মধ্যাঞ্চলীয় ব্যুরো
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:৪৪ পিএম
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:২৮ পিএম
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ফাইল ছবি
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের নামে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপতির নামে স্টেডিয়াম, শিল্পকলা একাডেমি ও সংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ। ইতোমধ্যে স্টেডিয়াম নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, স্টেডিয়ামের জন্য ৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ধরা হয়েছে জুলাই ২০২২ থেকে জুন ২০২৩ পর্যন্ত। এক বছর মেয়াদি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। প্রকল্পটি অনুমোদনের ইতোমধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়।
স্টেডিয়ামটিতে থাকবে ক্রিকেট, ফুটবলসহ অন্যান্য খেলার উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে ক্রিকেট, ফুটবলসহ অন্যান্য আউটডোর প্রতিযোগিতার আয়োজন। স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ইভেন্টে প্রতিদিন ৫০ জন খেলোয়াড়ের অনুশীলনের সুযোগ সৃষ্টি করা এ প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া এক চিঠিতে স্টেডিয়ামটির ভূমি অধিগ্রহণের প্রকল্প নিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেন। চলতি বছরের জুলাই মাসে অর্থ বিভাগ প্রকল্পটি গ্রহণের ক্ষেত্রে পূর্বানুমোদন দেয়। পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পের প্রস্তাবে জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাবে অস্বচ্ছতাসহ কয়েকটি বিষয়ে মতামত তুলে ধরে।
পরিকল্পনা কমিশন বলেছে, জমি অধিগ্রহণের দামের বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পে ঝুঁকি বিশ্লেষণ এবং প্রশমনের বিষয় উল্লেখ নেই। জমি অধিগ্রহণের পর স্টেডিয়াম নির্মাণের একটি পরিকল্পনা তৈরি করারও পরামর্শ দিয়েছে কমিশন।
এদিকে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে মিঠামইন উপজেলায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের নামে শিল্পকলা একাডেমি ও আঞ্চলিক সংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। চলতি অর্থ বছরের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) এক সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ৪ বছর মেয়াদি প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
শিল্পকলা একাডেমি ও আঞ্চলিক সংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, জাতীয় সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে মিল রেখে হাওর অঞ্চলের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিক বিকাশ, উন্নয়ন, প্রসার, সংরক্ষণ এবং সংস্কৃতির বিভিন্ন মাধ্যম জনগণের কাছে পরিচিত করা শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণের লক্ষ্য। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের শিল্পী, কবি-সাহিত্যিক, গীতিকার, সুরকার, বাউল, মরমি শিল্পী এবং চলচ্চিত্রকারদের জাতির সামনে উপস্থাপন করা সংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের অন্যতম উদ্দেশ্য। প্রকল্পটির আওতায় সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চায়নের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধার একটি অডিটোরিয়াম, একটি মাল্টিপারপাস হল ও একটি আর্ট গ্যালারি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির নামে স্টেডিয়ামটি নির্মিত হলে জেলার হাওরাঞ্চল ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলার ছেলে-মেয়েরা অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে সমান তালে সুস্থ বিনোদন ও খেলাধুলার মাধ্যমে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমি গড়ে উঠলে হাওর অঞ্চলের সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিকাশ ঘটবে। পাশাপাশি এলাকার তরুণ তরুণীদের মাধ্যমে মুক্ত মনন ও মানসিকতা তৈরিতে অবদান রাখবে সংস্কৃতিক কেন্দ্র।’