× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দখল-দূষণ

নদী ভরছে স্থাপনায়, বন্দর হিমঘরে

নুপা আলম, কক্সবাজার

প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:১২ পিএম

আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:১৩ পিএম

কক্সবাজারের বাঁকখালী নদী ভরাট করে এভাবেই দখল করা হয়েছে। ছবি : প্রবা

কক্সবাজারের বাঁকখালী নদী ভরাট করে এভাবেই দখল করা হয়েছে। ছবি : প্রবা

উচ্চ আদালত বিভিন্ন নির্দেশনা দিলেও থেমে নেই দখল, দূষণ ও ভরাটের কাজ। এমনকি ব্যাপক এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে বিপুলসংখ্যক বাড়িঘর। কক্সবাজার শহরের প্রাণকেন্দ্রের বাঁকখালী নদীর ভাগ্যে এমনটাই ঘটেছে। অথচ এই নদী ঘিরে ১২ বছর আগে বন্দর গড়ে তোলার চিন্তা করা হয়। ২০১০ সালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক নিযুক্ত করে সরকার।

কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটে কক্সবাজার মৌজার বিএস ১ নম্বর খাস খতিয়ানের পাঁচ দাগে নদী, খাল ও বালুচরে প্রায় ১২০ একর জমি প্রকাশ্যে দখল করেছে ভূমিদস্যুরা। তারা প্যারাবন ধ্বংস করে ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণ করেছেন কয়েক বছরের মধ্যে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ২০১০ সালে সরকার নির্দেশ দিলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার বিআইডব্লিউটিএকে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক নিযুক্ত করে। প্রজ্ঞাপনে নদীর তীরের ৭২১ একর জমি বিআইডব্লিউটিএকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ ছিল। কিন্তু ওই সময় জেলা প্রশাসনের আপত্তির কারণে ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর ভূমি পুনরায় জরিপ করা হয়। জরিপে নির্ধারিত ২৬৯ দশমিক ৪২৫ একর নির্ধারিত হয়।

বিআইডব্লিউটিএর পক্ষে বিভিন্ন সংস্থায় পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাঁকখালী নদীবন্দরটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় তীরের ভূমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। নদী দখলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কক্সবাজারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। সংস্থাটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে নদী দখলে জড়িত ১৩১ জনকে চিহ্নিত করে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে চিঠি দেয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

এ বিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিটের পূর্ণাঙ্গ শুনানি হয়েছে। শুনানি শেষে ২০১৬ সালে রায় ঘোষণার ৬০ দিনের মধ্যে নদীতীর-ভূমি বিআইডব্লিউটিএকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ ছিল। তা-ও আজ পর্যন্ত কার্যকর হয়নি।

রিট পিটিশন দায়েরকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. রায়হানুল মোস্তফা বলেন, সরকার কক্সবাজার অঞ্চলের যোগাযোগ অবকাঠামো ও শিল্প খাতের উন্নয়নের স্বার্থে বাঁকখালী নদীবন্দর ঘোষণা করেছিল। কিন্তু এক যুগ পেরিয়ে গেলেও স্থানীয় জেলা প্রশাসন নির্দিষ্ট সংস্থার কাছে নদীতীর হস্তান্তর করেনি। ফলে বাঁকখালী নদীর দুই তীর অবৈধ দখলে চলে গেছে। 

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলছেন, সরকারের ব্লু ইকোনমি কার্যক্রম, সমুদ্রসম্পদ আহরণ এবং স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণে বাঁকখালী নদীবন্দর স্থাপন খুবই জরুরি। কিন্তু আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও জেলা প্রশাসন নদীতীরের ভূমি বুঝিয়ে দেয়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে।

নদী দখলের চিত্র বেদনাদায়ক বলে মনে করেন পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ।

তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, প্রকাশ্যে নদী দখল, প্যারাবন উজাড়, দূষণ, ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণ করা হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলা ও নেপথ্যে দখলদারদের পক্ষে থাকায় বাঁকখালী নদী আজ আবাসিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। এমনকি প্রায় ২০০ প্লট করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে প্রকাশ্যে নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পমূলে বেচাকেনা হয়েছে; এখনও হচ্ছে। পাকা-আধাপাকা, দালানকোঠা গড়ে উঠছে নির্বিঘ্নে। প্রশাসনকে জানানো হলেও বরাবরের মতোই তারা চুপ থেকেছে বলে অভিযোগ করেন রাশেদুল মজিদ।

প্রশাসন বরাবরের মতোই নানা অজুহাতে দায় এড়িয়ে গেছে। কক্সবাজারের বর্তমান জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, মাত্র এক মাস হলো আমি কক্সবাজারে দায়িত্ব নিয়েছি। নদীবন্দর এবং বাঁকখালী নদীতীরের জমি বিআইডব্লিউটিএর কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়টি জানি না। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে বাঁকখালী নদীতীর দখলের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দখলদারদের তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। তাদের উচ্ছেদে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা