× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এক সড়কে ১১ সেতুই অকেজো

নেত্রকোণা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:১১ পিএম

আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:২২ পিএম

নেত্রকোণার মদন-ফতেপুর সড়কে অধিকাংশ সেতুতে সংযোগ সড়ক না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী। প্রবা ফটো

নেত্রকোণার মদন-ফতেপুর সড়কে অধিকাংশ সেতুতে সংযোগ সড়ক না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী। প্রবা ফটো

মাত্র ছয় কিলোমিটার সড়ক। নেত্রকোণার মদন উপজেলার মদন-ফতেপুর সড়কটির বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ১১টি সেতু। মানুষের যাতায়াতের জন্য সেতুগুলো নির্মিত হলেও বর্তমানে এগুলো মানুষের কোনো উপকারেই আসছে না। উল্টো বেড়েছে দুর্ভোগ।

সেতুগুলোর দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা বারবার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও কোনো সুফল মিলছে না। কর্তৃপক্ষ কেবল আশ্বাস দিয়ে দায় সারছে। ফলে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ওই সড়কে যাতায়াতকারী লোকজন প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নেত্রকোণা জেলা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৫-১৯৯৬ অর্থবছরে মদন-ফতেপুর সড়কের বয়রাহালা, ডালী নদীসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১টি সেতু নির্মাণ করা হয়। এ সড়কে সেতু নির্মাণের পর এক যুগ আগে পৌরসভা অংশের দুই কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণ করা হয়। পৌরসভার অংশটিও এখন বেহাল। এই সড়কে গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে চলাচল করাও দুষ্কর।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় মদন উপজেলার তিয়শ্রী, ফতেপুর ও নায়েকপুর ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের হাজার হাজার লোক প্রতিদিন উপজেলা সদরে আসা-যাওয়া করত এই সড়ক দিয়ে। কিন্তু এক যুগের বেশি সময় ধরে সড়কটি বেহালের কারণে অধিকাংশ গ্রামের লোকজন যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছেন। শুধু বাগজান, বৈঠাখালী, ভবানীপুর, তিয়শ্রী, ফেকনী, মধুপুর গ্রামের মানুষ প্রতিদিন দুর্ভোগ নিয়ে বাধ্য হয়ে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে থাকেন। সড়কের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত সেতুগুলোর সংযোগ সড়কে মাটি না থাকায় গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটেও চলাচল করা যায় না। এলাকাবাসী সেতুগুলোতে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে কোনোমতে চলাচল করছেন। কাঁধে সাইকেল নিয়ে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হচ্ছেন।

তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন কৃষকরা। তারা স্থানীয় তিন-চারটি হাওরের হাজার হাজার টন ধান ঘরে তুলতে ব্যবহার করছেন এই সড়ক। সেতু পার হতে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করায় ধান কাটার হারভেস্টারসহ মাড়াই মেশিন নিয়ে যাওয়াই সম্ভব হচ্ছে না। এতে কৃষকদের দুর্ভোগের পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হচ্ছে।

বৈঠাখালী গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের গ্রামের লোকজন এই রাস্তা দিয়েই সব সময় চলাচল করে। কিন্তু ১৭-১৮ বছর ধরে সেতুগুলো ব্যবহার করতে পারছি না। সেতু পার হওয়ার জন্য এখন আমরা বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করছি। সেতুর দুই পাশে মাটি না থাকায় কৃষিকাজের সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে আমাদের। নির্বাচন এলে চেয়ারম্যান-মেম্বার প্রার্থীরা অনেক কথাই বলেন। কিন্তু নির্বাচন চলে গেলে কেউ আর খোঁজখবর নেয় না।’ দ্রুত সেতুগুলো মেরামত করে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

স্থানীয় কলেজশিক্ষার্থী সাগর মিয়া বলেন, ‘আমাদের এলাকার দুটি গ্রামের লোকজন একমাত্র এই সড়কটি দিয়েই যাতায়াত করেন। বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। তাই কষ্ট সহ্য করেও শিক্ষার্থীসহ সব পেশার লোকজনকে এই সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গ্রামে কোনো গাড়ি পর্যন্ত আসতে পারে না। যাদের মোটরসাইকেল বা অটোরিকশা আছে, তারা পৌরসদরে ভাড়া দিয়ে গাড়ি রাখেন। হেঁটে চলাচলের জন্য প্রতিবছর আমরা গ্রাম থেকে টাকা তুলে রাস্তা মেরামত করি।’ 

তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বেহাল সড়ক ও সেতুগুলোর কারণে আমার ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের লোকজনকেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের বারবার আমরা অবহিত করছি।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মদন উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল বলেন, ‘এ বিষয়ে ডিপিপিতে প্রস্তাব দিয়ে রেখেছি। প্রকল্পটি পাস হলেই কাজ শুরু করা হবে।’

এ বিষয়ে কথা হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নেত্রকোণার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম শেখ বলেন, রাস্তাটি হাওরাঞ্চলে হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানির কারণে সেতুর দুপাশের মাটি সরে যায়। সংস্কারের জন্য যে প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সে অনুযায়ী বরাদ্দ পেলে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা