পাবনা সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:১৯ পিএম
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:৩৫ পিএম
বুধবার রাতে ঈশ্বরদীর পৌর কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন ও তার ভাতিজা হৃদয় হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ছবি : প্রবা
পাবনার ঈশ্বরদীর পৌর কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন ও তার ভাতিজা হৃদয় হোসেনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র্যাব। দুজনেই রিকশাচালক মামুন হোসেন হত্যা মামলার আসামি। এর আগে কামাল উদ্দিন ও হৃদয় হোসেনকে বুধবার গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন স্বজনেরা।
তবে শুক্রবার (৬ জানুয়ারি)
সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১২-এর কোম্পানি কমান্ডার তৌহিদুল মবিন খান জানান, বুধবার
রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।অভিযানের স্বার্থে গ্রেপ্তারের বিষয়টি গোপন রাখা
হয়েছিল।
গ্রেপ্তার কামাল উদ্দিন
ঈশ্বরদী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। তিনি রিকশাচালক
মামুন হত্যায় অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনের ভাই। অন্যদিকে হৃদয় হোসেন আনোয়ার হোসেনের
ছেলে।
তাদের বাড়ি ঈশ্বরদী
পৌর সদরের শৈলপাড়া-১২ কোয়ার্টার মহল্লায়।
র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার তৌহিদুল মবিন খান
বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাতে কোয়ার্টার
এলাকার বসতবাড়ি থেকে মামুন হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি কামাল উদ্দিন ও তিন নম্বর আসামি
তার ভাতিজা হৃদয় হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ঈশ্বরদী থানায় হস্তান্তর
করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে রেলের তেল চুরিসহ একাধিক মামলা
রয়েছে। হৃদয়ও একাধিক মামলার আসামি। আনোয়ারসহ বাকি অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান অব্যাহত
রয়েছে।’
এর আগে স্থানীয়দের বরাত
দিয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরিন্দম সরকার জানান, বুধবার রাতে ঈশ্বরদী
ইপিজেড থেকে আসা দ্রুতগামী ভটভটি ও লেগুনা গাড়ি থামিয়ে তাদের বেপরোয়া গতিতে চলাচলে
নিষেধ করেন স্থানীয় দোকানদাররা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর
কামাল উদ্দিনের ভাই আনোয়ার উদ্দিন তার দলবল নিয়ে দোকানদারদের ওপর চড়াও হন। তাদের মধ্যে
হাতাহাতির একপর্যায়ে আনোয়ার উদ্দিন তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে রিকশাচালক মামুন
হোসেন ও রকি হোসেনকে গুলি করেন। সে সময় তার সঙ্গীরা সুমনকে ছুরিকাঘাতে আহত করে পালিয়ে
যান।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার
করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মামুন হোসেনকে মৃত ঘোষণা
করেন। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা
হয়।
মামুন হোসেনের নিহত
হওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) রাতে হত্যা মামলা করেন তার মা লিপি বেগম। এতে
কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলায় তার ভাই আনোয়ার হোসেনসহ চারজনের
নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামিরা হলেন—হত্যায় অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন, তার ভাই যুবলীগ নেতা ও কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন, আনোয়ারের ছেলে হৃদয় হোসেন ও মো. ইব্রাহিম।
অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনের
স্ত্রী বিচিত্রা পারভিন বলেন, ‘আমার স্বামী আনোয়ার যুবলীগের রাজনীতি করলেও তিনি
রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাকে ফাঁসানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে গুলি করার কথা বলা হচ্ছে।’
ঈশ্বরদী পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘আনোয়ার হোসেনের যুবলীগের কোনো কমিটিতে পদ-পদবি নেই।’