ফরিদপুর সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:০৭ পিএম
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:৫২ পিএম
বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ একেএম হাফিজউদ্দিন। ছবি : প্রবা
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পবনবেগ গ্রামের শাহ্ একেএম হাফিজউদ্দিন। তিনি একজন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা।
১৯৭১ সালে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন তিনি। এতে তিনি ডান হাতের শাহাদাত আঙুল ও বাম কানের লতির ওপরের দিকে স্প্লিন্টারের প্রচণ্ড আঘাত পান। আজও সেদিনের শত্রুর গ্রেনেডের ক্ষতচিহ্নই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহন করে তার। সুযোগ পেলেই তিনি ছেলেমেয়েদের শোনান মুক্তিযুদ্ধের দিনের গল্প।
বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম হাফিজউদ্দিন জানান, তিনি ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ড অধীন বিহার (ভারত) চাকুলিয়ায় ট্রেনিং নেন। ট্রেনিংয়ের সময় তার সততা, সুদক্ষতা ও বীরত্বের জন্য ‘উইং লিডার’ উপাধি পান। যুদ্ধে তিনি ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ড ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা ডেপুটি থানা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পরে তিনি ডেপুটি সাব-সেক্টর কমান্ডার হিসেবে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার বায়তুল আমান মিলিশিয়া ক্যাম্পে নিয়োজিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফিজউদ্দিন তার সাথি মুক্তিবাহিনী নিয়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারী ঘোড়াখালী রেলওয়ে ব্রিজ বিধ্বস্ত করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের বিভিন্ন সময় ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ও সাব-সেক্টর কমান্ডারদের সঙ্গে বোয়ালমারী থানা, আলফাডাঙ্গা থানা, মোহাম্মদপুর থানা, কাশিয়ানী থানার ভাটিয়াপাড়া তার সাথি বীরদের নিয়ে হানাদারদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেন।
শাহ্ একেএম হাফিজউদ্দিন বলেন, ‘১৫ আগস্ট ভোর ৪টার দিকে ১০-১২ জন সাথি নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও লোকবল আনার জন্য ভারত অভিমুখে যাত্রা করি। ওই দিন রাত ৯ থেকে ১০টার মধ্যে যশোরের কালীগঞ্জ থানার বারোবাজার রেলক্রসিংয়ের সময় শত্রুপক্ষ বোমা ও গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং বিকট শব্দ হয়। এ সময় আমি আহত হই। পরে সঙ্গীরা আমাকে নিয়ে ভারতের কল্যাণী ক্যাম্পে ডাক্তার আফতাব উদ্দীনের কাছে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময়কার এমন নানা স্মৃতি, যা বলে শেষ করার নয়। এ যুগের ছেলেমেয়েদের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা এসব নিয়ে জানার আগ্রহ নেই। তারা বন্দি মোবাইল, ইন্টারনেটে। সারা দিন ব্যস্ত মোবাইলে গেমস নিয়ে। আমি সুযোগ পেলেই এলাকার নানান বয়সি মানুষ থেকে শুরু করে বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের মুক্তিযুদ্ধকালীন গল্প শোনাই। যাতে করে তারা উপলব্ধি করতে পারে কতটা ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে।’