যে পড়েছে চিড়িয়াখানার পশুপাখি। অনেকের সঙ্গী নেই। বার্ধক্যে মারা গিয়েছে একমাত্র বাঘ। সেই থেকে শূন্য পড়ে আছে খাঁচাটি।

সঙ্গী না থাকায় উট পাখি ডিম দিলেও ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটানো যাচ্ছে না। উন্নয়ন হয়নি পশুপাখির খাঁচাগুলোরও। সরকারি এ বিনোদন উদ্যান থেকে দিন দিন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে দর্শনার্থীরা। রয়েছে লোকবলসংকটও। 

রংপুর চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, দেশের দুটি সরকারি চিড়িয়াখানার মধ্যে একটি রংপুর চিড়িয়াখানা। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই চিড়িয়াখানাটি নগরীর প্রাণকেন্দ্রে ২২ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ১৯৯১ সালে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তৎকালীন একজন ডেপুটি কিউরেটর, একজন জুনিয়র অফিসারসহ ১৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী চিড়িয়াখানার দেখাশোনা করতেন। বর্তমানে আছেন মাত্র সাতজন। তিনজন অ্যানিমেল কেয়ারটেকারের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র একজন। ছয়জন গার্ডের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। বিনোদনকেন্দ্রের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য মালির প্রয়োজন হলেও কাউকে পদায়নই করা হয়নি। বিভিন্ন পদে মাস্টাররোলের কর্মচারী দিয়ে চলছে কার্যক্রম।

এ চিড়িয়াখানায় রয়েছে সিংহ, জলহস্তি, হায়েনা, ভালুক, বানর, বেবুন, হরিণ, ময়না, টিয়া, ইগল, শকুন, সারস, বক, ঘড়িয়াল, অজগর সাপসহ ৩৩ প্রজাতির ২৬০টি জীবজন্তু ও পাখপাখালি। রয়েছে বিভিন্ন বনজ, ফলদ এবং ঔষধি গাছের সারি, নয়নাভিরাম লেক ও শিশুপার্ক। নতুন প্রাণী না আসা ও বার্ধক্যজনিত কারণে একের পর এক প্রাণী মারা যাওয়ায় চিড়িয়াখানায় কমছে প্রাণীর সংখ্যা।

চিড়িয়াখানার ‘শাওন’ নামের একমাত্র বাঘটি মারা যায় গত বছরের শুরুর দিকে। এ বিনোদনকেন্দ্রের বেশ বয়স্ক দুটি পুরুষ সিংহ ছিল। এর মধ্যে একটি সিংহকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নেওয়া হয়েছে। অবশ্য সেখান থেকে বর্ষা নামে একটি সিংহী এনে রাজার সঙ্গীর অভাব পূরণ করা হয়েছে। কিন্তু বয়সের তারতম্যের কারণে তাদের প্রজনন হচ্ছে না। এ ছাড়াও চিড়িয়াখানায় রয়েছে দুর্লভ মেয়ে কেসুয়ারী পাখি, ইমু পাখি, ভাল্লুক ও উট পাখি। গত দুই বছরে উট পাখি ১০ থেকে ১২টি ডিম দিলেও পুরুষ সঙ্গীর অভাবে বংশবিস্তার হয়নি।

২০২০ সালে কালোপাহাড় ও জলনূপুর নামে দুটি জলহস্তি আনা হয় ঢাকা থেকে। গত বছরের পহেলা সেপ্টেম্বর জলনূপুর একটি বাচ্চা প্রসব করে। চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠার ৩০ বছরে প্রথম কোনো জলহস্তি বাচ্চা প্রসব করায় আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা যায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে। দর্শনার্থী বাড়াতে জলহস্তির বাচ্চা প্রসবের বিষয়টি নিয়ে নগরজুড়ে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করে তারা। অবশ্য ফলও পাওয়া গিয়েছিল তাতে। জলহস্তির শাবককে দেখতে ভিড় করেছিল দর্শনার্থীরা।

করোনাকালীন দুইটি গাধা প্রজনন ঘটিয়ে ছয়টি হয়েছে। ঘোড়া-ঘুড়ির সংসারেও একটি শাবকের জন্ম হয়েছে। বংশবিস্তার ঘটিয়ে হরিণের সদস্যসংখ্যা হয়েছে ৬০টিরও বেশি, আর ময়ূর হয়েছে পাঁচটি।

পাগলাপীর থেকে স্ত্রী-সন্তানসহ চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসছেন নভেল চৌধুরী। তিনি বলেন, বাঘের খাঁচায় বাঘ নেই। প্রাণীগুলোও বুড়ো হয়ে গেছে। কুমির-ঘড়িয়াল রাখা শেডগুলোর পানি নোংরা। এসবের যথাযথ তদারকি দরকার। চিড়িয়াখানায় বন্যপ্রাণী বাড়ানো দরকার। 

নীলফামারী থেকে বেড়াতে আসা আফিয়া জান্নাত বলেন, ‘বাঘের খাঁচায় বাঘ দেখতে না পেরে হতাশ হয়েছি। জেব্রা, জিরাফ, হনুমানসহ অন্যান্য প্রাণী নেই। তবে আগের চেয়ে চিড়িয়াখানার পরিবেশ কিছুটা ভালো হয়েছে।’ 

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর আমবার আলী তালুকদার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘চিড়িয়াখানাকে আধুনিকায়ন করতে মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর, দুবাইয়ের চিড়িয়াখানার মতো এ চিড়িয়াখানাটি গড়ে তুলবে সরকার। এখানে ঘড়িয়াল প্রজনন সেন্টার হবে। যেসব প্রাণীর জোড়া নেই তাদের জোড়া নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। এ ছাড়া এক জোড়া করে জেব্রা ও বাঘের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। লোকবলসংকটের বিষয়টিও তাদের জানানো হয়েছে। তারা অচিরেই পূরণের আশ্বাস দিয়েছে।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা