× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রাণীগঞ্জ সেতুতে সুনামগঞ্জ-ঢাকার দূরত্ব কমলেও ভাড়া কমছে না

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা

প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:৫৯ পিএম

আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২২ ২১:৫৮ পিএম

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে নির্মিত রাণীগঞ্জ সেতু। ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে নির্মিত রাণীগঞ্জ সেতু। ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের রাণীগঞ্জ সেতু উদ্বোধনের ফলে ঢাকার সঙ্গে জেলার দূরত্ব কমেছে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। এই সেতু চালু হওয়ার পর রাজধানীতে যেতে যাতায়াত সময় কমেছে দুই ঘণ্টা। এতে যাতায়াত খরচও কমার কথা। তবে সেটি হয়নি। গণপরিবহনের ভাড়া কমেনি। এজন্য এর সুফল ভোগ করতে পারছেন না জেলাবাসী। কিছু পরিবহন বিকল্প পথে চললেও সেগুলোরও ভাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে।

সুনামগঞ্জের পাগলা- জগন্নাথপুর- রাণীগঞ্জ- সৈয়দপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর ওপর রাণীগঞ্জ সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট। ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতু ও আড়াই কিলোমিটার সংযোগ সড়ক কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ২৪ ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড ২৪ বি এবং এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড এমবিইএল। চুক্তি অনুযায়ী ৭০২ দশমিক ৩২ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থ সেতুটির নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ছয় বছরে এসে শেষ হয়। ফলে চলতি বছরে ৭ নভেম্বর খুলে দেয়া হয় রাণীগঞ্জ সেতু। 

সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীলরা জানান, ৪৬ কিলোমিটার পাগলা-জগন্নাথপুর-সৈয়দপুরের সড়কে বিভাগের দীর্ঘ রাণীগঞ্জ সেতুসহ ৩৬ কিলোমিটার অংশ সুনামগঞ্জ জেলার সীমানায় এবং বাকি ১০ কিলোমিটার হবিগঞ্জ জেলার সীমানায় পড়েছে। গত ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাণীগঞ্জ সেতু ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন। এরপর এই সেতু ও সড়ক দিয়ে আন্ত:জেলা বাসসহ মালবাহী ট্রাক, কার্গো চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। প্রথম দুই দিন এই সড়কে বড় যানবাহন চললেও সাড়ে তিন কিলোমিটার সরু সড়ক ও দুটি বেইলি সেতুর কারণে এই পথ ব্যবহার করছেন না বড় যানবাহনের চালকরা।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিকল্প সড়কে দুটি বেইলি সেতু রয়েছে। যেগুলো খুবই সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ। এই সেতুগুলো দিয়ে পার হতে সমস্যায় পড়তে হয়। হবিগঞ্জ অংশে প্রায় তিন কিলোমিটার পথ সরু। ফলে তারা সিলেট হয়েই ঢাকা যেতে হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী প্রতি কিলোমিটার সড়কের জন্য ২ টাকা ১৫ পয়সা। প্রায় ৩০২ কিলোমিটার দূরত্বের জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ভাড়া আদায় করা হয় ৮২০-৮২০ টাকা পর্যন্ত। রাণীগঞ্জ হয়ে বিকল্প পথে ঢাকা গেলে এই ৩০২ কিলোমিটার পথ থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে। এতে টিকিট প্রতি ১৩৪ টাকা বেঁচে যাবে যাত্রীদের।

সুনামগঞ্জ নাসিরাবাদ বাস কাউন্টারের এজেন্ট বাহার উদ্দিন বলেন, ‘এখনও যাত্রী পরিবহনের সব গাড়ি রাণীগঞ্জ হয়ে চলাচল করে না। কারণ সিলেট থেকেও আমাদের যাত্রী তুলতে হয়। এখন শুধু পণ্য পরিবহনের গাড়িগুলো চলাচল করছে।’ 

সুনামগঞ্জ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মো. শাহাব উদ্দিন বললেন, ‘সরকার কোটি টাকা খরচ করে সড়ক নির্মাণ করেছেন। কিন্তু তার সুফল সুনামগঞ্জবাসী পাচ্ছেন না। এখনও দুটি পুরাতন বেইলি সেতু রয়েছে। সেতুতে একটি গাড়ি ঢুকলে অপরদিক থেকে গাড়ি অপেক্ষা করতে হয়। একই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও তিন কিলোমিটার সরু সড়কে ভোগান্তি রয়েছে। একারণে এ পথ দিয়ে বাস চলাচল করে না।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রথমে পাগলা-জগন্নাথপুর-রাণীগঞ্জ- আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের যান চলাচলের জন্য নতুন রোড তৈরি করে ভাড়া নির্ধারিত করতে হবে।  এরপর ভাড়া কমাবে পরিবহনগুলো।’

সুনামগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল হাছান শাহীন বলেন, ‘কুশিয়ারা নদীর ওপর সিলেট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় সেতু হয়েছে। অথচ দুটি ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতুর নির্মাণ কাজ হচ্ছে না। এটি সমন্বয়হীনতার কারণেই হচ্ছে না। এ কারণে সুনামগঞ্জবাসী বিকল্প সড়কের সুবিধা পাচ্ছেন না।’ 

সুনামগঞ্জ বিআরটিএ অফিসের মোটরযান পরিদর্শক সফীকুল ইসলাম রাসেল বলেন, ‘এখনও বিকল্প পথে কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে। সেগুলো ঠিক হলে পরিবহন মালিকরা আমাদের ঢাকা অফিসে নতুন রোডের জন্য আবেদন করবেন। তখন যাচাই বাছাই করে অনুমোদন ও নতুন ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।’

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ‘বমবমি বেইলি সেতু ভেঙে নতুন সেতু করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে দরপত্র হয়েছে। আশা করছি আগামী জানুয়ারি মাসে এই সেতুর কাজ শুরু হবে। কাটাখাল সেতুটি একটি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা করা হচ্ছে। এখনও সেটি অনুমোদন হয়নি। এনায়েতগঞ্জ থেকে সৈয়দপুর অংশ হবিগঞ্জ জেলার সীমানায়। ওখানেও কাজ চলছে।’


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা