গাইবান্ধা সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:৩৪ পিএম
আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:০৫ পিএম
একজন যাত্রী নিয়ে নৌকা চালাচ্ছেন হাসু মিয়া। ছবি : প্রবা
গাইবান্ধার ফুলছড়ির হাসু মিয়া নৌকা চালান। থাকেন বালাসীঘাটের উত্তরে চর খারজানিতে। স্ত্রী-সন্তানসহ তিন জনের পরিবার তার। এক সময় ১৬ থেকে ২০টি চরের মানুষ গন্তব্যে পৌঁছাতে চড়তেন তার নৌকায়। কিন্তু এখন চড়েন না। তাই স্বল্প পরিসরে নৌকা চললেও হাসু মিয়ার সংসার চলে না!
হাসু মিয়া বলেন, চরের মানুষ এখন হেঁটে বাড়ি ফেরেন। গন্তব্যে যান। শীতের কারণে অনেকে আবার ঘর থেকে বের হন না। দিনে ৩ থেকে ৪ জন মানুষ নৌকায় ওঠেন। তাদের পারাপার করে সংসার খরচ ওঠে না।
এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কয়েকদিনের ঠান্ডায়। হিমেল হাওয়া আর কুয়াশা বাড়ায় মানুষ অতিপ্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না। এ অবস্থায় আয়ের একমাত্র পথটি প্রায় বন্ধ হাসু মিয়ার।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) বালাসীঘাটে মাত্র ১ জন যাত্রী নিয়ে পার হচ্ছিলেন তিনি। জিজ্ঞেস করলে জানান, সবাই বড় নৌকায় ওঠেন। ছোট নৌকায় নাকি ভয় লাগে। তাই তেমন কেউ ওঠেন না।
হাসু মিয়ার নৌকার ইঞ্জিনটি ধারের টাকায় কেনা। বালাসীঘাট থেকে ব্রহ্মপুত্র,যমুনা নদী দিয়ে আশপাশের অন্তত ২০টি চরের মানুষকে পারাপার করেন তিনি। কেউ ৫ টাকা কেউ ২ টাকা দেন। দিনে সর্বসাকল্যে ১৫০ টাকা আয় তার। তাও আবার প্রতিদিন না। কোনো কোনোদিন আয় হয় ৯০ টাকা। এই টাকায় তিন জনের জন্য ভাত আর আলু ভর্তার ব্যবস্থাও হয় না।
সুন্দরগঞ্জের পোড়ার চরের রেজা বলেন,হাসু মিয়ার খুব কষ্ট। ছোট বেলা থেকে নৌকা চালান। টাকা পয়সা কেউ দেয় কেউ দেয় না। তারপরও যা পায় তাই দিয়ে পেটে ভাতে চলছেন। কিন্তু কয়েকদিন ধরে ঠান্ডা বাতাস ও ঘন কুয়াশায় হাত পা কাঁপে। তার পরও নৌকা নিয়ে আসেন বালাসীঘাটে। যাত্রীর আশায় দিনভর বসে থাকেন। কিন্তু নৌকায় কেউ যায় না।
হাসু মিয়া বলেন, নৌকা চালিয়ে যা আয় করি তা দিয়ে সংসার আর চলে না। গতবছর একজন একটি চাদর দিয়েছিলেন। তাই দিয়ে শীত নিবারণ করি। শীতের কাপড়ের অভাবে স্ত্রী-সন্তান ঘর থেকে বের হতে পারে না।