মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:১১ এএম
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:৩২ এএম
জেসি মাহমুদকে জেনারেল হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ছবি : প্রবা
মুন্সীগঞ্জ শহরে এক কিশোরীকে ছাদে নিয়ে মেরে নিচে ফেলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে স্বজনরা তাকে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত জেসি মাহমুদ মুন্সীগঞ্জ শহরের আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন (এভিজেএম) সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ও জেলা সদরের সাতানিখিল এলাকার সেলিম মাহমুদের মেয়ে। তারা মুন্সীগঞ্জ শহরের মধ্য কোটগাঁও এলাকায় মন্টু মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া।
এ বিষয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শৈবাল বসাক বলেন, ‘নিহত কিশোরীকে দুই দফা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। প্রথমবার ভাই পরিচয়ে একজন তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আশঙ্কাজনক হওয়ায় আমরা তাকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিই। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বজনরা তাকে নিয়ে পুনরায় হাসপাতালে আসেন। তখন আমরা নিশ্চিত হই তার মৃত্যু হয়েছে।’
নিহতের মুখমণ্ডল ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক।
জেসির ভাই জিদান মাহমুদ বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকালে তার বোন মোবাইল ফোনে টাকা উঠানোর কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে প্রতিবেশী আরিফুর রহমানের ছেলে বিজয় তাদের ফোনে জানায় জেসি বাসার ছাদ থেকে পড়ে গেছে। এখন সে মুন্সীগঞ্জ হাসপাতালে রয়েছে। আমি দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আমার বোনকে নিয়ে ঢাকায় রওনা দিই।
পথিমধ্যে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর সেতু পার হতেই দেখি তার শরীর নিথর হয়ে গেছে। শ্বাসপ্রশ্বাস কাজ করছে না। পরে ঢাকা না গিয়ে দ্রুত মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ফিরে আসি। তখন ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে ছাদে নিয়ে গিয়ে মারধর করে মেরে ফেলা হয়েছে।’
যে ভবনের ছাদ থেকে পড়ে ঘটনাটি ঘটেছে বলা হচ্ছে, ওই বাড়ির মালিক আরিফুর রহমান। এ বিষয়ে তিনি জানান, তার বাসভবনের ছাদ সব সময় খোলা থাকে। হঠাৎ তার বাসভবনের পাঁচ তলার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে মেয়েটি। পরে তিনি মানবিক কারণে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
কিশোরীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, মেয়েটি তার পরিচিত নন। শুধু নিজের বাসায় মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে তাই মানবিক কারণে মেয়েটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) খায়রুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। বিভিন্ন বিষয় সামনে রেখে তদন্ত করা হচ্ছে। পরে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে মরদেহ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।