দিনাজপুর সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:৩২ পিএম
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:২৯ পিএম
ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। ছবি : প্রবা
দিনাজপুরের আত্রাই নদে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। রবিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বীরগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর শতগ্রাম ইউনিয়নের আত্রাই নদের ঝাড়বাড়ী-জয়গঞ্জ খেয়াঘাট বালুমহালের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ ও নতুন করে ওই এলাকায় বালুমহাল ইজারা না দেওয়ার দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে অংশ নেয় বহু কৃষক।
কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক অভিযোগ করে বলেন, ফসলি জমিতে পাট, ধান, সরিষা ভুট্টাসহ নানা ফসল আবাদ হয়। সাধারণ কৃষকরা একমাত্র জীবিকা নির্বাহ করে এই জমির ফসল দিয়ে। কিন্তু সরকারি বালুমহাল দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে অবাধে ড্রেজার দিয়ে বালু কেটে নিচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৫ একরের মতো জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এবং শত শত বিঘা আবাদি জমি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
আরেক কৃষক মো. আশরাফুল বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে তাদের সব ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। কারণ, তাদের উপার্জনের একমাত্র পন্থা এই ফসলি জমি।
কৃষক নুর ইসলাম জানান, অতিদ্রুত ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ না করা হলে এবং নতুন করে বালুমহাল ইজারা দিলে শত শত কৃষকের জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তাদের। তাই দ্রুত এই ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ এবং নতুন করে বালুমহাল ইজারা না দেওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তারা।
এ বিষয়ে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিনাত রেহেনা বলেন, ‘অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে (এসিল্যান্ড) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কৃষকরা নতুন করে বালুমহাল ইজারা না দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে ব্যানারে যে মূল হেডলাইন লিখেছে, তা কখনও সম্ভব নয়। বালুমহাল ইজারা দিয়ে জেলা প্রশাসন সেখান থেকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব উপার্জন করে। ইজারা বন্ধ কখনও সম্ভব না। ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন এবং ফসলি জমির ক্ষতির বিষয়টি তদন্ত করে জেলা প্রশাসনকে অবগত করা হবে। পরে জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ঝাড়বাড়ী কলেজের সাবেক সহকারী অধ্যাপক মো. মোশাররফ হোসেন, ৩ নম্বর শতগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল সালাম, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক, কৃষক আব্দুল মতিন, কৃষক আরশেদ আলীসহ অনেকেই।