বরিশাল প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:৫৭ পিএম
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:২৪ পিএম
ফাইল ফটো
বরিশালের বাবুগঞ্জে সাবেক ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি থেকে তার মা ও পুত্রবধূর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে দেলোয়ারের ছেলে ও নিহত রিপা আক্তারের স্বামী সোলায়মানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবর রহমান।
তিনি বলেন, সোলায়মানকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। এ ছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী ও সোলায়মানের মা মিনারা বেগমকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের ভুতেরদিয়া গ্রাম থেকে সাবেক ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেনের মা শতায়ু লালবানু বেগম ও পুত্রবধূ রিপা আক্তারের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পাশাপাশি একই ঘর থেকে অসুস্থ অবস্থায় তার স্ত্রী মিনারা বেগমকে (৪৫) উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিনারা বেগম শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আতিক। তিনি বলেন, মিনারা বেগমকে আমরা বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হিসেবে চিকিৎসা দিচ্ছি। বর্তমানে তিনি স্বাভাবিকভাবেই কথা বলতে পারছেন।
এদিকে স্বজনরা ঘটনার পর থেকে রিপা আক্তারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ করছেন।
চাচা নূর হোসেন দাবি করেন, তার ভাইয়ের মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, রিপার দাদিশাশুড়ি কীভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন তা আমরা জানি না তবে শাশুড়ির অসুস্থতা একটি নাটক। পরিবারের লোকজন যে বিষক্রিয়ার কথা বলছে তার কোনো আলামত দেখিনি, আবার যে সিঁধ কাটা হয়েছে তা দিয়েও মানুষের যাতায়াতের কোনো আলামত নেই। পুরো ঘটনাই রহস্যজনক, আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
নিহত রিপা আক্তারের ফুফু সীমা বেগম জানান, রিপার সঙ্গে স্বামী সোলায়মানের পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। এ নিয়ে একবার সোলাইমান রিপাকে ডিভোর্স দেয়। তবে স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে পুনরায় কাবিন করে বিয়ে দেওয়া হয়। এর পরও দুজনের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না।
তিনি বলেন, মূলত রিপাকে হত্যা করতেই পরিকল্পনা করা হয়। এ ক্ষেত্রে রিপার দাদিশাশুড়িকেও হত্যা করা হয় যেন কেউ সন্দেহ করতে না পারে। তা ছাড়া গতকাল রাতে রিপার প্রতিবেশীরা এক যুবককে ঘরের সামনে দেখেন। কিন্তু চিনতে পারেননি। আমার ধারণা, সেই যুবকই হচ্ছে রিপার স্বামী সোলায়মান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সার্কেল এসপি ফরহাদ হোসেন সরদার বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে আমরা বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে তদন্ত করছি। তদন্ত অনেকটা এগিয়ে আসছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।