সীমান্তে গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার দোলাপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত এবং আরও দুজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নিহতরা হলেন- হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দোলাপাড়া এলাকার হাফিজুল ইসলামের ছেলে সাব্বির হোসেন সাদিক ও একই ইউনিয়নের পূর্ব ফকিরপাড়া এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে নাজির হোসেন মংলু। 

আহতরা হলেন- পূর্ব ফকিরপাড়া এলাকার আব্দুল কাছিমের ছেলে আব্দুল গণি ও একই এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আজিজুল ইসলাম। 

বড়খাতা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দোলাপাড়া সীমান্তের ৮৮৮ নম্বর মেইন পিলারের কাছে বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে এই ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. হাফিজুল ইসলাম। 

তিনি নিহত ও আহতদের পরিচয় নিশ্চিত করে বলেন, ‘বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে ১৫-১৬ জন চোরাকারবারির একটি দল ভারতীয় গরু পাচারকারী চক্রের সহযোগিতায় গরু আনতে গেলে ভারতীয় রানীনগর ৭৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ভাভেরহাট এলাকার অমৃত ক্যাম্পের টহল দলের গুলিতে দুজন নিহত ও দুজন আহত হন। পরে বিজিবির সদস্যরাসহ অনেকেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’

জানা গেছে, চাপানী তিস্তা ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের বড়খাতা দোলাপাড়া বিওপির দায়িত্বশীল এলাকার ৮৮৮ নম্বর মেইন পিলার সীমান্তে এই ঘটনা ঘটে। ওপারে ভারতীয় রানীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ভাভেরহাট বিএসএফ ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত এবং আরও দুজন গুলিবিদ্ধ হন। গরু পারাপারকারী দলের অন্য সদস্যরা নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। নিহতের লাশ নিজ নিজ বাড়িতে আনা হয়েছে। আহতদের রংপুরে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।  

নিহত সাব্বির হোসেন সাদিকের চাচা হুমায়ুন কবির বলেন, এ বছর সাদিক বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা থেকে এসএসসি পাস করেছে। মা-বাবা সবার খুব আদরের সন্তান ছিল। বিএসএফ সেই স্বপ্ন ভেঙে দিল। তার আর কলেজে পড়াশোনা করা হলো না। আমরা বিচার চাই। এই গুলি বন্ধ চাই। 

হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহা আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ ব্যাপারে জানতে চাপানী ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মীর হাসান শাহরিয়ার মাহমুদ জানান, কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বিএসএফের গুলিতে তারা নিহত হয়েছেন কিনা, এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।