× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সরকারি চাকরি ছেড়ে আম বাগানে

খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক, খাগড়াছড়ি

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৫ ০৯:২৫ এএম

আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২৫ ০৯:২৬ এএম

খাগড়াছড়ি সদরের কমলছড়ি ইউনিয়নের ৪ নম্বর হেডম্যান পাড়ার বাগানে মংশিতু চৌধুরী

খাগড়াছড়ি সদরের কমলছড়ি ইউনিয়নের ৪ নম্বর হেডম্যান পাড়ার বাগানে মংশিতু চৌধুরী

সরকারি চাকরি ছেড়ে ফিরে এসেছেন নিজের মাটিতে, পাহাড়ি গ্রামে। আর সেখানেই গড়ে তুলেছেন আম বাগান। এখন বছরে আয় করছেন প্রায় ৩০ লাখ টাকা! খাগড়াছড়ির তরুণ উদ্যোক্তা মংশিতু চৌধুরী (৩৪) হয়ে উঠেছেন স্থানীয়দের অনুপ্রেরণার নাম।

মংশিতু বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) ১৬ বছর চাকরি করেছেন। শুরুতে সিপাহি পদে, পরে মেডিকেল সহকারী হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে রংপুর জেলায় কর্মরত ছিলেন। কিন্তু মনের গহিনে লালন করছিলেন ভিন্ন স্বপ্ন নিজ ভূমিতে কিছু করার। তাই ২০২২ সালে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে ফিরে যান খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কমলছড়ি ইউনিয়নের ৪ নম্বর হেডম্যান পাড়ায়। সেখানে বাবা থুইলা অং চৌধুরীর সঙ্গে মিলে শুরু করেন ৩৫ একর জমিতে আম চাষ।

মংশিতুর বাগানে চাষ হচ্ছে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ৫৪ জাতের আম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সূর্য্য ডিম, কিং অব চাকাপাত, মিয়াজাকি, রেড পালমার, অস্টিন, আলফেনসো, কেশর, ব্ল্যাকস্টোন, তোতাপুরি, রেড লেডি, গ্লেন, সিনসিন, হানি ডিউ, কিউসাভয়, ব্রুনাই কিংসহ অসংখ্য নাম। বর্তমানে বাগানে প্রায় ৫ হাজার আমগাছ রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৩০টি জাত থেকে এবার ফলন পেয়েছেন।

মংশিতু চৌধুরী বলেন, আমি নিজেই পরিকল্পনা করি, নিজে দাঁড়িয়ে থাকি বাগানে। আমের যত্ন নিই সন্তানের মতো। চাকরির থেকে এই কাজটা বেশি তৃপ্তিদায়ক। শুধু নিজের স্বপ্ন নয়, এই উদ্যোগে উপকৃত হচ্ছেন স্থানীয় মানুষ। আমার বাগানে সারা বছর কাজ করেন ১২-১৫ জন শ্রমিক। আমের মৌসুমে সে সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০-৫০ জনে।

বেলপতি ত্রিপুরা নামে এক শ্রমিক বলেন, এখানে কাজ করে পরিবার ও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালাতে পারছি।

বাগানের উৎপাদিত আম বাজারে ও অনলাইনে বিক্রি করেন মংশিতু। বিশেষ করে বিদেশি জাতের আমের চাহিদা বেশি থাকায় দামও বেশ ভালো। ‘কিং অব চাকাপাত’ প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৪৫০-৫০০ টাকা দরে। সব খরচ বাদ দিয়েও বছরে লাভ থাকে প্রায় ২০-৩০ লাখ টাকার মতো।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জেলায় ৩ হাজার ৬৪৯ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৪ হাজার মেট্রিক টন, যা প্রায় পূরণ হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মো. বাছিরুল আলম বলেন, খাগড়াছড়ির আম ফরমালিনমুক্ত হওয়ায় সারা দেশে এর চাহিদা অনেক বেশি। এ বছর আমের ফলনও ভালো হয়েছে।

থুইলা অং ও থুইম্রা সং চৌধুরী দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ মংশিতু এখন পাহাড়ি তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অনেকেই তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের উদ্যোগে কিছু করতে আগ্রহী হচ্ছেন।

সরকারি চাকরি ছেড়ে পাহাড়ে স্বপ্নের পথে যাত্রা শুরু করে তিনি প্রমাণ করেছেনÑ সাফল্য শুধু শহরে নয়, পাহাড়ের গাছগাছালির মাঝেও গড়ে উঠে, শুধু দরকারÑ সাহস, নিষ্ঠা আর স্বপ্ন দেখার মানসিকতা।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা