বরিশাল সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:৩৬ পিএম
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:৫৭ পিএম
মেঘনায় ডুবে গেছে তেলবাহী জাহাজ সাগর নন্দিনী-২। ছবি: সংগৃহীত
মেঘনা নদীর চাঁদপুর অংশে ডুবে যাওয়া তেলবাহী জাহাজ সাগর নন্দিনী-২ উদ্ধারের সক্ষমতা নেই বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উদ্ধারকারী জাহাজের। বেসরকারি উদ্ধারকারী জাহাজ দিয়ে সেটি উদ্ধারের পরিকল্পনা চলছে। এদিকে ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে তেল ছড়িয়ে পড়ায় মেঘনা নদীর মৎস্য ও জলজ সম্পদের ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা জানিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা।
কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা কে এম শাফিউল কিঞ্জল জানান, ‘সাগর নন্দিনী-২’ নামের জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে চাঁদপুরের পদ্মা ডিপোতে আসছিল। তবে রবিবার নদীতে ঘন কুয়াশা থাকায় রাত ৪টার দিকে তুলাতলী মাঝের চরে আরেকটি নৌযানের সাথে জাহাজটির সংঘর্ষ ঘটে। পরে জাহাজটি ডুবে যায়। তবে জাহাজের সব ক্রুকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিয়ের যুগ্ম পরিচালক মো. সেলিম জানান, জাহাজ ডুবির খবর পেয়ে তিনি বিআইডব্লিউটিএয়ের উদ্ধারকারী দল নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। জাহাজটি ডুবেছে মেঘনার চাঁদপুর অংশে। সেটির ইঞ্জিনের দিকের তিন ভাগের দুইভাগ ডুবে আছে।
তিনি জানান, ডুবে যাওয়া জাহাজাটির খালি অবস্থায় ওজন ৩৩০ মেট্রিক টন। ভেতরে জ্বালানি তেল এবং ডুবে যাওয়ার পর পানি প্রবেশ করে ওজন আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। অপরদিকে বরিশালে বিআইডব্লিউটিয়ের উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক ২৫০ মেট্রিক টন ওজনের জাহাজ তুলতে সক্ষম। এ কারণে বিআইডব্লিউটিএয়ের অন্য কোনো উদ্ধারকারী জাহাজ ডুবে যাওয়া তেলবাহী জাহাজটি উদ্ধার করতে পারবে না। এ অবস্থায় জাহাজটির মালিকপক্ষ বেসরকারি উদ্ধারকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
মো. সেলিম জানান, কোনো প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে পরিদর্শন করে জাহাজ উদ্ধার করতে রাজি হলে আরও চার-পাঁচ দিন পর উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারবেন।
বিআইডব্লিউটিএয়ের এই কর্মকর্তা জানান, ডুবে যাওয়ার পর জাহাজ থেকে কিছু তেল পানিতে ছড়িয়ে পড়লেও পরবর্তীতে কোস্টগার্ড তাদের প্রযুক্তি দিয়ে তেল ছড়ানো বন্ধ করে দিয়েছে। পানিতে ছড়িয়ে পড়া তেল বিশেষভাবে শোধন করে উদ্ধার করা হচ্ছে।
তবে স্থানীয়রা জানান, নদীতে ছড়িয়ে পড়ার পর জেলেরা তেল সংগ্রহ শুরু করেন। তারা নৌকা নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফোম দিয়ে শোধন করে তেল সংগ্রহ করেছেন।
সবুজ আন্দোলনের সমন্বয়কারী কাজী মিজানুর রহমান ফিরোজ বলেন, ‘জ্বালানি তেলসহ জাহাজ ডুবিতে মেঘনার মৎস্য ও জলজ সম্পদের বড় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অপরিশোধিত তেল পানির ওপরের অংশের অক্সিজেন ধ্বংস করে দেয়। এতে পানির নিচে থাকা মৎস্য ও জলজ সম্পদ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’