রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:০৮ পিএম
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:৪৩ পিএম
জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। ছবি কোলাজ
রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ভোট গ্রহণের বাকি কয়েকঘণ্টা। নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির হেভিওয়েট প্রার্থীর সঙ্গে লড়ছেন আওয়ামী লীগসহ ৯ প্রার্থী। ১৭ দিনের প্রচার পর্বে ভোটারদের মন জয় করতে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন তারা। ভোটের ৩৬ ঘণ্টা আগে বন্ধ হয়ে গেছে আনুষ্ঠানিক প্রচার। তবে ভোটারদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। সেই সঙ্গে ফেসবুকে তারা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার। শেষ সময়ে কোন প্রার্থী কত ভোট পাবেন, কে হবেন মেয়র এসব নিয়ে হিসাবনিকাশে ব্যস্ত ভোটারা।
জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র প্রয়াত সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুকে প্রায় লাখখানেকের ভোটে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। এবার দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র পদে নির্বাচন করছেন তিনি। শুক্রবার তাকে নিজে মোটরসাইকেল চালিয়ে নগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ তদারকি করতে দেখা গেছে।
ভোটারদের একটা অংশ মনে করেন, মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের পর যেকোনো প্রয়োজনে কথা বলতে সব শ্রেণির মানুষের জন্য নিজের দরজা খোলা রাখেন মোস্তফা। পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানে আড্ডা, সাধারণ মানুষের সঙ্গে সময় কাটানোসহ নানা কর্মকাণ্ডে তার ইমেজকে চাঙ্গা করেছে আরও। অনেকে বলছেন, সেই সঙ্গে ভোটারদের লাঙ্গল প্রীতি থাকায় তিনি এ নির্বাচনে অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন।
এ সিটি নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করলেও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য সাবেক এমপি হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। এ নিয়ে দলের মাঝে বিদ্রোহ দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এম এ মজিদ ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আতাউর জামান বাবু। তবে মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদ হারিয়েও ভোটের মাঠে লড়াই করে যাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলন।
নির্বাচনের আগে মহানগর আওয়ামী লীগ নগরীর কোতোয়ালি, হারাগাছ, পরশুরাম, হাজীরহাট, মাহিগঞ্জ, তাজহাট থানায় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করে। এর ফলে নির্বাচনের মাঠে শক্তিশালী আওয়ামী লীগ। তাই তফসিলের আগে ডালিয়া আলোচনা না থাকলেও দলীয় প্রতীকের কারণে তিনি নির্বাচনি মাঠে একটি অবস্থান দখল করেছেন।
অপরদিকে নির্বাচনের প্রচারের শুরুতে লতিফুর রহমান মিলন তেমন আলোচনায় না থাকলেও দিন-রাত গণসংযোগ, পথসভায় তিনি নতুনভাবে নগরবাসীর কাছে পরিচিতি পেয়েছেন। তাই অনেক ভোটারের ধারণা মেয়রের পদে ভোটের লড়াইয়ে হাতি প্রতীকের মিলনও কোনো অংশে কম যাবেন না।
গত দুই সিটি নির্বাচনের চেয়ে এবার ভোটের অংকে এগিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এ নির্বাচনে দলের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়ালের ভোট বাড়তে পারে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। অপরদিকে এ নির্বাচনে জাসদের শফিয়ার রহমান (মশাল), জাকের পার্টির খোরশেদ আলাম (গোলাপ ফুল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান (ডাব), খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মন্ডল (দেওয়াল ঘড়ি) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি (হরিণ) নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে নিজেদের প্রচার চালিয়েছেন। আগামীকালের ভোট শেষে বোঝা যাবে কে হবেন মেয়র।
রংপুর মহানগর সুজনের সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিগত সময়ে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে তা অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল। এবারের নির্বাচনে একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকায় সেভাবে জমে উঠেনি। আগামী ২৭ ডিসেম্বর সাধারণ ভোটাররা তাদের যোগ্য প্রার্থীকেই বেছে নেবে।’